লক্ষ্মীপুরে নিখোঁজ শিশু মূসা (১১) প্রবাস ফেরত মায়ের কোলে ফিরেছে। সৎ নানি ও মামার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আড়াই বছর আগে এক সকালে ঘর থেকে বের হয়ে যায় শিশুটি।
বুধবার (১১ মার্চ) দুপুরে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মুহম্মদ ফহাদ বিন-আমিন চৌধুরী শিশুটিকে তার মা খতিজা বেগমের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১ আগস্ট চাঁদপুরের ওয়ারলেস মোড় এলাকা থেকে জিয়া উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি মূসাকে উদ্ধার করেন। পরে শিশুটিকে নিয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি জিডি করেন। এরপর আদালতের মাধ্যমে মূসাকে চাঁদপুর শিশু পরিবারে হস্তান্তর করেন তিনি।
পরে ৪ আগস্ট সেখান থেকে তাকে লক্ষ্মীপুর শিশু পরিবারে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে মূসা লক্ষ্মীপুর শিশু পরিবারে ছিল এবং তাকে বিদ্যালয়েও ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকায় আত্মীয়-স্বজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফের তার তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার (১০ মার্চ) কমলনগর উপজেলা মুন্সিরহাট এলাকায় যাওয়া হয়। সেখানে সে তার খালার বাড়ি চিনতে পারে। ওই বাড়িতে গেলে তার মা খতিজা বেগমকেও পাওয়া যায়।
শিশু মূসা ও তার মা খতিজা বেগম জানায়, প্রায় ৫ বছর আগে খতিজার স্বামী সাখাওয়াত উল্যা তাদেরকে ছেড়ে চলে যায়। সাখাওয়াত সদর উপজেলার চরমনসা গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ৩ বছর আগে কাজের সন্ধানে খতিজা সৌদি আরব যান। তখন ছেলে মূসাকে সদর উপজেলার পুরাতন তেওয়ারীগঞ্জ এলাকায় তার সৎ মা (নানি) কাজল আক্তারের কাছে রেখে যান। কিন্তু প্রায়ই মূসাকে সৎ নানি ও মামা গিয়াস উদ্দিন মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক নির্যাতন করত। ঠিকমতো খেতে দিত না। এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আড়াই বছর আগে এক সকালে মূসা নানির বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী বলেন, ‘মূসার দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার মাকে খুঁজে পেয়েছি। পরে তার মায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’