একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম রচিত ‘আত্মকথা’ গ্রন্থের প্রকাশনা হয়েছে।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বই প্রকাশনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিথি ইঞ্জিঃ মোশারফ হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমি ও বদিউল আলম সহযোদ্ধা হিসেবে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। চট্টগ্রামে সুইসাইড মিশনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা আসকারদিঘীর পাড়ে একটি বাড়িতে ঘাঁটি করি। কিন্তু অপারেশনের পূর্বে আমার প্রস্তুতি মিটিংয়ের সময় হঠাৎ করে পাক বাহিনী পুরো বাড়ি ঘেরাও করে ফেলে এবং অবিরামভাবে গুলি ছুড়তে থাকে।
এমতাবস্থায়, সেখানে উপস্থিত সহযোদ্ধারা সকলে দ্রুত সরে পড়লেও আমি ও বদিউল আলম দোতলায় আটকা পড়ি। আমি তাকে দ্রুত সরে যেতে বললেও সে প্রত্যাখ্যান করে বলে আপনাকে ছাড়া কোথাও যাব না। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ভেন্টিলেটরের ফাঁক দিয়ে দোতলা থেকে পার্শ্ববর্তী বড় নালায় ঝাঁপ দিই। এতে আমার পা ভীষণভাবে আহত হয় এবং স্থানীয় পরিচ্ছন্নতা-কর্মীদের সহায়তায় সেদিন আল্লাহপাক আমাদের দুজনকে নতুন জীবন দান করেন। এ কথাগুলো ইতিহাস, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ইহা দলিল হয়ে থাকবে।
এ সময় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস ও এর সামনের জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর ও স্মৃতিপার্ক করার জন্য আহ্বানও জানান তিনি।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ একুশে পদক প্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক তার বক্তব্যে বলেন, বদিউল আলম রচিত এ বই আমি পড়েছি। তিনি খুবই সাবলীলভাবে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেছেন, কিন্তু একটি বিষয় আমাকে আন্দোলিত করেছে তা হলো মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যকারী সাতকোটি মুক্তিপাগল গণমানুষের সর্বোচ্চ সহায়তার কথা তিনি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম বলেন, চট্টল বীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর একনিষ্ঠ সহকর্মী এই মুক্তিযোদ্ধা যেভাবে রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন এবং জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজ এলাকায় স্কুল কলেজ মাদরাসাসহ বিভিন্ন ধরনের সেবামূলক কাজ করেছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিএনসি জাহাঙ্গীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল আলম নেভাল কমান্ডো, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ ইউনুস, নগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চু এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী প্রমুখ।