রাক্কসী ও রহিম্যা

গল্প, শিল্প-সাহিত্য

আবু মুস্তাফিজ | 2023-09-01 23:33:15

ভাই, আমাগো দুইডা সমস্যা দেন না।

‘সমস্যা নাই, সিঙ্গারা আছে’ কইয়া শরবেশ আর একাব্বরের সামনে রাহা টিনের আইঠা পিরিজের উপর পিরিজ চ্যাঙ্গা দিতে দিতে জব দেয় পিয়াসী হইটালের কর্মচারী রুবেল।

রওশন টকিজে ম্যাটিনি শো মাইরা খিদাজর্জরিত সখিপুইরা পাহাইড়া শরবেশ কয়, তাইলে দুইডা সিঙ্গারাই দেন।

কিন্তু একাব্বর বাগড়া দেয়। কয়, নাগছে ভাতের খিদ্যা, তুই সিঙ্গারা চাস ক্যা?
শরবেশ কয়, ভাত রাইত্রে আইয়া খামনি। নাইলে ট্যাহায় কুলায়বো না।

একাব্বর কয়, ট্যাহা আমার কাছে আছে তো? তুই ভাতের অডার দে।

শরবেশ উজবিজ কইরা রুবেলরে কয়, ভাই তুমি আমাগো নিগ্যা দুইডা সিঙ্গারাই আনো।

রুবেল সিঙ্গারা আনতে গেলে শরবেশ ওফ ফুলা একাব্বররে কয়, তুই এত ভুক্মা ক্যা? তরে না কইলাম, নঠিপাড়ায় গেলে ট্যাহা নাগবো ম্যালা?

একাব্বর কয়, তাই বইলা দুফুরে ভাত খামু না?

শরবেশ কয়, এহন দুফুর পাস কনে? বিহাল গড়িয়া গেছে গা কুনসুম?

একাব্বর কয়, যাইগ্গা.. আমার খিদা নাগছে।

শরবেশ রাগ ধইরা রাখা পারে না।

কয়, দৈনিকি তুমার ভাত খাওন নাগব ক্যা? একদিন অন্য কুন্তা খা।

কিন্তু একাব্বর তা মানে না। তার লাগছে ভাতের খিদা, ফলে সে ওফ ফুলিয়াই থাকে।

ব্যাপারটা বুইঝা শরবেশ গলাডা আইগিয়া নিয়া আইসা গোপন কথা বলার ন্যায় বলিতে থাকে, দুইডা সিঙ্গারা খাইয়া ঠাইসা পানি খা..তাহাদে নু যাই স্টিডিয়ামে খেলা দেহি গ্যা। হাইঞ্জা অইলে দুই ভাইয়ে মিল্যা নঠিপাড়ায় ঢুকুম নি।

তাহাদে খেলাধূলা কইরা রাইতে আইয়া ঠাইসা ভাত খিলামু নি তরে।

রাইতে খাওনের আশ্বাসে প্যাটের খিদা সরে না একাব্বরের। কিন্তু কিছু কওয়ার ইচ্ছা হয় না তার। শাটে নাইগা থাকা ঘাম আর বিড়ির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ একাব্বর।

টিনের পিরিজে বড় বড় সিঙ্গারা রাহে রুবেল।

পিরিজ থিক্যা একটা সিঙ্গারা তুইলা কামুড় বসায় শরবেশ।

একাব্বর তহনও অফ-ফুলা। ফলে শরবেশ পিরিজ আইগিয়া দেয়।

আর কয়, সিঙ্গারাডা খুব মজা আছেরে, খা একটা। রাইতে আইয়া ভাত খামু নি, কইয়া চোক টিফি দেয়।

তাতেও একাব্বরের মন গলে না। সে অফ-ফুইলাই থাকে।

ফলে শরবেশ তার আধখাওয়া সিঙ্গারাডা একাব্বরের মুখে প্রায় ঠাইসা ধরে, খাইয়াই দেক না...খউব, কইজ্জার টুকরাও আছে একটা।

একাব্বর খাইব না খাইব না কইরাও খিদার যন্ত্রণায় আর কলিজি টুকরার কথা শুনিয়া শরবেশের বাড়াইয়া দেওয়া সিঙ্গারায় কামুড় মারে।

নগে নগে তুমুল একটা ভালো লাগা তার দাঁত বাইয়া জিবল্যায় ছড়াইয়া পড়ে।

একাব্বর কামুড়ের পর কামুড় দিতে থাকে প্রায় বয়কা ধরা সিঙ্গারাতে।

শরবেশ খ্যাক খ্যাক কইরা হাসে আর কয়, হেব্বি মজা না?

