করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জারি করা সরকারি বিধি নিষেধ মানছেন না নীলফামারীর গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষজন। সকালে কম থাকলেও বিকেলে গ্রামের হাট-বাজারে লোক সমাগম হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনী দিনরাত আপ্রাণ চেষ্টা করেও নিষেধ মানাতে পারছেন না।
সরকারিভাবে সাধারণ ছুটি ঘোষণা হওয়ার (২৬ মার্চ) পর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ওষুধের দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে নীলফামারীতে অঘোষিত লকডাউনে উপজেলা ও পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো জনশূন্য হলেও প্রান্তিক জনপথ এবং গ্রামের হাট-বাজারে কোনোভাবেই জনসমাগম কমানো যাচ্ছে না।
করোনা আতঙ্কের মধ্যেও নীলফামারী জেলার ৬ উপজেলার ১২৩ টি হাট-বাজারে দোকানপাট খুলে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে জমজমাট ব্যবসা করছেন দোকান মালিকরা। ভোক্তা সাধারণ আর ব্যবসায়ীরা মানছেন না সামাজিক দূরত্ব। অনেকেই ব্যবহার করছেন না মাস্ক। নেই হাত ধোয়ার কোন ব্যবস্থা। দু-একটি হাট বাজারে জনসচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করা হলেও অধিকাংশ বাজারে পৌঁছায়নি সচেতনতামূলক প্রচারণা। শহরের রাস্তাঘাটে জনগণের উপস্থিতি নিতান্তই কম থাকলেও হাট-বাজারগুলোতে জনসমাগম রয়েছে স্বাভাবিক।
সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে নীলফামারী জেলার কচুকাটা বাজারে চা-মিষ্টান্নের ব্যবসা করছেন মোকলেছার রহমান। তিনি বলেন, ‘দোকান না খুলে কি করব, বউ-বাচ্চা আছে, সংসার আছে। দোকান না খুললে সংসার চলবে কেমনে।’
জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ হাটে আসা মাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে দোকানপাট খোলা। লোকজন অবাধে চলাফেরা করছে। কেউ কোনো নির্দেশনা মানছে না।’
নির্দেশনা অমান্য করে দোকান খোলা রাখার কারণ জানতে চাইলে ডোমার উপজেলার বামুনিয়ার হাট বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হক বলেন, ‘লোকজন বাজারে আসতেছে। তাই দোকান খুলছি। লোকজন না আসলে বন্ধ করব।’
জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ শামীম বলেন, ‘করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তারা তা মানছে না। দোকানপাট খুলে দিব্যি ব্যবসা করছে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যেহেতু হাট-বাজার খোলা। তাই লোক সমাগম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জনসচেতনতা বাড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ আর ইজারাদারদের নিয়ে ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে। পাশাপাশি জনসমাগম বন্ধে সেনাবাহিনী কাজ করছে। বিজিবি সদস্যদেরও মাঠে নামানোর ব্যাপারে কথা হয়েছে।’