বিজয় দিবসে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রযোজনায় প্রায় দুই শতাধিক নাট্যকর্মীর সমন্বয়ে উন্মুক্ত পরিবেশে মঞ্চায়ন হলো নাটক কোর্ট মার্শাল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ হয় এনভায়রনমেন্টাল থিয়েটার ‘কোর্ট মার্শাল’। নাট্যকার এস. এম. সোলায়মানের ‘কোর্ট মার্শাল’ নাটকটির নব্য রূপায়িত স্ক্রিপ্ট ও নির্দেশনায় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মো. মাজহারুল হোসেন তোকদার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হল, লাইব্রেরি ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন ভবনের সম্মুখ ভাগ ও কেন্দ্রীয় মাঠের একাংশজুড়ে বিস্তৃত ছিল নাটকের মঞ্চ।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন বর্তমান সময়ে ছোট পর্দার পরিচিত মুখ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মনোজ কুমার প্রামাণিক, স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের প্রভাষক মো. রাকিবুল ইসলাম।
বিজয়ের ৪৭ বছর উপলক্ষে ৪৭ ফুটের একটি পতাকা প্রদর্শিত হয় নাটকের দৃশ্যে। প্রায় দেড় ঘণ্টার এ নাটকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিশেষ করে বীরাঙ্গনাদের প্রসঙ্গটি ওঠে এসেছে স্পর্শকাতরভাবে।
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে সেই আলোকেই ‘কোর্ট মার্শাল’। মুক্তিযোদ্ধাদের নিধন ও মূল্যবোধের সব অর্জনকে ধ্বংস করার পরিকল্পিত চক্রান্ত নাটকে উপস্থাপিত হয়েছে। ঊর্ধ্বতনদের নির্যাতন ও নিষ্পেষণে এক সময় অধীন ব্যক্তিরা হয়ে ওঠে প্রতিবাদী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমাজে তাদের জায়গা হয় না।
নির্দেশক মো. মাজহারুল হোসেন বলেন, ‘কোর্ট মার্শাল’ তরুণ প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ ভাবনায় ইতিবাচক পদক্ষেপ রাখবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজিবুল ইসলাম সজিব বলেন, ‘নাটকটিতে সবমিলিয়ে অসাধারণ কনসেপ্ট, দক্ষ উপস্থাপনা, অসাধারণ এক পরিবেশনা উপভোগ করেছি।’
উন্মুক্ত নাটকটি দেখতে এসেছিলেন কয়েক হাজার দর্শক। ভালুকা থেকে আসা এক দর্শক বলেন, ‘জীবনের সেরা নাটক দেখলাম, ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট সকলকে।’
পুনরায় মঞ্চায়নের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ময়মনসিংহ থেকে আসা অপর এক দর্শক বলেন, ‘নাটকটি দেশের বিভিন্ন জায়গা মঞ্চস্থ করা দরকার। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ ও বীরাঙ্গনাদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব দূরীকরণে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে নাটকটি।’
দীর্ঘ দুই মাস ধরে দুই ধাপে সকাল থেকে রাত অবধি নাটকটির মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। নাটকটি নির্মাণে প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এ. এইচ. এম. মোস্তাফিজুর রহমান।
এছাড়াও সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার প্রধান, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি তপন কুমার সরকার, বর্তমান সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ও সহ-সভাপতি ড. এমদাদুর রাশেদ সুখন।
প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইসমতআরা ভূঁইয়া ইলা।