পরিব্রাজক
রাত্রির মধ্য দিয়ে উদ্দেশ্যময় চলনে
এক পথিক হেঁটে যায়—
ঘূর্ণিত উপত্যকা আর মহাপর্বতের ভিতর দিয়ে
সবকিছু পেরিয়ে।
মোহনীয় এই রাত—
সে হেঁটে যায় বিরতিহীন,
জানে না এই পথ তাকে কোথায় নিয়ে যাবে।
সহসাই রাত্রি ভেদ করে এক পাখি গান গেয়ে ওঠে।
“হে পাখি, কী করছো তুমি!
কেন তুমি আমার মনে আর পায়ে জেঁকে বসেছো?
আর ঢেলে দিচ্ছো হৃদয়ের মিষ্টি যন্ত্রণা আমার কানে?
যেন আমি থমকে যাই আর শুনতে থাকি!—
কেন এই স্বাগত-সঙ্গীতে আমাকে প্রলুব্ধ করছো তুমি?”
পাখিটি নীরব হয়ে যায় আর বলে,
“না পথিক। এই সুরে আমি তোমাকে প্রলুব্ধ করছি না।
আমি তো পাহাড় থেকে এক সঙ্গিনীকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি মাত্র।
একা-একা এই রাত আমার ভালোলাগে না।
কিন্তু তাতে তোমার কী আসে যায়?
তোমার উচিত নিরন্তর হেঁটে যাওয়া।
এখনো কেন দাঁড়িয়ে আছো?
আমার সুর কী এমন করেছে তোমার, পথিক?”
পাখিটি নীরব হয়ে যায় আর ভাবে,
“আমার গানের সুর কী করেছে তাকে?
কেন সে এখনো দাঁড়িয়ে আছে?
আহা, বেচারা পথিক!”
যার একদিন অনেককিছু বলবার আছে
যার একদিন অনেককিছু বলবার আছে
সে প্রায় সমস্তটাই নিজের কাছে রেখে দেয় নীরবে।
যার একদিন জ্বালাবার কথা বজ্রের আলো
নিশ্চয়ই সে বহুদিন মেঘ হয়ে থাকে।