দূর থেকে দেখে মনে হবে ফাঁকা মাঠ জুড়ে লাল গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কাছে গেলেই বোঝা যাবে সেখানে লাল গালিচা বিছিয়ে রাখা নয়, পাকা মরিচ শুকানো হচ্ছে। অপরূপ এ সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনার চর এবং নদীর বিভিন্ন ঘাট এলাকায় এ দৃশ্য চোখে পড়ে। বগুড়ার মরিচ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় এলাকা হলো সারিয়াকান্দির বিভিন্ন চর। এছাড়াও সোনাতলা, গাবতলী ও ধুনট উপজেলায় ব্যাপক মরিচ চাষ করা হয়।
মূলত যমুনার পানি কমে যাওয়ার পর জেগে ওঠা বিশাল চর জুড়ে মরিচ চাষ করা হয়। প্রতিবছরই নদী ভাঙনের শিকার কৃষকরা এই মরিচ চাষ করেন। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে সেই মরিচ শুকিয়ে বাজারজাত করে বেশ লাভবান হন তারা।
শনিবার (৭ মার্চ) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষেত থেকে পাকা মরিচ সংগ্রহ করে মাঠে শুকানো হচ্ছে। দেখে মনে হবে লাল গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। মাঠে শুকানোর পরে তা গোলায় সংরক্ষণ করা হবে। মরিচ শুকানোর কাজে জড়িয়ে আছে প্রায় ১০ হাজার নারী শ্রমিক।
জানা গেছে, বগুড়ার এই শুকনা লাল মরিচ বিভিন্ন গুঁড়া মসলা প্রস্তুতকারী কোম্পানি কিনে নেয়। বেশির ভাগ সময় কোম্পানিগুলো মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের আগাম বায়না করে রাখে।
তবে সারিয়াকান্দি চরের কৃষক আকবর আলী, সোলাইমান হোসেন, নাজির হোসেন জানান, সরাসরি কোম্পানির কাছে মরিচ বিক্রি করতে পারলে বেশি লাভবান হতেন তারা। ফড়িয়া এবং দালালদের কারণে তাদের লাভ কমে গেছে। এছাড়াও শ্রমিকের মূল্যও অনেক বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ শুকনো মরিচ ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে তা ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক আ.ক.ম. শাহরিয়ার জানান, জেলায় গত বছর ১০ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছিল। এ বছর ১০ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। ফলন হয়েছে হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ৮ মেট্রিক টন।