পঞ্চাশোর্ধ লাল বানু। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের অস্থায়ী বাসিন্দা। তিনি গাইবান্ধার বাসিন্দা হলেও ভাগ্য নিয়তির কারণে আজ তাকে অস্থায়ীভাবে বসবাস করতে হচ্ছে মোবারকপুর ইউনিয়নে। অন্যের করুণায় পাওয়া এক টুকরো মাটির উপর পলিথিনের ঘর তৈরি করে কোনো রকমে বসবাস করছেন। তার উপর আবার বাড়তি যোগ হয়েছে মেয়ে ও ৬ বছর বয়সের নাতি।
জানা গেছে, ভিক্ষা করেই চলতো লালবানুর সংসার। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাস ঝুঁকি এড়াতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ঘর থেকে বের হতে পারছেন না তিনি। ভিক্ষা করতে না পারায় বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে সংসারের খরচ। অন্যদিকে ন্যাশনাল আইডি কার্ড (এনআইডি) না থাকায় জনপ্রতিনিধিদের থেকেও কোনো সাহায্য পাচ্ছেন লালবানু। ফলে খাবার জোগাড় করতে না পারায় মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে তার।
শনিবার (৪ এপ্রিল) কথা হয় ভিক্ষুক লালবানুর সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে মাদকাশক্ত স্বামী নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন লালবানুকে। এরপর জীবন সংগ্রামের পথে হাতে ভিক্ষার থালা নিয়ে ঘুরতে থাকেন এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ভিক্ষা করতে করতে চলে আসেন শিবগঞ্জের মোবারকপুর এলাকায়।
তিনি আরও জানান, তার এমন করুন চিত্র দেখে জোহরপুর গ্রামের আবু তালেবের বাড়ির পেছনে আম বাগানের এক কোণে জায়গা দেন স্থানীয়রা। সেখানেই পলিথিনের ঘর বানিয়ে ভিক্ষা করে কোনো রকম সংসার চালাচ্ছিলেন। এমন সময় তার সংসারে যোগ দেয় স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে লাবনি ও ৬ বছর বয়সী নাতি আসাদ।
লালবানু বলেন, ‘এখানে আশার পর একটা ন্যাশনাল আইডি কার্ড বানিয়ে দেয়ার জন্য অনেকবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাকে বানিয়ে দেয়নি। আমি এখানকার ভোটার না হওয়ার কারণে কেউ আমাকে ত্রাণ দেয় না। ফলে কী খেয়ে বেঁচে থাকব, এ নিয়ে হতাশায় দিন কাটছে।’
এ বিষয়ে মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমি তার বিষয়ে জানি। তিনি ভিক্ষা করেই চলেন। সামনে বরাদ্দ পেলে অনুদান দেওয়ার চেষ্টা করব।’