করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে এক মাসের জন্য ভারতে ভ্রমণ স্থগিত ঘোষণার পর বেনাপোল স্থলবন্দরের ব্যস্ত ইমিগ্রেশনে প্রায় জনশূন্য অবস্থা। এতে বিপাকে পড়েছেন অসহায় রোগী ও ব্যবসায়ীরা।
তবে শুক্রবার (১৩ মার্চ) বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ মেটাতে ইমিগ্রেশন এলাকায় ছিল বাংলাদেশিদের উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন প্রয়োজনে এদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৫০ জন ভারতে গেছেন। ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ৩ হাজার ৯০০ জন। এদের মধ্যে ১২ শতাংশ বিদেশি যাত্রী রয়েছেন।
এদিকে, হঠাৎ করে বাংলাদেশি ভিসায় ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারিতে বাণিজ্যে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও এখন পর্যন্ত তার কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে এক মাস ভারতে প্রবেশ বন্ধ থাকলে শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহতের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য-সামগ্রীর বাজারে মূল্য বাড়ারও শঙ্কা রয়েছে ব্যবসায়ীদের।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক। ব্যবসায়ীরা ভারতে যেতে না পারলে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যও বন্ধ হতে পারে। এক মাসেরও বেশি সময় চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। আবার ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ হলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও বেড়ে যাবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বাণিজ্যিক বিষয়ে যাতে কোনো প্রভাব না পড়ে তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা চালুতে সরকারের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এদিকে, বাংলাদেশি যাত্রী অনামিকা বলেন, বাংলাদেশে মাত্র তিন জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৮০ জনের কাছাকাছি। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তার দেশের নাগরিকের নিরাপত্তায় বিদেশিদের বাংলাদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি না করলেও ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক যাত্রী বিশেষ করে যাদের চিকিৎসা ও ব্যবসার কাজে যাওয়ার দরকার রয়েছে তারা বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাসিন জানান, ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে ভারতীয় ভিসায় বাংলাদেশিদের ভারত প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আগামী ১৫ মার্চ এ আদেশ বহাল থাকবে। বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়া বন্ধ হলেও ভারতীয়রা স্বাভাবিক নিয়মে বাংলাদেশে এসেছেন এবং বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাচ্ছেন।
যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫০০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়। ভারতে রফতানি হয় দেড়শ থেকে ২০০ ট্রাক বাংলাদেশি পণ্য। প্রতিবছর এ বন্দর থেকে সরকার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা আমদানি পণ্য থেকে ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে।