প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে আমন ধান সংগ্রহ শুরু হলেও পটুয়াখালী জেলায় লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জিত হয়নি। তবে ধান দিতে কৃষকদের আগ্রহের কোনো কমতি না থাকলেও ধান ক্রয়ে সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার ও ধান সংগ্রহ প্রক্রিয়ার জটিলতাকেই এ জন্য দায়ী করছেন কৃষকরা।
সরকারিভাবে পটুয়াখালী জেলায় এবার ১৬ হাজার ৭৮০ মেট্রিকটন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে আমন ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করে খাদ্য বিভাগ। তবে সংগ্রহের শেষ সময়ে এসে এ পর্যন্ত মাত্র ১১ হাজার ৪৫৯ মেট্রিকটন আমন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় ধান সংগ্রহের সময় আরও ৬ দিন বাড়িয়ে ৬ মার্চ পর্যন্ত করা হয়। সেই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১১ হাজার ৭৮০ টন করা হয়েছে।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কৃষক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘সরকারি গুদামে ধান দেওয়ার লইগ্যা (জন্য) ধান হুগাইয়া (শুকিয়ে) থুইছেলাম (রেখেছিলাম)। কয়েকদিন ঘুরাইছে কয় লটারিতে নাম ওডেনাই (ওঠে নাই), নাম ওডলে (উঠলে) ধান লইয়া আইয়ো (নিয়ে আসতে)। এখন তো হুনি (শুনি) ধান কেনা শেষ। কি আর করমু এই সপ্তায় হাঢে (হাট) যে দাম পামু হেইতেই (সেটাতেই) ধান বেইচ্চ্যা (বিক্রি) দিমু।’
স্থানীয় বাজারে ৬শ থেকে ৬৫০ টাকা দরে প্রতি মন ধান বিক্রি হলেও সরকার ১০৪০ টাকা দরে প্রতি মন ধান সংগ্রহ করে। খাদ্য কর্মকর্তরা দাবি করছেন ধান সংগ্রহের বিষয়ে কৃষকদের দক্ষতা না থাকায় এবং ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
পটুয়াখালী জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বি.এম শফিকুল ইসলাম জানান, ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় মোট ১১ হাজার ৪৫০ মেট্রিকটন আমন ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলার শতভাগ জমিতেই আমন ধান আবাদ করা হয়। এ কারণে আমন ধানের দামের ওপর কৃষকের আর্থ সামাজিক অবস্থা নির্ভর করে। তাইতো আমন ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে আরও দায়িত্বশীল আচরণের দাবি উপকূলীয় কৃষকদের।