ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দাফনের এক মাস ১৯ দিন পর কবর থেকে ইয়াকুব ভূইয়ার (৭৫) মরদেহ উত্তোলন করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) দুপুরে উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নের দগরীসার কেন্দ্রীয় কবরস্থান থেকে নিহতের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর কুমার দাস ও আশুগঞ্জ থানার উপ-পরির্দশক সুমন চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন। নিহত ইয়াকুব ভূইয়া একই এলাকার মৃত আব্দুল হেকিম মিয়ার ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, একই এলাকার সাদির ভূইয়ার সঙ্গে ইয়াকুব ভূইয়ার দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে দুপক্ষের লোকজনের সঙ্গে বসে একটি মিমাংসার জন্য ৩০ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে রাতে ডাকেন ইউপি সদস্য নূরে আলম। মিমাংসার সময় সাদির ভূইয়া ইয়াকুব ভূইয়াকে অপমান করেন। এ ঘটনায় ইয়াকুব ভূইয়া ঘরে ফিরে এসে তার ছেলে লিটন ভূইয়াকে বললে সে প্রতিবাদ করেন। তখন সাদির ভূইয়া ও তার লোকজন ইয়াকুব ভূইয়ার ঘরে ঢুকে হামলা করেন। এসময় ইয়াকুব ভূইয়াসহ তার ছেলেকে বেধড়ক মারপিট করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইয়াকুব মিয়া ও তার ছেলেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ইয়াকুব ভূইয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসা নেয়ার পর চিকিৎসকরা তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে আসার পর ২৩ জানুয়ারি সকালে ইয়াকুব ভূইয়া মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনার ২৮ দিন পর নিহতের চাচা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে সাদির ভূইয়াসহ ১০ জনকে আসামি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতের বিচারক মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবরস্থান থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত ইয়াকুব ভূইয়ার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর কুমার দাশ জানান, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ইয়াকুব ভূইয়ার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রতিবেদন আমরা আদালতের কাছে পাঠাব।
মামলার বাদী মো. সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া জানান, আমার ভাতিজাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্টু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।