একাব্বর জব না দিয়া পিরিজে পইড়া থাকা তার ভাগেরডাও নেয়। খিরাইয়ের সালাদের বাঠিও খাইল্যা কইরা হালায়।

সিঙ্গারা সালাদ ফুরিয়া গেলে এইবার ঢগঢগ কইরা দুই গেলাশ পানি খায়। আর তহনই টের পায় প্যাটের মুচাড়।

শরবেশের মুহি তাকিয়া কয়, আগা ধরছে।

জব-বদ্দ হইবার দশা হয় শরবেশের। আধা মিনিট কুনো কতা কইয়া পারে না।

কয়, ক্যা বাইত্তে থিক্যা আইগা আইতে কী অইছিল তুমার? এহন তুই কনে আগবি? এইডা কি দ্যাশ-গেরাম পাইছত? এইটা টাঙ্গাইল ছিটি। এনে চাইলেই পাটখ্যাতে বইয়া বঢ়বঢ় কইরা আগবার পারবা না।

শরবেশের লেকচারেও হাগার চাপ সামলাইতে পারে না একাব্বর। পারে না রাগের চাপও, এত কতা কইস নাছে। বেল উঠার আগ থিক্যা ডাকা শুরু করছত, আগুম ক্যামনে? তর জ্বালায় তো সকালে ঠিকমতো খাইয়াও হারলাম না। কইয়া শইল মুচড়াইতে থাকে।

শরবেশ বুঝে রাগ কইরা লাভ নাই। তাই পিয়াসী হইটালের কর্মচারী রুবেলরে ডাকে। কয়, ভাই একটা বিফদে পড়ছি।

বিপদের কথা শুনার সাথে সাথে রুবেল ফোঁস কইরা উঠে, ট্যাকা না দিলে আতের ঘড়ি খুইল্যা রাইখ্যা দিমু। কুনো তাল্ঠিবাল্টি চলব না। কইয়া একাব্বরের আতের চকচকা ক্যাসিও ঘড়িডার দিকে লোভ দেয়।

শরবেশ কয়, ভাই এইডা ট্যাকার বিফদ না। কয় ট্যাকা নাগব আফনের? এহনই দিতাছি। কইয়া পকট থিক্যা রেকসিনের মানিব্যাগ বাইর করে।

এইবার রুবেল আশ্বস্ত হয়। খাইয়া ট্যাকা না দেওয়ার হাস্তর শুনতে শুনতে অভ্যাস হইয়া গেছে তার। ফলে বিফদের কতা শুনলেই ট্যাহা না থাকার কথা মনে পড়ে অ্যাট-ফাস্ট।

সে জানে খাইয়্যা ট্যাহা না দেওয়া পাবলিকের অভ্যাস। ঘাড়ে ধইরা আদায় করবার চাইলে আতে পায়ে ধরে। ভালো ভালো পুশাকপরা লুকেরা এগিল্যা করে। ফলে ঘড়ি আঙটি পাইলে তো কতাই নাই, কিন্তু কিছু না থাকলে সমিস্যা।

তাইলে কিয়ের বিফদ? গলা নরোম করে রুবেল।

শরবেশ এইবার রুবেলের হাত টান দিয়া কাছে আনে। হাঁকিহুঁকি কইরা কয়, ভাই, হ্যার আগা ধরছে। আগে কুনুদিন টাঙ্গাইল আহে নাই তো কইয়া একাব্বররে দেহায়।

রুবেল কয়, ও এই কতা? এইডা কুনো ব্যাফার হইল? সুজা দৌড় দিয়া ঘ্যাগের দালানের পিছে বইয়া পড়ো গা। যাউ, যাউ কইয়া একাব্বররে আইগিয়া রাস্তা দেহাইয়া দেয়।

ঘ্যাগের দালানের পিছে ঝোপজঙ্গলে ভরা। সাপখোপের আড্ডা। এইসবের কোনো তোয়াক্কা করে না একাব্বর। এট্টু আউল পাইয়াই প্যান খুইলা বহার আগেই ভুরাস কইরা মাইরা দেয়।

বইতে না বইতেই পইড়া যায় আধা সের। কুনো দিকে খিয়াল নাই তার।

ঝোপের আউলে শাড়ি বিছাইয়া শুইয়া থাকা রাক্কসীর নাকে কাঁচা গুর গন্ধ বাড়ি মারে। বাতাসে নাক ঢুকাইয়া বড় বড় দুইডা টান দিয়্যা গন্ধর খোং খুঁজে। এবং পাইয়াও যায়। এই আর যাইবা কই?

