মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২১০তম জন্মজয়ন্তী সোমবার (৯ মার্চ)। এ উপলক্ষে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ী গ্রামে কবির মাজারে আয়োজন করা হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের।
পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে থাকছে- কবির মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন।
উৎসবের প্রথম দিন সকাল ১০টায় কবির মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ। অনুষ্ঠানের সমাপনী দিন আগামী ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। ওইদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম
খালিদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আব্দুল খালেক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতাসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
জানা যায়, লোক-সাধনা ও মরমী সংগীতের এ কবি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ী গ্রামে বাংলা ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন জন্মগ্রহণ করেন এবং বাংলা ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় মৃত্যুবরণ করেন।
বাল্যকালে পিতৃহারা পাগলা কানাইয়ের টাকার অভাবে লেখাপড়া হয়নি। তিনি মানুষের বাড়ি রাখালের কাজ করেছেন। গরু চড়াতে গিয়ে ধুয়ো জারি গান গাইতেন। নিরক্ষর হলেও তার স্মৃতি, মেধা ছিল প্রখর। তিনি উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে নিজ কণ্ঠে পরিবেশন করতেন। তার সংগীতে যেমন ইসলাম ধর্মের তত্ত্বকে প্রচার করেছেন, তেমনি হিন্দু-পুরান রামায়ণ ও মহাভারত থেকেও নানা উপমার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। এ কারণেই তার গান সর্বজনীনতা লাভ করে। তার মধ্যে বাউল ও কবিয়াল
এ দুয়ের যথার্থ মিলন ঘটেছে।
জীবদ্দশায় তিনি ‘জিন্দা দেহে মুরদা বসন থাকতে কেন পার না, মন তুমি মরার ভাব জান না আমি মরে দেখেছি, মরার বসন পরেছি’, ‘ঘর বেঁধেছে এক কামিল কারিগর’ এমন হাজারো দেহ তত্ত্বভিত্তিক গান রচনা করেছেন।