করোনা সংক্রমণ এড়াতে এবার যশোরের বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও ভারতীয় বিএসএফের মধ্যকার প্রতিদিনের রিট্রেট শিরোমনি অনুষ্ঠান। প্রতিদিন এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই পার সীমান্তের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ সমবেত হতেন।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা সংক্রমণ এড়াতে বিজিবি ও বিএসএফ যৌথ আলোচনা করে এ অনুষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম রেজা বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বুধবার (১৮ মার্চ) দুপুর ২টায় জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রিট্রেট শিরোমনি অনুষ্ঠান আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় তা শুরু হবে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশে দিন দিন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এ অনুষ্ঠানে দুই দেশের মানুষের জনসমাগম হয়। তাই ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগে অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়টি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
মূলত দুই দেশের সীমান্তে বসবাসরত মানুষ ও সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর রিট্রেট শিরোমনি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। প্রতিদিন বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা সেখানে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ করে। কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে একই সঙ্গে দুই দেশের পতাকা উঠানো ও দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। এ সময় দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী চলাচল ও আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকে। অনুষ্ঠান শেষে পুনরায় যাত্রী চলাচল ও বাণিজ্য শুরু হয়।
প্রতিদিন বিকেল ৫টায় শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। মোট ৩০ মিনিটের অনুষ্ঠানের মধ্যে ১৮ মিনিট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাকি সময় কুচকাওয়াজের পাশাপাশি দুইদেশের যৌথ সাংস্কৃতিক মঞ্চে বেজে ওঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলগীতি এবং দেশের গান। ভারত-বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্তে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় দুই বাংলার সাধারণ মানুষ। দুই দেশের সাধারণ মানুষ একটি নিয়মের মধ্য দিয়ে সেখানে মত বিনিময় ও আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পায়। অনুষ্ঠান শেষে যে যার দেশে ফিরে যায়।
উল্লেখ্য, এর আগে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাস, ট্রেন ও বিমান যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।