নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরের লক্ষণহাটি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ। জলজ্যান্তভাবে জীবিত থাকলেও সরকারি খাতায় তিনি একজন মৃত ব্যক্তি। সরকারি তালিকায় মৃত থেকে জীবিত হওয়ার জন্য গত কয়েক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে ধর্ণা দিয়ে চলেছেন সামাদ।
আব্দুস সামাদ পেশায় একজন কৃষক। তিনি বাগাতিপাড়া পৌরসভার লক্ষণহাটি গ্রামের মো. এলবাস আলীর ছেলে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয় পত্র পায় সামাদ। কিন্তু ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিতে গেলে তাকে নির্বাচনী তালিকায় মৃত বলে দেখানো হয়। যার জন্য ভোট দিতে পারেনি সামাদ। এরপর সরকারি বিভিন্ন দফতরে গেলেও মৃত থেকে জীবিত হতে পারেনি সামাদ।
আব্দুস সামাদ অভিযোগ করে বলেন, জীবিত হয়েও সরকারি খাতায় মৃত হয়ে আছি। নির্বাচনের ভোটার তালিকায় আমি মৃত। বিষয়টি পৌর মেয়রসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তারা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে বলে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচন অফিসে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু আমি মৃত থেকে জীবিত হতে পারেনি।
বিষয়টি সংশোধন হয়েছে মনে করে গত উপজেলা নির্বাচনের সময় ভোট দিতে গেলেও নিজের প্রাপ্য ভোটটা দিতে পারেননি সামাদ। ভোটার তালিকায় মৃতই ছিলেন তিনি। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে জানানো হলে তিনি আবারও স্বল্প সময়ে ভুল সংশোধনের আশ্বাস দেন। সর্বশেষ গত শুক্রবার উপজেলায় স্মার্ট কার্ড নিতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে আসতে হয় জীবিত সামাদকে।
আব্দুস সামাদের ছেলে ফজলুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাবা জীবিত থাকার পরও সরকারি খাতায় মৃত হিসেবে রয়েছে। দেশের নাগরিক হয়েও বিগত নির্বাচনগুলোতে সে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন নি। একইভাবে তাকে স্মার্ট কার্ড না দিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই ভুল সংশোধনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে মৌখিকসহ লিখিত আবেদন করেছে বাবা। কিন্তু গত পাঁচ বছরে কোনো কাজ হয়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাগাতিপাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ইউসুফ আলী বলেন, প্রায় এক বছর আগে আব্দুস সামাদের মৃত থাকার বিষয়টি জানতে পারি। সে আমার ওয়ার্ডের ভোটার ও তাকে আমি ভালভাবে চিনি। বিষয়টি নিয়ে বহু চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো সুফলতা পায়নি।
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রায় তিনমাস আগে আব্দুস সামাদের একটি লিখিত আবেদন পাওয়ার পর ডাটাবেইজ সংশোধনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে সংশোধন হয়ে আসলে সামাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবো।