বাংলাদেশে তিনজন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পরই সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে সর্তকতা বাড়ানো হয়েছে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমারের সঙ্গে টেকনাফ স্থলবন্দর ও করিডোরে বিভিন্ন পণ্য ও পশুবাহী জাহাজ-ট্রলারের যাতায়াত রয়েছে। ফলে বন্দরে আগত ট্রলারের মাঝি-মাল্লাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ স্ক্যানিং এর মাধ্যমে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে নিয়মিত।
এদিকে টেকনাফ স্থলবন্দরে একটি মেডিকেল টিম মিয়ানমার থেকে আসা প্রতিটি ট্রলারে থাকা মাঝি-মাল্লাদের করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই মেডিকেল টিমের টিম লিডার ডা. শুভ্র দেব।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় তিন বাংলাদেশি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর পরই টেকনাফ স্থলবন্দরে প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে ট্রলারে করে আসা মাঝি-মাল্লাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে কেউ সরাসরি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা, তা জানতে তাদের পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। তবে যে ব্যবস্থায় আমরা করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, এতে নিজেরাই বেশি ঝুঁকিতে রয়েছি।
স্থানীয়রা বলছেন, বন্দর ও করিডোর এলাকায় সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা আরও জোরদার করা উচিত। চীনের সঙ্গে রয়েছে মিয়ানমারের সীমান্ত। ওই সীমান্ত দিয়ে চীনের পণ্য সরাসরি মিয়ানমার হয়ে বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে ঢুকছে। এসব পণ্যের ট্রলারে করে আসছে মিয়ানমারের মাঝিমাল্লা ও নাগরিকরা।
রোববার (৮ মার্চ) ঢাকায় তিন বাংলাদেশির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশেও এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে এই ভাইরাস বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়লেও মিয়ানমারে এখনো সংক্রমণের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ভাইরাস সনাক্তে প্রতিদিন বন্দরে আগত জাহাজ ও ট্রলারের ক্রু ও মাঝিমাল্লাদের থার্মাল স্ক্যান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যেহেতু টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সাথে যাত্রী পারাপারের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে এই এলাকা খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে যদি কারো শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি ও কাশির মতো সন্দেহজনক লক্ষণ দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে বলা হয়েছে।
টেকনাফ স্থল বন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে বন্দরে সর্তকতা জারি রয়েছে। উপজেলা হাসপাতালের পক্ষ থেকে মেডিকেল টিম কাজ করছেন। বন্দরে আসা মিয়ানমারের ট্রলারে থাকা নাগরিকদের স্ক্যানিং করা হচ্ছে। তাছাড়া তাদের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এসব নাগরিকরা যেন দেশের অভ্যন্তরে ঢুকতে না পারে, সে ব্যাপারে বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হয়েছে।