নরসিংদী জেলার মাধবদীতে এনজিও থেকে উত্তোলনকৃত ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় ৬ মাসের শিশু সন্তানসহ মানছুরা বেগম (২২) নামে এক নারী গ্রাহককে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৮ মার্চ) বিকেলে মাধবদী পৌরসভার বিরামপুর দড়িপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মাধবদী পৌরসভার বিরামপুর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মানছুরা বেগম তিন বছর আগে তার স্বামীর কথায় বাস্তব নামে একটি এনজিও থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। এরপর সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। কিন্তু ব্যবসা শুরু করার কিছুদিন পরই লোকসানের মুখে পড়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধে সমস্যা তৈরি হয়।
এনজিওর কর্মীরা কিস্তির টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকলেও তারা অভাবের সংসার চালিয়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হয়। এর মধ্যে ৬ মাস আগে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মানছুরা বেগম। এদিকে কিস্তির টাকা ও পাওনাদারদের চাপের মুখে ৩ মাস আগে স্ত্রী সন্তানকে ফেলে কাউকে কিছু না জানিয়ে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান মানছুরার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম।
এরপর থেকে মানছুরা বেগম অতিকষ্টে শিশু সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করে আসছেন। তার উপর এনজিওর লোকজনের চাপের মুখে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ধার করে ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন এবং প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন মানছুরা বেগম। কিন্তু এনজিওর লোকজন এই শর্ত মানতে নারাজ। তাদের দাবি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। এতে অপারগতা প্রকাশ করেন মানছুরা বেগম।
অবশেষে বাস্তব নামের এনজিও কর্তৃপক্ষ মানছুরার বিরুদ্ধে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় বুধবার বিকেলে মাধবদী থানা পুলিশ মানছুরাকে গ্রেফতার করে নরসিংদী আদালতে পাঠায়।
এ ব্যাপারে মাধবদী থানার উপপরিদর্শক সঞ্জয় কুমার জানান, মানছুরার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। তাই তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।