যশোরের মনিরামপুরে রাস্তা নির্মাণের জন্য মুক্তেশ্বরী নদী থেকে তোলা হচ্ছে বালু। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে হাজিরহাট সেতু এবং শ্মশান। বালু তোলায় নদীসহ আশপাশের পরিবেশও দূষণের মুখে। স্থানীয়রা বলছেন, এতে প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।
উপজেলার হাজিরহাট বাজারের উত্তর পাশে পশ্চিম থেকে পূর্বে চলে গেছে মুক্তেশ্বরী নদী। নদীর ওপর হাজিরহাট সেতু। সেতুর ১০০ গজ পূর্বে নদীর দক্ষিণ পাড়ে হাজিরহাট শ্মশান।
এক কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পাশের একটি সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ মেরামতের কাজ করছে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে মেসার্স জাকাউল্লাহ অ্যান্ড ব্রাদার্স। সড়কটি উঁচু করার জন্য কোনো প্রকার ইজারা ছাড়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
সোমবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, হাজিরহাট সেতুর পূর্ব পাশে শ্মশানের সামনে মুক্তেশ্বরী নদী থেকে ডিজেলচালিত মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। বালু তোলার কাজ করছেন চার-পাঁচজন শ্রমিক।
মনিরামপুর উপজেলার নেবুগাতী গ্রামের সালমান হোসেন বলেন, প্রায় ১ মাস ধরে শ্মশানের কাছে মুক্তেশ্বরী নদী থেকে বালু তুলে রাস্তায় দেওয়া হয়েছে। এখন হাজিরহাট শ্মশান এবং সেতুর নিকট থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তুলে রাস্তায় অপর অংশে দেওয়া হচ্ছে। এতে যে কোনো সময় শ্মশান নদীতে ভেঙে পড়তে পারে।
একই এলাকার বাসিন্দা ফয়েজুর রহমান জানান, বালু তোলার কারণে সেতু ও শ্মশান ছাড়া আশেপাশের বাড়িঘরও ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোনো সময়ে ঘটতে পারে ভূমিধস। স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। ক্ষমতাসীনদের প্রভাব খাটিয়ে নদ থেকে বালু উত্তোলন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
হরিদাসকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিপদ ভঞ্জন পাড়ে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বর্তমানে নদীর যে অংশ থেকে বালু তোলা হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে হাজিরহাট সেতু ধসে যাওয়া এবং শ্মশান নদীতে ভেঙে পড়ার আশংকা রয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাকাইল্লাহ অ্যান্ড ব্রাদার্স সত্ত্বাধিকারী মো. জাকাউল্লাহ বলেন, আমার লাইসেন্সে অন্য একজন সড়কটি মেরামতের কাজ করছেন। নদী থেকে বালু তোলা ঠিক নয়। তিনি নদী থেকে বালু তুলে সড়কটি মেরামতের কাজ করছেন কি না আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, মুক্তেশ্বরী নদী থেকে বালু তোলার খবর শুনেছি। উপজেলা সহকারী কমিশনারকে বালু তোলা বন্ধ করতে বলা হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নেবেন।