জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে দীর্ঘ দুই বছর ধরে আটকে আছে ‘ভাটি বাংলার রাজধানী’ খ্যাত আজমিরিগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ কাজ। ফলে ছোট-খাট অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও বিপুল পরিমাণ জান-মালের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয় উপজেলাবাসীকে।
এরইমধ্যে স্টেশনটির জন্য গাড়ি ও স্পিডবোটসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেগুলো জেলা কার্যালয়ে বেকার পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করায় দিন দিন সেগুলো নষ্ট হচ্ছে।
সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে সম্পদের ক্ষতি হয়। প্রতি বছর অনেক প্রাণহানিও ঘটে। সরকার এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করছে। এরই অংশ হিসেবে আজমিরিগঞ্জ উপজেলায়ও ফায়ার স্টেশন নির্মাণের অনুমোদন আসে।
অনুমোদনের পর ২০১৮ সালে একটি খাস জমিতে স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসন যে জায়গাটি স্টেশনের জন্য নির্ধারণ করে সেই জায়গাটি নিজের মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। এরপর সেখানে আটকে যায় ভবন নির্মাণের কাজ। কিন্তু দুই বছর অতিবাহিত হলো এখন পর্যন্ত নতুন জায়গা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ- বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন জোরালো ভূমিকা না রাখার কারণে মূলত এখনো জায়গা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেই ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় উপজেলাবাসীকে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, উপজেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন না থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বানিয়াচং উপজেলা স্টেশনের কর্মীদের আসতে হয়। ফলে দীর্ঘ ১০/১২ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এদিকে, এখন পর্যন্ত ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা না হলেও স্পিডবোট ও গাড়িসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেগুলো জেলা স্টেশনে বেকার পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না হওয়া অনেক যন্ত্রাংশ নষ্টও হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা খন্দকার বলেন, ‘আজমিরিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের ভবন নির্মাণের জন্য অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ভবন নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমার পূর্বের ইউএনও একটি জায়গা নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু ওই জায়গার উপর একজন ব্যক্তি মামলা করায় সেখানে নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এখন নতুন জায়গা খোঁজা হচ্ছে। এরইমধ্যে একটি জায়গা আমরা দেখে রেখেছি। সেই জায়গাটি নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করছি।’
হবিগঞ্জ জেলা ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ মো. সামছুল আলম বলেন, ‘এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করায় পূর্বে নির্ধারিত জায়গায় স্টেশন নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এখন আমরা নতুন জায়গার সন্ধান করছি। জায়গা পেয়ে গেলেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্টেশনটির জন্য পানি পরিবহনের গাড়ি এবং হাওর অঞ্চলীয় উপজেলা হওয়ায় একটি অগ্নি স্পিডবোট এরইমধ্যে বরাদ্দ পেয়েছি। এছাড়া যাবতীয় যন্ত্রাংশও জেলা কার্যালয়ে রয়েছে। শুধুমাত্র ভবনটি নির্মাণ হয়ে গেলেই সম্পূর্ণ কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।’