ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে পারভীন আক্তার (২৪) স্বামীসহ থাকেন চট্টগ্রামে। সোমবার রাতে (৩০ মার্চ) হঠাৎ খবর পান তার পিতা গুরুতর অসুস্থ। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে সারা দেশেই এখন গণপরিবহন বন্ধ। নিরুপায় হয়ে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকালে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে স্বামীকে নিয়ে পারভীন রওনা হন অসুস্থ পিতাকে দেখতে। কিন্তু কে জানতো অসুস্থ পিতাকে দেখতে গিয়ে নিজেকেই যেতে হবে পরপারে! তাও আবার স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে!
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) দুপুর পৌনে ১টার দিকে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কোরবানপুর এলাকায় তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে পারভীন আক্তার, তার স্বামী সাদ্দাম হোসেন (২৭) ও প্রাইভেটকার চালক আবদুর রহমান (২৮) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
নিহত সাদ্দাম নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জুলাইপার গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। আর প্রাইভেটকার চালক আবদুর রহমান নোয়াখালী কবিরহাট উপজেলার সোনাদিয়া গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে।
বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা প্রাইভেটকারটি বাঙ্গরা বাজার থানার কোরবানপুর এলাকায় রাস্তার মোড় অতিক্রম করার সময় প্রাইভেটকারের একটি চাকা হঠাৎ বিকল হয়ে পড়ে। এতে করে প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনের খাদে পড়ে পানিতে ডুবে যায়। এ সময় প্রাইভেটকারে থাকা দুই যাত্রী (দম্পতি) এবং চালকসহ তিনজন নিহত হন।
এই ঘটনার সত্যতা বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুজ্জামান তালুকদার। তিনি জানান, নিহত ওই দম্পতি চট্টগ্রামে থাকেন। পারভীন আক্তারের পিতার অসুস্থতার সংবাদে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যেই এমন দুর্ঘটনায় তারা প্রাণ হারালেন।
ওসি জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।