ত্যালেবেগুনে জ্বইলা উঠে রাক্কসী, কুন নইট্যা মাগীর পুলা এনে আগে রে? নাঙকরানির পুলারা আর জাগা পায় না? উরাগ টাঙ্গাইল থ্ইুয়া ঘ্যাগের দালানের পিছে আইয়া আগা মারাইব। জানে যে রাক্কসী এনে ঘুমায়। হ্যারে গুয়ের গুন্দডা না হুঙ্গাইলেও না.. নইটা মাগীর পুলারা।

বকতে বকতে উইঠা আসে এহাবারে একাব্বরের সামনে।

একাব্বর হাগার তালে থাকায় এইসব কোনো কিছুই কানে যায় না তার। কিন্তু রাক্কসী সামনে আইসা পড়ায় ভূত দেখার ন্যায় চইমক্যা উঠে।

হাড়াহাড়ি পক্কুডা আড়াল করে, দুই হাতে ছাপা দিয়া, কুনোমতে।

কিন্তু মুতার আগে হাগা পইড়া যাওয়ায় খাড়াইয়া থাকা বেলেহাজ পক্কু একাব্বরের আঙ্গুলের ফাঁক দিয়া রাক্কসীরে ফোঁস ফোঁস কইরা দেখে।

রাক্কসী ভুস্কি মাগী হইলেও এই দৃশ্য সহ্য করা পারে না।

কাফড় দিয়্যা মুখ ছাপা দেয়, কিন্তু কথা ছাফা দেয় না, উং গুঁ খাঁইয়্যা গুঁ আঁগতাছে রে..উয়াক.. থুহ গুন্দোরে.. নাড়িভুড়ি উল্টিয়া আইবার চায়।

কইতে কইতে হাড়াহাড়ি এলাকা ছাড়ে।

একাব্বরের হাগা বন্ধ হইয়া যায় পুরাই। রাক্কসী চইলা যাওয়ায় নতুন কইরা হাগা শুরু করে।

কিন্তু গুয়ের ঠেকি গুয়ায় ঠেকায় কিঞ্চিত সইরা বসে। এতক্ষণ ফোঁসফোঁস করা পক্কু রাক্কসীরে না দেইখা ঢিপ কলের ন্যায় পানি ছাড়ে।

বড় কইরা একটা কোৎ দেয় একাব্বর। ফোঁৎ কইরা আরেক পশলা তৈজস বাইর হইয়া আসে।

হাগার আমোদে নিজেরে লেলাইয়া দেয় সে। কিন্তু শরবেশের বদমেশি ভুলা পারে না। দুফুরে ভাত না খাওয়ার ব্যাদ্নাও ফির্যা আসে।

মনে মনে ভাবে শরবেশ একটা চুদির ভাই। হুদাই সে তার সাথে আইছে। কথা ছিল খরচোপাতি সুমান সুমান, অথচ শরবেশের এক ট্যাহাও ভাঙার নাম নাই। ট্যাহার কতা কইলেই কয়, খুরচ্যা ট্যাহা তুই ভাঙ, বড় কামের সুমে আমি ভাঙ্গুম নি।

ঘুড়ার ডিম ভাঙবো, শালায় একটা ভাউতা। তিন চাইর বচ্ছর ধইরা মেট্টিক পরীক্ষা দিতাছে। কিন্তু পাশ আর জুটে না। কেমনে জুটপ, বাপের সম্পত্তি ভাইঙ্গা এইরম ফূর্তি কইরা বেড়াইলে?

ম্যালা মাইনষ্যে হ্যার নগে মিশপার না করছে। আমিও মিশত্যাম না, যদি ন্যা রহিম্যা অবা কতা কইত!

রহিম্যার কতা মনে পড়ায় আমাশার চিনচিন্যা ব্যাদ্নাডা গুয়ার কোনাকাঞ্চি হইতে একাব্বরের বুকের মদ্যে ফিরত আহে। সে একটা দিঘল্যা নিয়াশ ছাড়ে। হাহ।

হাগা বাদ দিয়্যা রহিম্যার কতা ভাবতে বসে একাব্বর।

রহিম্যা এই কতাডা তুমি আমারে কইয়্যা পারলা?

