গার্মেন্টস খোলার খবরে শনিবার (৪ এপ্রিল) ঢাকা আসেন কয়েক লাখ পোশাক শ্রমিক। রোববার সকালে কর্মস্থলে গিয়ে জানতে পারেন আবারও গার্মেন্টস বন্ধ করা হয়েছে। গার্মেন্টস খোলার খবর দেওয়া হলেও জানানো হয়নি বন্ধের খবর। এমন অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই আবারও ঢাকা ছাড়ছেন তারা।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অগত্যা পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। পথের মধ্যে খোলা ট্রাক, পিকআপ, পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা যেটাই পাচ্ছেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। সামাজিক দূরত্বের কথা না মেনে গাদাগাদি করে উঠে পড়ছেন।
রোববার (৫ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, সাভার হতে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে পুলিশ করোনার ঝুঁকি রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিচ্ছেন। এতে মহাসড়কেই নেমে যেতে বাধ্য হচ্ছেন ঢাকা ফেরত গার্মেন্টসকর্মীরা। এভাবেই তারা পায়ে হেঁটে পরিবার নিয়ে চরম কষ্টে বাড়ি ফিরছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলার বাসিন্দা বেল্লাল মিয়া তার স্ত্রী নাসরিন বেগমকে নিয়ে গাড়ির অপেক্ষায় মহাসড়কের রসুলপুর এলাকায় দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় তারা জানান, গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করেন। রোববার গার্মেন্টস খোলার কথা ছিল। তাই তারা শনিবার গাজীপুরে যান। কিন্তু রোববার সকালে অফিসে গিয়ে দেখেন আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ করে নোটিশ টানানো রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, গাজীপুর থেকে ট্রাকে করে রওনা হয়েছিলেন কিন্তু পুলিশ তাদের করটিয়া এলাকায় ট্রাক থেকে নামিয়ে দেন। তাই তারা বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটেই রওনা হয়েছেন।
আমিনুল ইসলাম জানান, রোববার ভোরে গ্রামের বাড়ি থেকে ফোনে জানানো হয় তার বড় ভাই মারা গেছেন। তাই তিনি ঢাকা থেকে ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু তিনিসহ ২৫ জনকে বহনকরা ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে এলেঙ্গা বাস স্টেশনে। এখন তিনি কিভাবে বাড়িতে যাবেন বুঝতে পারছেন না।
যাত্রীরা জানান, গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকার ফলে ট্রাক, পিকআপ ও মাইক্রোবাসে করে যাওয়ার সময় পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি থামিয়ে চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদা না দিলে গাড়ি আটকিয়ে রেখে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। ফলে বাধ্য হয়েই পায়ে হেঁটে যাচ্ছি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এটিএস আই মকবুল হোসেন চাঁদা ও পুলিশি হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই পণ্যবাহী পরিবহণ থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় তারা কিছুটা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। দুই একটি বাস পেলে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।
সাভার হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাস রোধে তাদের ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে বৃহত্তর স্বার্থে। এখানে কিছু করার নেই।