একটি মাত্র ডিজিটাল থার্মোমিটার, চারজন স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দরে চলছে করোনাভাইরাস শনাক্তের কাজ। এমনকি পাসপোর্টধারী যাত্রীদের নামমাত্র পরীক্ষা করা হলেও ভারতীয় ট্রাক চালকদের পরীক্ষা করার নেই কোনো তৎপরতা। ফলে এই স্থলবন্দরে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
বুধবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার এমন চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, প্রতিদিন বাংলাদেশ, ভারত, ভূটানসহ নেপাল থেকে ৫ শতাধিক পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেন এই স্থলবন্দর দিয়ে। স্থলবন্দরের বেশিরভাগ যাত্রীরা ভারত-বাংলাদেশের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি বুড়িমারী স্থলবন্দরে করোনাভাইরাস শনাক্তের কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগ। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা এবং দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শিফট অনুযায়ী কাজ করছেন এখানকার স্বাস্থ্যকর্মীরা।
প্রতিদিন ইমিগ্রেশন অফিসের কাজ শেষ করে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয় স্বাস্থ্য ইউনিটে। সেখানে একজন স্বাস্থ্য কর্মী ডিজিটাল থার্মোমিটার কপালে ঠেকিয়ে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা দেখেন। এর মধ্যে আরেকজন স্বাস্থ্যকর্মী সচেতনতামূলক কথা বলে পাসপোর্ট থেকে যাত্রীদের নাম ঠিকানা লিখে রাখছেন। কিন্তু ভারতীয় ট্রাক চালকদের তেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এদিকে অভিযোগ আছে, থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীদের পরীক্ষা করা হলেও ট্রাকচালক, সহকারী ও সিঅ্যান্ডএফ কর্মীরা অবাধেই সীমান্ত অতিক্রম করছেন। যার ফলে করোনাভাইরাস বিস্তারের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে আশংকা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত মেডিক্যাল টিমের কার্যক্রম আরও জোরদার করার পাশাপাশি ভারতসহ ভিনদেশি গাড়ি চালকদেরও যেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
ভারত থেকে আসা যাত্রী তনয় রায় বার্তা২৪.কম-কে জানান, ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে চলে এলেও তেমন কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা। ফলে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার জিল্লুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, পাসপোর্টধারী যাত্রীদের তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে তাদের সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা আছে কি না তা দেখা হচ্ছে। হাত-মুখ ধুয়ে ও পোশাক পরিবর্তন করে তারপর অন্যদের সংস্পর্শে যেতে বলা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাস শনাক্ত হলে তাদের পৃথকভাবে রাখার জন্য পাটগ্রাম হাসপাতালে দুই শয্যা বিশিষ্ট একটি ইউনিট খোলা হয়েছে। আরেকটি ডিজিটাল থার্মোমিটারের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে বলা হয়েছে। সেটি এলেই ট্রাক চালকসহ ব্যবসায়ীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হবে।