আফনে আমগইত্তে আর আইফেন না।

ক্যা জিগাশ করার মতো মনের জোর আছিল না একাব্বরের। খালি মাথা নিচ্যা কইরা শুইন্যা যায়।

রহিম্যা কইতেই থাকে, আফনেরে আমি অন্য রহম ভাপছিল্যাম। কিন্তু আপনে অন্য রহম না। আর সবের নগাল, যারা সুযুগ পাইলেই ম্যায়া মাইনষ্যেরে যাইত্যা ধরে।

একাব্বরের হাগা বদ্দ হইয়া যায়। কোৎ দিলেও আর কিচ্চু আহে না, খালি শাও পড়ে। বুঝে আর হাগা হইব না।

আশপাশ তাকিয়্যা দুই তিনড্যা খুয়া পইড়া থাকতে দেখে। কুড়াইয়া গুয়া ঘষে।

হাড়াহাড়ি চেন নাগাইবার যাইয়া পক্কু আটকিয়া যায়। একাব্বর বুঝে দিনডা ভালো না। খুব সতর্ক হইয়া পক্কু ছুটাইবার চায়। কিন্তু পারে না, পক্কুর চামড়া ছুইলা যায়।

একদিন সক্কালবেলা রহিম্যার আব্বা আমাগো বাইত্তে আহে। দেড়পা জিলাফা নিয়্যা। আব্বার নগে কী জানি গুজুর-গুজুর ফুসুর-ফুসুর করে। যাইবার কালে বাংলা ঘরে আমার ডাক পড়ে।

আমার সামনেই আব্বা হ্যারে কয়, পুলায় রাজি থাকলে আমার না করার কী আছে?

তহন হ্যার আব্বায় আমারে কয়, বাজান, আফনে এই অঞ্চলের নামকরা ছাত্র। ট্যানেলফুলে বিত্তি পাইছেন। দুই দুইবার। আমার মেয়েও ছাত্রী একাবারে খারাপ না। হ্যারে যুদি অঙ্কডা এট্টু দেহাই দিতেন।

এই রকম অনুরোধ আমগো বাইত্তে প্রায়ই আহে। কিন্তু আব্বা রাজি হয় নাই। পুলার পড়ালেখা ক্ষতি হইবার পারে ভাইবা। কিন্তু এইবার আব্বাও রাজি হইয়া যায়। ফলে আমার না করনের কী আছে?

বাইলাজানি পাহাড়ের কোলে রহিম্যাগো বাড়ি। বাড়ির পিছে বংশাই নদী। টলটল্যা পানিতে নৌকা ভাইস্যা যায় সুতের টানে। যাওনের সুমে তাই কষ্ট নাই, কষ্ট আহনের সুমে। গুন টানন নাগে। নগ্গি বৈঠা তো আছেই।

রহিম্যাগো বাড়িঘর সুন্দর। রহিম্যাও। কথা কইলেই খালি ফিক ফিক কইরা হাসে। চোকের মটক না ফালিয়্যা খালি চোকমুকি তাকাইয়া থাকে।

লেখাপড়ায় ভালো। অঙ্ক এট্টু বুঝিয়া দিলেই ঘ্যাটাঘ্যাট কইরা ফালাইয়া পারে।

রহিম্যার আম্মাও সুন্দর, পিরিজে কইরা এডা ওডা নিয়া আহে।

বাড়িঘরের কতা জিগাশ করে। বাইত্তে ক্যারা ক্যারা আছে, কামলা জামলা কয়জন, খ্যাতখোলা ক্যারা সামলায়, কয়শ মুণ ধান পাই। এইসব আরকি।

রহিম্যা যখন মাতা ঝুঁকিয়া অঙ্ক কষে, তার খাছ ত্যালমাখা চুলগুলা চোকের সামনে আইসা পড়ে..তহন তারে দেকতে কী যে সোন্দর লাগে!

তার কতা শুইনা মনে হয়, তেহেলে কি আব্বা রহিম্যার নগে... বেশি কিছু ভাবা পারি ন্যা, আমোদে মনডা কবিতরের বাচ্চার ন্যায় বাক-বাক্কুম ডাকে।

রহিম্যা যখন মাতা ঝুঁকিয়া অঙ্ক কষে, তার খাছ ত্যালমাখা চুলগুলা চোকের সামনে আইসা পড়ে..তহন তারে দেকতে কী যে সোন্দর লাগে! মুনে হয় তার চুলগুইলা চোকের সামনে থিকা সরিয়্যা আবর মাতায় তুইলা দেই। আবর নামিয়্যা আইন্যা চোকের উপরে ছাইড়া দেই।

সার, কী দেহেন?

কই, কিছু না তো?

হ, আমি জানি, আপনে দেকেন।

কী?

আমারে।

হ কইছে!

