মাঝারি আকৃতির গাছটিতে পাতার দেখা নেই। তবে গাছের শাখা-প্রশাখা ছেয়ে গেছে আগুন রাঙা ফুলে। ফুলের নাম-পলাশ। লাল-কমলার মিশেল রঙ ধারণ করা ফুলগুলো গাছ থেকে লাল আভা ছড়াচ্ছে। ফুল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে গাছের নিচেও।
শুক্রবার (১৩ মার্চ) সকালে গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকায় পলাশ ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য ধরা দেয় বার্তা২৪.কমের ক্যামেরায়। বসন্তের প্রকৃতিতে ফুলগুলো আপন সৌন্দর্য মেলে ধরেছে। দূর থেকে দেখে মনে হয় গাছে শোভা পাচ্ছে আগুনের ফুলকি।
এক সময় দেশের গ্রামাঞ্চলে অহরহ পলাশ গাছের দেখা মিলতো। কালের বিবর্তনে পলাশ গাছ এখন অনেকটাই হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। তবে হোতাপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখনও গ্রামে অনেক পলাশ গাছের দেখা মেলে। বসন্ত ঋতুর আগমনে গাছ ছেয়ে ওঠে ফুলে ফুলে।
পলাশ পাতাঝরা বৃক্ষ হওয়ায় বসন্তের শুরুতেই পাতা ঝরতে শুরু করে। গাছের শাখা-প্রশাখায় ধীরে ধীরে ফুটতে শুরু করে পলাশের কুঁড়ি। চোখ জুড়ানো পলাশ ফুল গাছের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ।
প্রকৃতিতে শোভা বর্ধনের পাশপাশি পলাশ গাছ ওষুধি গুণেও সমৃদ্ধ। হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূজা-অর্চনায়ও এ ফুল ব্যবহার হয়। একসময় পলাশ গাছের শিকড় দিয়ে শক্ত দড়ি তৈরি হতো। পলাশ গাছের পাতা দিয়ে তৈরি হতো ছোট থালা। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো পলাশ পাতা দিয়ে তৈরি ছোট্ট থালায় ফুচকা বিক্রি হয়।
পলাশ গাছ ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। বসন্ত আসতেই গাছ থেকে পাতা ঝরে পড়ে। তখন শাখা-প্রশাখায় কালচে রঙের মুকুল বের হয়। এরপর ধীরে ধীরে মুকুল থেকে রাঙা পলাশ ফুল ফোটে। পলাশের বীজ থেকে চারা জন্মায়। বাড়েও দ্রুত।
পরিকল্পিত আবাদ না হওয়ায় পলাশ গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে। অযত্ন ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা এখনো কিছু পলাশ গাছ প্রকৃতিতে টিকে আছে। বসন্ত এলেই আগুন রাঙা ফুল ফুটিয়ে গাছটি নিজের অস্তিত্বের জানান দেয়।