১৯৭৫ সালের পনের আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর প্রচারিত হতেই সবাই যখন স্তম্ভিত ও বিহ্বল, তখন তীব্র প্রতিবাদে গর্জে উঠে ছোট্ট শহর কিশোরগঞ্জ। তাৎক্ষণিক মিছিলে 'মুজিব হত্যার পরিণাম, বাংলা হবে ভিয়েতনাম', 'শেখ মুজিবের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না' স্লোগানে পুরো শহর কাঁপিয়ে দেয় একদল তরুণ। তাঁদের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন।
'নৃশংস খবরটি শুনে আমরা দারুণভাবে ক্ষুব্ধ হই। আমাদের আরও কয়েকজন বন্ধু ও রাজনৈতিক সহযোগী ঘর ছেড়ে শহরের কেন্দ্রস্থলে এসে সমবেত হন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে রাজপথ প্রকম্পিত করি', বললেন অ্যাডভোকেট দোলন।
সেদিনের স্মৃতিচারণায় বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, 'মিছিলটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে দীপ্ত। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল নেতা-কর্মীরাই ছিলেন মিছিলের মূল চালিকা শক্তি।'
তিনি বলেন, 'সেই বিরূপ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করার কারণে আমাদের উপর স্বৈরাচারী সরকারের নিপীড়ন নেমে আসে। অনেকে পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন এবং অনেকেই আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হন'।
অ্যাডভোকেট দোলন বলেন, 'একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে যে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি, সেদেশে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে নিহত করার কাপুরুষত্ব আমরা মেনে নিতে পারিনি বলেই বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতেও প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়ি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়নেই বাঙালির মুক্তি নিহিত।'
তিনি বলেন, 'গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, মানুষের সাম্য ও মুক্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর মহান রাজনৈতিক মতাদর্শ সফল করতে হবে। লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, মৌলবাদ ও ষড়যন্ত্রবাদ প্রতিহত করে মানুষের মুখে হাসি আনতে হবে।'
তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সম্পন্ন করা সমগ্র জাতির উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্যেই জরুরি। অতীতের মতো বর্তমানেও আমাদের সফল হতে হবে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ও বিরোধিতাকে পদানত করে।'