চলছে বোরো মৌসুম। দেশের গ্রামগঞ্জের কৃষকরা যখন তাদের জমিতে বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠিক তখন দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। যে কৃষি জমিতে সবুজের সমারোহে বোরো ধান শোভা পেত কৃষকদের সেসব ক্ষেত চলতি মৌসুমের বেশীর ভাগ বিভিন্ন আবাদের চাষ ও পতিত দেখা যাচ্ছ।
কৃষকদের দাবি ধানের নায্য দাম ও উৎপাদন খরচ তোলতে না পারায় কৃষকরা বোরো ধান চাষ থেকে সরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার সেসব জমিতে লাভজনক হিসবে গম, ভুট্টা ও বাদামের চাষ শুরু করছেন।
সোমবার (১৬ মার্চ) সকালে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরজমিনে দেখা যায়, এ জেলায় দীর্ঘ সময় শীত বিরাজ করায় চলতি মৌসুমে কিছুটা বিলম্বিত হলেও কৃষকরা বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৫ উপজেলার মোট ১ লাখ ১১ হাজার হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গত বছর ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হলেও চলতি মৌসুমে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ৩৭ হেক্টর। আর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৪৫ ভাগ জমিতে সেচ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে কৃষকরা স্বল্প খরচে বেশি লাভ সেসব আবাদের দিকে দিন দিন ঝুঁকছে।
সদর উপজেলার সাতমেড়া এলাকার কৃষক সাহিদুল ইসলাম জানান জানান, গত দু বছর ধরে সার ও কীটনাশকের দাম স্থিতিশীল থাকলেও ধানের নায্য দাম না পাওয়ায় এবার বোরো ধানের আবাদ কমিয়ে গম, মরিচ ও ভুট্টার আবাদ শুরু করেছি। কারণ ধানের যে দাম এতে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হয় '।
একই কথা জানান জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, গত বছর ৪ জমি বর্গা নিয়ে ৪ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করি এবং ফলনও ভাল পেয়েছি কিন্ত দাম পাইনি ধানের। তাই চলতি মৌসুমের মাত্র ১ বিঘা জমিতে ধান করেছি '।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হানিফ বার্তা২৪.কম-কে জানান, পঞ্চগড়ের মাটি বেলে দোআঁশ। ধানসহ বিভিন্ন আবাদের জন্য খুবই উপযোগী। শীত তাপমাত্রা ও দীর্ঘস্থায়ী থাকার কারণে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের চারা একটু বিলম্বিত হয়ে রোপণ করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে কৃষকদের বিভিন্ন সেবা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। তবে গম, মরিচ, গম, ভুট্টা, বাদাম চাষে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা এসব আবাদের দিকেও বেশ আগ্রহী হচ্ছে'।