কইছেই তো।

ঘুড়ার ডিম কইছে। হাড়াহাড়ি অঙ্ক করো।

কিন্তু রহিম্যা অঙ্ক করে না। মটক না ফালিয়্যা তাকিয়্যা থাকে। আমার দপবদ্দ হইয়্যা আসে। দপবদ্দ হইলে আমার কী যে ভালো লাগে।

রহিম্যা গো বাড়ির ভুগ ভুগ করা ঘাউয়ালা কুত্তাডারে কোলে নিয়া ঘুইরা বেড়াইতে ইচ্ছা করে তহন।

রহিম্যা মটক না ফালিয়াই কয়, ভেড়ার ডিমও কইছে।

কী, ভেড়ার ডিম অয় নাকি আবর?

তেহেলে ঘুড়ার ডিম অয় নিকি আবর?

আমার কী জানি হয়, হুঁশ-জ্ঞান হারায়। ফশ কইরা কলম ধরা হাতটা ধইরা ফালাই রহিম্যার। তার খাছ ত্যালা মাখা মাথাডা টাইন্যা ধইরা চুমা খাইতে যাই।

কী করেন... কী করেন...কইয়া রহিম্যা নিজেরে ছাড়াইয়া নেয়। আর কয়, আপনেরে আমি অন্য রকম ভাপছিল্যাম।

পক্কুতে চেন আটকানির মতোই একটা চুরা কষ্ট হয় মনে। তাই খুব সাবধানে চেন খুইলা পক্কুডা জাইঙ্গার ভিতরে রাখে একাব্বর।

তাহাদে ঘ্যাগের দালানের স্যামকে আহে। দেখে শরবেশ তারে দেইকা দাঁত বিজলিয়্যা হাসতেছে।

হাগতে দেহি দুই ঘণ্টা নাগাইলি..পানি খরচো করছত তো?

কনে পামু? ইটা দিয়্যা সারছি।

শরবেশ শব্দ কইরা হাসে আর কয়, ভালো করছত। এইবার নু যাই নঠিপাড়ায়।

একাব্বর, ক্যা ইসটেডিয়ামে যাবি না?

শরবেশ, থু তর ইসটিডিয়াম। বল খেলা দেইহা বাল হালাবা?

কুপ কুপ কুপ কুপ কুপ
চোলি কা পিছে কাহে
চোলি কা পিছে
চুনড়ি কা নিচে কাহা
চুনড়ি কা নিচে

নটীরা সার ধইরা খাড়িয়া থাকে, কেউ বইস্যা। কেউ বুনি বাইর কইর্যা, কেউ বুনি ঢাইক্যা। কাস্টোমার ধরার ধান্দায়।

একাব্বরের মাথা ধরে। ঘুরান্টি খাইয়া পইড়া যাইতে চায়। কিন্তু পড়ে না, তার বমি বমি লাগে। কিন্তু বমি করা পারে না। তার কাম শ্যাষ, সে শরবেশের নিগ্যা খাড়িয়া থাকে। কিন্তু শরবেশের বাইরানের নাম নাই।

পানের দুকানে ডেক সেট বাজে, চোলি কা পিছে কাহে.. চোলি কা পিছে। আঁচলের নিচে যৈবন। ফাঁক করে।পুক পুক পুক পুক পুক।

বাইত্তে ফির‌্যা কুঁইচা মুরগির ন্যায় ঝুম ধইরা যায় একাব্বর। কিচ্চু ভালো নাগে না তার। বুকটার মদ্যে একটা চিনচিন্যা ব্যাদ্না তারে অস্থির কইরা ফালায়। দুফুইরা গরমে খ্যাতা গাই দিয়া শুইয়া থাকে।

আম্মা আইসা ধাক্কায়, আব্বা গোটা দুই ভাত খান। জিওল মাছের শালুন রানছি, সাহেব আলু দিয়া।

খামু না কইয়া একাব্বর পইড়া থাহে। রহিম্যার কাছে ফির‌্যা যাইতে ইচ্ছা হয় তার।

একটা ছুটন্ত সাইকলে সে ছুইট্যা চলে। বংশাই নদী। গুদারা ঘাট। রহিম্যাগো বাড়ি।

মাথা নিচা কইরা অঙ্ক কষতাছে রহিম্যা। তার খাছ ত্যাল মাখা চুলগুলা ঝইরা পড়ছে গালের উপরে। চুলগুইলা সরাইয়া মাতায় তুইলা দেয় একাব্বর, আবর চোকের কাছে টাইন্যা আনে।

রহিম্যা খিলখিল কইরা হাসে আর অঙ্ক কষে।

থালিচাপা খাওনে পিঁফড়া ধরে। দুফুর গড়াইয়া বৈকাল হইয়া যায়।

হাইঞ্জায় আব্বা আইসা খ্যাতা সরাইয়া গাও হাইতায়। কফালে হাত রাখে।

আর কয়, বাবা একাব্বার, কী হইছে আফনের? শইল খারাপ লাগে?

হু কইয়া একাব্বর ফের খ্যাতা মুড়ি দিয়া ঘুইরা শোয়।

আম্মা কত খুসামুদ্দি করে, এট্টু ভাত খাইয়া শোও বাজান। আমি খিলিয়্যা দেই? কিন্তু একাব্বর খায় না।

কয়, আমি খাইয়্যা নিমু নি। আফনেরা যান।

সক্কালে রহিম্যার আব্বা আহে। একাব্বর দুরু দুরু বুকে কান খাড়া কইরা রয়। আব্বার নগে কী জানি গুজুর-গুজুর ফুসুর-ফুসুর করে।

রহিম্যার আব্বা চইলা গেলে আব্বা বাঘের নগাল চিক্কার দিয়া উঠে। এই জুনত্যে তরে পড়াইতাছি? নিজে না খাইয়া? যা চাইছস তাই দিছি। মাইনষ্যের সামনে এইভাবে বেইজ্জত করলি? মাথা হেঁট কইরা দিলি?

একাব্বর বুইঝা যায় সব ফাঁস হইয়া গেছে। খ্যাতা সরাইয়া ঘামে ভিজ্যা চুব্বুর একাব্বর এইবার শাস্তির নিগ্যা রেডি হয়।

একাব্বরের মাও...একাব্বরের মাও... আব্বা চিক্যার পাইড়া আম্মারে ডাকে।

আম্মা হাড়াহাড়ি বাইরইয়া আইলে কয়, আইজক্যা থিক্যা ওর ভাত বদ্দ। ভাতের বদলে ছাই দিব্যা।

শুইন্যা আম্মা কান্দে আর কয়, ক্যা...কী অইছে?

তুমার আফরুকের ধন পুলারে জিগাও। কইয়া আব্বা বাইত্তে থিক্যা হনহনিয়্যা বাইর হইয়া যায়।

একাব্বর কান পাইতা শুনে। তার বুকটা ব্যাদ্নায় টন টন কইরা উঠে। শাস্তির কতা ভাইবা না, আব্বার অফমানের কতা ভাইবা।

আম্মা আইস্যা গাও হাত পাউ হাইতায়, আর খুন খুন কইরা কান্দে। কিন্তু কিছু জিগাশ করে না। একাব্বর চোক বদ্দ কইরা শুইয়্যা থাকে। খোলে না, যতক্ষণ না আম্মা বিদ্যায় নেয়।

আম্মা চইলা গেলে একাব্বর উইঠা বসে। টেবিলে খাওন থালি চাপা আছে। থাল উল্টাইয়া দেখে সাহেব আলু দিয়া জিওল মাছের তরকারি, আর চামারা চাইলের ভাত। কিন্তু লবণের জাগায় লবণ নাই, আছে এক চিমটি ছাই।

মাতাডা ঘুরান্টি দেয় একাব্বরের। ওয়াক ওয়াক কইরা বমি করে। প্যাটে মাল না থাকায় খালি হইলদ্যা চুকা পানি বাইরইয়া আসে।

নটিরা হাসে আর কয়, যা খাইয়া অজম করা পারবি ন্যা, তা খাস ক্যা?

পুক পুক পুক পুক
চোলি কা পিছে কাহে
চোলি কা পিছে
চুনড়ি কা নিচে কাহে
চুনড়ি কা নিচে
পুক পুক পুক পুক পুক

দরোজা খুইলা জিলকাইতে জিলকাইতে বাইর হয় শরবেশ। একাব্বরের কাছে আইসা কানে কানে কয়, চুদছিও রে।

আরো কয়, দুস্ত আমারে এহন একটা ঠান্ডা খিলাও। নইলে মইরা যামু গা। গতরে এক ফুঁটা হক্তিও নাই। সপ কাইড়া নিছে। মাগী ছাড়বার চায় না। কয়, আমার কাছে থাক। সারা জীবন খিলামু নি।

কইয়া ফিক ফিক কইরা হাসে শরবেশে।

আর তহনই একাব্বর ফির্যা ওয়াক ওয়াক কইরা উঠে। আবরও কিছু চুক্যা হইলদ্যা পানি বাইরয়।

শরবেশ একাব্বররে জাবরাইয়া ধরে। মাথায় হাত দিয়্যা বমি থামায়। তাহাদে হাড়াহাড়ি দুইডা ঠান্ডা কিন্যা আইন্যা একটা একাব্বররে দেয় আরেকটা নিজে খায়।

ঠান্ডা খাইয়া একাব্বরের এট্টু ভালো লাগে। আধবয়সী নটীর কতা মনে হয় তার। যার বুকের উপরে শুইছিল একাব্বর। ওইৎ ছ্যাড়াকান্দোস ক্যা তুই? ঠিকমতো চুদই। নাকি চুদা পারোস না? এইবারই পত্থম? কইয়া নটী একাব্বররে বুক থিকা নামাইয়া দেয়।

পানের দুকানে গান বাজে।

ক্যায়সা বানি ক্যায়সা বানি
ক্যায়সা বানি হো রামা ক্যায়সা বানি
লরে বিনা চাটিনী ক্যায়সা বানি

সেবেনাপের ঠান্ডা খাইয়া নটীপাড়া ছাড়ে শরবেশ আর একাব্বর।

মদের ঘরের মোড় তুমা আইয়া পারে নাই, ক্যারা যানি শরবেশরে চুফা জাইত্যা ঘুষা মারে.. একাব্বর খায় থুতনায়। আরেকজন পিছ থিক্যা জাবড়িয়্যা ধরে।

চান্দের আলোয় ড্যাগার ঝলমল কইরা ওঠে। অন্ধকারে কে জানি চিক্যার দিয়া উঠে, নঠির পুলারা.. নগ দিয়্যা ছঠির গুন্দ যায় নাই, আইছত নঠিপাড়ায়। ট্যাহা ফালা। নইলে পাড় দিয়্যা ভুঁড়ি ফাইড়্যা ফালামু।

ভাই ভাই ভাই..আমগো ছাইড়া দেন। ট্যাহা যা আছে দিতাছি কইয়া কুছ থিক্যা ট্যাহা বাইর করে শরবেশ।

তারপরেও শরবেশের পকোটে আত দিয়া আরও ট্যাহা পায় হ্যারা। ফলে আরো খানকতক কিল-ঘুষি জোটে। চুদানির পুলা আমগো নগে চালাকি চুদাস? যেন্ দিয়া আইছত হেন্ দিয়্যা ভইরা দিমু কইলাম।

একাব্বর হিম হইয়া যায়। তারে কিছু বলার আগেই সে দুই পকট কাইচা-কুইচা ট্যাকা বাইর কইরা দেয়।

শরবেশ ভোঁস ভোঁস কইরা ঘুমায়। ঘ্যাগের দালানের বারিন্দায়। ম্যালাক্ষণ শুইয়া থাকার পরও ঘুমাইতে পারে না একাব্বর।

শরবেশরে দেইখা তার হিংসা হয়। মশা কামড়িয়া পুটকি ফুলিয়া দিতাছে, অথচ তার ঘুম কাইড়া নিতে পারতাছে না।

শরবেশের হনু ফুইল্যা টব্বা ধইরা গেছে। একাব্বরের নিজের থুতনাও জ্বলতাছে। আয়না না দেকলে বুঝা যাইব না কতখানি কাটছে।

তারপরও একাব্বর থুতনা হাইতিয়া কতখানি কাটছে বুঝার চেষ্টা করে। আর তহনই ফির্যা আসে রহিম্যা। তার মটক না ফালানি চোক, চোকের উপরে ঝুইলা থাকা খাছ ত্যাল মাখা চুল। রহিম্যার শইল্যে মিষ্টি একটা বাস্না। চুনু পাউডারের কি?

ওই ছ্যাড়া ওই খেলাবি?

একাব্বর ছিইট্টা ওঠে। তাকাইয়া দেখে রাক্কসী। তার বড় বড় দাঁত ঠোঁট সরাইয়া সামনে তাকাইয়া থাকে। দুই দাঁতের মদ্যে ম্যালা বড় ফাঁসা। মুকে পাটা কলইয়ের নগাল বসন্তের দাগ। চান্দের আলোতে রাক্কসীরে দেখলে যে কেউ ডরাইব।

একাব্বরও ডরায়। কিন্তু বৈকালের ঘটনা মনে পড়ায় হে একটু কম ডরায়। রাক্কসীর অবশ্য এইসব ডর ভয় নাই। হে ম্যালা আগেই জীবন থিক্যা ডর-ভয়ের গাইল মাইরা নুইছে।

কয়, তর কাছে দশ ট্যাকা আছে না? মিছা কতা কস ক্যা?

