ঋতুরাজ বসন্তে নানা রঙে সেজেছে গ্রামবাংলার প্রকৃতি। আম, লিচু, লেবুসহ নানা জাতের গাছে ফুটেছে বাহারি রঙের ফুল, মুকুল। সেই সঙ্গে ফাগুনের দক্ষিণা হাওয়ায় গাইবান্ধার নীল আকাশে উঁকি দিচ্ছে আগুনরাঙা শিমুল ফুল। গাছে গাছে থোকা থোকা ফুল হৃদয় ছুঁয়েছে সবার।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে গাইবান্ধার লক্ষ্মীপুর এলাকার কাঁচা রাস্তায় দেখা মিলল শিমুল গাছের। শতবর্ষী গাছটির পাতাবিহীন ডালে থোকা থোকা রক্তিম ফুল। রোদ্রজ্জ্বল সকালে মৃদু বাতাসে বেশ কিছু ফুল ঝড়ে পড়তেও দেখা গেল মাটিতে। কেউ কেউ শখের বশে সেই ফুল কুড়িয়ে নিচ্ছেন।
স্থানীয় নেহাজ উদ্দিন নামের এক প্রবীণ শিক্ষক বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রায় দেড়যুগ আগে গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলে প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত। কিন্তু কালের বিবর্তনে বসন্তকালেও এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছ।
তিনি আরো বলেন, এক সময় শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। মানুষ শিমুল তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করে ভালো আয় করতেন। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতেন লেপ, তোষক, বালিশ। শিমুল তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন এমন নজিরও আছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় শিমুল গাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না।
ধলিমাই বেগম নামের আরেক বৃদ্ধা বলেন, শিমুল গাছের ঔষধি গুণও রয়েছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষ আগে বিষ ফোঁড়া ও কোষ্ঠ কাঠিন্য নিরাময়ে শিমুল গাছের মূল ব্যবহার করতেন। বর্তমানে নানা কারণে শিমুল গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে।
গাইবান্ধা বন বিভাগ কর্মকর্তা আব্দুর সবুর মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তৈরিতে শিমুল কাঠ তেমন টেকসই হয় না। এছাড়া বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তৈরি তুলা, মাইক্রো ফাইবার, ইউক্যালিপটাস ফাইবার, প্লাস্টিক ফাইবার ও ফোমের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলার কদর কমেছে। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ।