দেশে বিভাগীয় পর্যায়েও এখনো করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব হয়নি। বড় জেলাগুলোতেও শনাক্তের ব্যবস্থা নেই। অনান্য জেলার মতো আক্রান্ত বা সম্ভাব্য রোগীর চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ আইসোলেশন পর্যন্ত রাখার ব্যবস্থা রয়েছে নাটোরে। এখানেও নেই করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা।
এমন বাস্তবতায় করোনা পরীক্ষার জন্য রোববার (২৯ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ২০০ টেস্টিং কিট পাঠিয়েছেন। কিটের সঙ্গে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ ও চাহিদা অনুযায়ী পাঠানো হয়েছে প্রয়োজনীয় পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই), হ্যান্ড গ্লাভস, ফেস মাস্ক, প্রোটেক্টিভ চশমা, জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ যাবতীয় মেডিকেল ইকুইপমেন্ট। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাঃ আমিনুল ইসলামের কাছে এই কিট হস্তান্তর করেন পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস।
ল্যাবসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকার পরও সংকটময় মুহূর্তে উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো এই কিট কী কাজে লাগবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
এ নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান বলেন, সিংড়া কেন, নাটোরেই করোনা পরীক্ষার বিশেষায়িত ল্যাব নেই। অনেক বড় বড় জেলাতেই করোনা পরীক্ষার ল্যাব, কিট কিছুই নেই। এই টেস্টের জন্য পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন প্রয়োজন, যা খুবই ব্যয়বহুল এবং দেশের খুব কম হাসপাতালেই রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী সিংড়াবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে কিটের ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে এটি কোন কাজে আসবে বলে মনে হয় না।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার জানান, টেস্টিং কিট পাঠানোর বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে সিংড়ায় করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাঃ আমিনুল ইসলাম দাবি করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলজি (এমটি ল্যাব) ল্যাবটি অত্যাধুনিক। চারজন টেকনিশিয়ান কাজ করছেন ল্যাবে। এই ল্যাব থেকে আমরা ডেঙ্গুরও সফল পরীক্ষা করেছি। আমাদের বিশ্বাস, করোনা পরীক্ষাও আমরা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবো। তবুও যদি কোনো কিছু প্রয়োজন হয়, তবে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে যা সার্বিকভাবে আমাদের সহায়তা করবে।
এই টেস্টিং কিটে কীভাবে করোনার পরীক্ষা করতে হয় এটি চিকিৎসকরা জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টেস্টিং কিট খুলে আমরা যাচাই-বাচাই করেছি। এটি র্যাপিড টেস্ট কিট, যা করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার প্রথম ধাপ। আমাদের ল্যাবে আমরা এই টেস্ট কিট দ্বারা সংক্রমণের প্রথম ধাপটি পরীক্ষা করতে পারবো। তবে তা করার আগে আগামীকাল আইইডিসিআরের সঙ্গে আমাদের কনফারেন্স হবে। তারা অনুমতি দিলে পরীক্ষাটি শুরু করা হবে। সেই সঙ্গে আমাদের সক্ষমতার একটি প্রতিবেদনও আমরা প্রদান করবো আইইডিসিআরকে। তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলে কাজ শুরু করা হবে।