ছেঁউড়িয়া থেকে: লালন সাঁইজির দর্শন সত্য ও সুন্দর বলে মত দিয়েছেন বাউল সাধক ও লালন গবেষক ফকির হৃদয় শাহ।
তিনি বলেন, লালন সাঁইজির বাণীর মর্মকথায় আমাদের বোধোদয়কে জাগ্রত করতে হলে এই আখড়ায় সাঁইজির সাধুগুরুর সংস্পর্শে গিয়ে সাধুসঙ্গ করা উচিত। এজন্যই ভক্তি-ভক্ত, মানবতা এবং লালন সাঁইজির দর্শন, যেটি সত্য এবং সুন্দর। তাই অনেক সাধুগুরু এখনো রয়ে গেছে।
সোমবার (০৯ মার্চ) সন্ধ্যায় বার্তা২৪.কমের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন হৃদয় শাহ।
তিনি বলেন, সাঁইজির দর্শন, তার আত্মতত্ত্ব, সাধনতত্ত্ব এবং সর্বোপরি তার যে সত্য বাণী— এসব বিষয় তার সাধুগুরু বৈষ্ণবরা তাদের মধ্যে ধারণ করেন, আত্মস্থ করেন তাদের জন্য এই সাধুসঙ্গ সমধিক গুরুত্ববহন করে।
হৃদয় শাহ বলেন, আত্মার শুদ্ধিকরণে এই মানুষমেলায় আসেন। আমি মানুষমেলা বলছি, এই কারণেই পূর্ণিমার জোছনা উজ্জ্বল দিকটি দেখা যায়। আসলেই মানুষমেলা রূপে রূপান্তর হয়ে ওঠে।
গৌর পূর্ণিমা থেকেই এই দোল পূর্ণিমার উৎসব উল্লেখ গবেষক ফকির হৃদয় শাহ বলেন, ফকির লালন সাঁইজি জীবদ্দশায় যে মচ্ছব করতেন, এই গৌর পূর্ণিমায় আলোকিত মানুষদের নিয়ে পূর্ণিমার আলোকছটা গায়ে মাখতেন, সেই ধারাবাহিকতা তার শিষ্য প্র-শিষ্যদের মাঝে আজও চলমান।
তিনি বলেন, বাউলদের গুহ্য চর্চাই লালনের ওপর আরোপ করা হয়। নারী-পুরুষ সম্পর্ক চর্চার কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশ লালনপন্থীরা মেনে চলেন, অবশ্যই। কিন্তু সেক্ষেত্রে ‘দেহ’ সংক্রান্ত অনুমান নদীয়ার পাঁচ ঘরের মধ্যেও আলাদা।
পার্থিব জীবনে এই মর্মবাণী উপলব্ধি করতে হবে উল্লেখ করে হৃদয় শাহ বলেন, সাঁইজি (ফকির লালন) তার জীবদ্দশায় এই সাধুসঙ্গ করতেন। তার দেখানো পথ ও মতে আমরাও সামিল হতে এই সাধুসঙ্গ করে থাকি। সুধুসঙ্গে বাউল, লালন ভক্ত ও অনুসারীদের পুণ্যসেবা দেওয়া হয়। এই সেবার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বাউলদের অষ্টপ্রহরের সাধুসঙ্গ। আমরা আবার ফিরে যাব যে যার গন্তব্যে। তবে মনটা পড়ে থাকবে এই ধামেই।
প্রাপ্তি যাই হোক না কেন নিজেকে শুধরিয়ে আত্মশুদ্ধি অর্জন করাই মূল উদ্দেশ্য বলে জানান হৃদয় শাহ।