কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মাদক মামলায় এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসকের মোবাইল কোর্ট।
শুক্রবার (১৩ মার্চ) রাত দুইটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মাদক মামলায় এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রাতেই জেল হাজতে পাঠানো হয় আরিফুল ইসলামকে।
সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের পারিবারিক সূত্র জানায়, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন'র কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি তিনি। শুক্রবার দিনগত রাত ১২টার পর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট আনসার সদস্যদের নিয়ে তার বাড়িতে যায়। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক দরজা ভেঙে তার ঘরে প্রবেশ করে স্ত্রী সন্তানের সামনেই মারধর করে ধরে নিয়ে আসে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে এসে, বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা রাখার অভিযোগে তাকে ১ বছরের কারাদণ্ড দেয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মিতু জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে খাওয়া শেষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ কে বা কারা দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে আমার স্বামী ফোনে স্বজনদের বিষয়টি জানান। এক পর্যায়ে দরজা ভেঙে তারা আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারতে উদ্যত হয়। পরে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মাহফুজুর ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ডিসি অফিসের লোকজন সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নিয়ে এসে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
কিছুদিন আগে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল ইসলাম এ বিষয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। আরেকটি বিষয়েও সংবাদপ্রকাশের জন্য তিনি খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে রিন্টু বিকাশ চাকমা ও জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসে তার নামে মাদকের মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হলেও কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজার রহমান জানান, তার নামে ইতিপূর্বে মাদক সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দুলাল বোস জানান, আমার জানা মতে সাংবাদিক আরিফুল মদ-গাঁজা তো দূরের কথা কোন দিন সে একটি সিগারেটও স্পর্শ করেনি। যারা ধূমপান করে তাদেরকে বরং বিভিন্ন সময় তিরস্কার করেছেন।