একাব্বর এহনতরি কুনো কতাই কয় নাই, মিছা কতা কওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। তয় তার কাছে ট্যাকা আছে। বৃত্তির জমাইন্যা ট্যাকা। জাইঙ্গার তলে রাকছিল। ছিনতাইকারীরা নিয়া পারে নাই। উফুর পকটে যা আছিল, তাই নিছে খালি।


শরবেশরে নিয়্যা বোডিংয়ে ছিট নিয়্যা পারতো একাব্বর, পারতো রাইতে প্যাট ভইরা ভাত খাইতেও। কিন্তু ছিট নেয় নাই, খায়ও নাই কিচ্চু। নিজেরে শাস্তি দিতে, শরবেশরেও।

কিন্তু শরবেশের কুনো শাস্তি হয় নাই, শালায় নাক ডাকিয়া ঘুমাইতাছে। শরবেশের নিগ্যা তার ময়া হয়, অনেক ময়া।

বাইত্তে থিক্যা এক কাফড়ে বাইরইয়া আহার পর শরবেশই তারে জাগা দিছে, খাওয়াইছে। সব শুইন্যা কইছে, তুই দেহি ভুক্মা। এইগল্যা কুনো ঘটনাই না। থাফা দিয়্যা ধইরা হালাইতে পারলে অন্য রহম কেস হইত। রহিম্যা তরে দৈনিকি ভালোবাসা খিলাইত। তুই ছেরি মাইনষ্যেরে চিনস না।

আরো কয়, নু নঠিপাড়া থিক্যা ঘুইরা আহিগা..ছেরি মানুষ কী জিনিস, তার ইট্টু অইলেও বুজা হারবি।

রাক্কসী জব না পাইয়া মরিয়্যা, কীরে ছ্যারা...কতা কস না ক্যা? খেলাবি না?

রাক্কসীর আইজ কামাই রুজি হয় নাই। পিয়াসী হইটালের সুকুমার এক শট মাইরা পাঁচ ট্যাহা দিয়া গেছে। হ্যারপর জব্বরের আহার কতা আছিল, কিছুক্ষণ হইটালের। আহে নাই।

সুকুমারের কাছে কইয়া পাটাইছে, হে বাইত্তে গেছে। বাইত্তে কী জানি কাম পড়ছে। ফলে কামাই অই পাঁচ ট্যাহাই, গিটে বাইন্দা রাকছে।

দুইডা পাউরুঠি আর একটা কলা। নাইলে একটা পরোটা আর এক বাঠি ডাইল। হারা দিনের খুরাকি।

কী রে ছ্যারা..খ্যালাবি না? যা তর নিগ্যা পাঁচ ট্যাকা।

একাব্বরের জানি কী হয়। তার ছেরি মানুষ চিনতে ইচ্ছা করে। সে ধীরে ধীরে উইঠা খাড়য়।

রাক্কসী হাসে। তার বড় বড় দাঁতগুলা হাসে। একাব্বরের হাত ধইরা তারে ঘ্যাগের দালানের পিছে নিয়া যায়।

ঝোপের ভিতর পাইতা রাখা একটা ছিড়্যাভিড়্যা চাটাইয়ের উপরে রাক্কসী চিৎ হইয়া শোয়। আর একাব্বররে হাত ধইরা বুকের উপরে টানে।

চান্দের আলোতে রাক্কসীরে কিব্যা জানি রহিম্যার নগাল নাগে।

একাব্বর তারে জাবড়িয়্যা ধইরা চুম্যা খাইতে যায়। কিন্তু রহিম্যা টাইন্যা মাতা সরিয়া নেয় না। চুপচাপ শুইয়া থাকে। একাব্বর এই সুযুগে সুমানে চুম্যা খাইতে থাকে আর গুঙ্গিয়া কান্দে।

রাক্কসী কান্দে না। একাব্বরের গুঙ্গানির ফাঁক দিয়া আকাশের চান দেহে। চান্দের আলোতে তার মরা পুলাডা খিলখিল কইরা হাসে।

রাক্কসী তার মরা পুলার ত্যাল-কাইষ্টা চুলে ইলিবিলি কাইটা দেয়, দশ আঙ্গুল দিয়্যা।

অনতিদূরে বিকালে হাইগা রাখা একাব্বরের দুই ঠেকি গু, গু-গু বাস্না ছাড়ে।


বিশেষ দ্রষ্টব্য: লেখকের নিজস্ব বানানরীতি অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে

এ সম্পর্কিত আরও খবর