রংপুরের পীরগাছার হাট-বাজারগুলোতে কমছে না জনসমাগম। উপজেলার ২০টি হাট-বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লোকজনের উপস্থিতি আগের মতোই রয়েছে। হোটেলগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের ভিড় লেগেই আছে। কেউ জনসমাগম এড়িয়ে সতর্কভাবে চলাচল করছে না। বিদেশ ফেরত প্রবাসীরা হাট-বাজারসহ সর্বত্র প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফলে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ও জনসচেতনতার অভাবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া দিকনির্দেশনা কোন কাজে আসছে না।
রোববার (২২ মার্চ) উপজেলার পাওটানা, ভোলানাথ, কান্দি ও চৌধুরাণীর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাট-বাজারগুলোতে আগের মতোই আসছে লোকজন। তাদের মাঝে সতর্কতার চিহ্ন মাত্র নেই। সবাই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দল বেঁধে খোশ গল্প করছেন। এখন পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধে তেমন কোন সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা না হওয়ায় ও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে এমন ঘটনা ঘটছে বলে অনেকে মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সর্বত্রই প্রচারণার মাধ্যমে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। ঘর থেকে বের হলেও সতর্কভাবে চলাফেরার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু পীরগাছা উপজেলায় তেমন প্রচারণা না থাকায় গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে আগের মতোই লোক সমাগম হচ্ছে। হোটেলগুলোতেও উপস্থিতি কমেনি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন দেশ থেকে গত এক সপ্তাহে উপজেলায় ১১২ জন ফিরে এসেছেন। নজারদারির জন্য তাদের তালিকা গ্রাম পুলিশ, আনসার ও জনপ্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে বিদেশ ফেরতরা কি অবস্থায় আছেন সে বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদেশ ফেরত ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করছেন। ফলে অনেকের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মাঝে করোনাভাইরাস নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। এজন্য সতর্কও নন তারা। আবার অনেকে বিষয়টি ভালোভাবে অবগতও নন। তারা বলছেন, ‘করোনাভাইরাস গ্রামে আসবে না। তাই তারা এটা নিয়ে চিন্তিত না।’
কান্দিরহাটে আসা সামিউল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক তেমন কোন প্রচারণা চালানো হচ্ছে না। ফলে লোকজন আগের মতোই চলাফেরা করছে।’
মমিন মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের দিক নিদের্শনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে প্রশাসনের নজরদারি থাকা দরকার। কিন্তু পীরগাছা উপজেলায় তেমনটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু আল হাজ্জাজ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘যতটা সম্ভব লোকজনকে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমীন প্রধানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি।
রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে দ্রুত ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হবে। বিদেশ ফেরত কেউ হোম কোয়ারেন্টিন অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’