বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাবু হবিগঞ্জের মানুষ। প্রয়োজন ছাড়া কোনো মানুষ ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। করোনার বিস্তার ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসনও নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। পুলিশের পাশাপাশি মাঠ পর্যবেক্ষণে রয়েছে সেনাবাহিনী। একই সাথে মাঠের অভিযানে রয়েছে জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা।
করোনাভাইরাস এখন শুধু শহরবাসী নয়, গ্রামেও এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একেবারে প্রয়োজন ছাড়া কোনো মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এমনকি অসুস্থ হলেও করোনা আতঙ্কে চিকিৎসা নিতে আসছেন না হাসপাতালে। রাস্তা-ঘাটের পাশাপাশি জন-মানবহীন হয়ে পড়েছে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালও। যেখানে শতশত রোগীদের চাপে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হতো নার্স-চিকিৎসকদের। সেখানে এখন অলস সময় কাটছে তাদের।
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রতিদিন ৩-৪শ’ রোগীর সমাগম হলেও বর্তমানে আছে হাতে গুণা কয়েকজন। হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪৪টি বেডে রোগী আছে মাত্র ৫ জন। একই অবস্থা পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ড ও শিশু ওয়ার্ডে। সেখানেও রোগী ভর্তি আছেন মাত্র কয়েকজন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়- সারাদিনে ৫০/৬০ জন রোগী এসেছেন হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে। এরমধ্যে কেউ কেউ গুরুত্বর অসুস্থ হওয়ার পরও চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলেও রোগীরা বাড়ি চলে যান।
সদর আধুনিক হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স নাদিয়া সুলতানা বলেন- ‘করোনাভাইরাস আতঙ্ক দেখা দেওয়ার পর থেকে সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা একেবারে কমে গেছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে করোনা আতঙ্কের কারণে হাসপাতালে আসছেন না রোগীরা। আবার যারা আসছেন তারাও চিকিৎসা নিয়েই চলে যাচ্ছেন।’
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামীমা বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে তেমন রোগী আসছেন না। করোনাভাইরাসের কারণেই মূলত রোগীরা হাসপাতালে আসতে অনাগ্রহী। আবার যারা আসছেন তাদের অবস্থা গুরুত্বর হলেও হাসপাতালে ভর্তি হতে চান না।’
তিনি বলেন- ‘আমার চিকিৎসক জীবনে কোনো হাসপাতালের এমন অবস্থা দেখিনি।’