বগুড়া নন্দীগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আমেনা বেওয়া (৬০)। কখনও ভিক্ষা করেন আবার কখন মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে জনসমাগম কমে যাওয়ায় ভিক্ষা করছেন না তিনি। যাদের বাড়িতে কাজ করত তারাও বাড়িতে ঢুকতে দেন না।
এ অবস্থা কি করবেন ভেবে কুল পাচ্ছিলেন না। অসহায়ের মতো নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলেন আমেনা বেওয়া। এমন সময় চাল,ডাল তেলসহ খাদ্য সামগ্রীর ব্যাগ নিয়ে হাজির হন আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানা। খাদ্য সামগ্রীর ব্যাগ হাতে তুলে দেন আমেনা বেওয়া ও ভ্যান চালক মোসলেম উদ্দিনের হাতে। খাবার সামগ্রী নিয়ে তাদেরকে ঘরে ফেরার আহবান জানান আনোয়ার হোসেন রানা। হাসি মুখে তারা বলেন, এখন আর না খেয়ে থাকতে হবে না।
এভাবে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ঘুরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা। তিনি ছাড়াও দল মত নির্বিশেষে অনেকেই একই ভাবে এই অসহায় মানুষের পাশে পাশে দাঁড়িয়েছেন। ফলে দরিদ্র মানুষ পাচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী।
শহর থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে যমুনা নদীর দুর্গম চরে খাবার সামগ্রী প্রতিদিনই পৌঁছে যাচ্ছে। ভিক্ষুক থেকে রিকশাচালক, ফুটপাতের দোকানি এমনকি হিজড়াদেরকে দেয়া হয়েছে খাদ্য সামগ্রী। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে দিচ্ছেন ত্রাণ সামগ্রী।
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানানো হয়, করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় বগুড়া জেলা খাদ্য বিভাগের উদ্যোগে চালকল মালিক সমিতি ৫০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৫ লাখ টাকা অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইতোমধ্যে ২৬ মেট্রিক টন চাল এবং ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা জেলা প্রশাসক এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
অপরদিকে বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বগুড়া, নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবেলায় দুই লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছেন।
এছাড়াও জেলার ১২ টি উপজেলায় প্রথম দফায় ২৮১ মেট্রিক টন চাল এবং ১০ লক্ষ ৮০ হাজার নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।যা গত তিনদিন ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্বাবধানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছানো হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো নিজ নিজ এলাকায় বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।