করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্নভাবে গণসচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু এরপরও গাইবান্ধার ধাপেরহাটে কমছে না লোকসমাগম। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সাপ্তাহিক এই হাটে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের উপচে পড়া ভিড়। কয়েকজন ছাড়া করও মুখেই নেই মাস্ক।
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। বাজারে হাজারো মানুষের ভিড়। খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণেরা কাঁচামালসহ নিত্যপণ্য কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
স্থানীয়রা জানান, এখানে সপ্তাহে বৃহস্পতি ও সোমবার এ দু’দিন বৃহত্তর হাট বসে। এ সময় হাটে কাঁচামালসহ নিত্যপণ্য সামগ্রী ওঠে প্রচুর। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল কিনতে আসেন ধাপেরহাটে। এছাড়া আসেন স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীরাও। একইসঙ্গে সাধারণ ক্রেতারাও কিনে থাকেন এখানকার শাক-সবজিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ফলে সপ্তাহের বৃহস্পতি ও সোমবার সহস্রাধিক লোকের সমাগম ঘটে এই হাটে।
সম্প্রতি দেশের করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিতে লোকসমাগম কমাতে গাইবান্ধা জেলার সাপ্তাহিক হাটগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তবে এসব নির্দেশ অমান্য করে আগের মতো এখনো নিয়মিত বসানো হচ্ছে ধাপেরহাটের সাপ্তাহিক হাট। ফলে কমছে না লোকসমাগম। এতে করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।
হাটে আসা কাঁচামাল ব্যবসায়ী এন্তাজ আলী বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কাঁচামালের চাহিদা বেড়েছে অনেকটাই। ক্রেতা সাধারণের এ চাহিদা পূরণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাইকারি কাঁচামাল কিনতে এসেছি।’
সাধারণ ক্রেতা আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিভিন্ন হাট-বাজার বন্ধ করেছে প্রশাসন। ধাপেরহাটও বন্ধের আশঙ্কায় খাদ্যপণ্য মজুত রাখতে এই হাটে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনা নিয়ে সচেতন আছি। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে হাজারো মানুষের ভিড়ে তরকারিসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী কিনতে এসেছি।’
এদিকে, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্তে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ধাপেরহাট ইউনিয়নের কর্মজীবী মানুষরা ঢাকা থেকে ফিরে এসেছেন। তারা বাড়িতে আসার পর ঈদ উৎসবের মতো কেনাকাটা শুরু করেছেন। এ কারণে ধাপেরহাটে লোকসমাগম বেড়েছে। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
ধাপেরহাট বনিক সমিতির সাধারণ আব্দুল খালেক মণ্ডল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল
থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁচামাল বাজারে লোকজনের ভিড় জমেছিল। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ভিড় কমানো হয়েছে।’
ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রজব আলী বাতা২৪.কম-কে বলেন, ‘কাঁচাবাজারে লোকসমাগমের খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় হাটে আসা অধিক মানুষদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’