ডিটেকটিভ ও পলেটিক্যাল আমেজ আছে ডেসপারেট মারিয়ায়

সাক্ষাৎকার, শিল্প-সাহিত্য

মিলু হাসান, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-31 07:39:15

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০-এ প্রিন্ট পোয়েট্রি থেকে প্রকাশিত হয়েছে মারিয়া রিমার প্রথম উপন্যাস ‘ডেসপারেট মারিয়া’। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী শতাব্দী জাহিদ। মেলায় বইটির পরিবেশক জনান্তিক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে তাদের স্টল নং ৬০৫-৬০৬।

এর আগে ২০১৭ সালে ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘মেয়েরা, আসো ডান্স করি’। বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ঐতিহ্য প্রকাশনীর ১৪ নাম্বার প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাবে এ বইটিও।

বার্তা২৪-এর পক্ষ থেকে কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট মিলু হাসান—নতুন প্রকাশিত উপন্যাস ও লেখালেখি নিয়ে কবি ও ঔপন্যাসিক মারিয়া রিমার সাথে কথা বলেছেন।


বার্তা২৪: আমরা তো জানতাম আপনি কবি। হঠাৎ উপন্যাসের দিকে ঝুঁকলেন কেন?
মারিয়া রিমা: কবি হওয়ার এই সুবিধাটা আছে। কবি চাইলে সাহিত্যের অন্য শাখাগুলোতেও সহজেই বিচরণ করতে পারে। আমার মনে হলো উপন্যাস লেখা আমার জন্য সহজ হবে তাই শুরু করলাম।

বার্তা২৪: আপনার উপন্যাসের নাম ‘ডেসপারেট মারিয়া’। আপনার নাম মারিয়া রিমা। এটা কি কোনো আত্নজৈবনিক উপন্যাস কিংবা সেমি অটোবায়োগ্রাফিক্যাল নভেল?
মারিয়া রিমা: দেখেন, আমার লেখা আমার যাপনকে ধারণ করে। সে কবিতাতেও। আমার উপন্যাস আমি ফার্স্ট পার্সনে লিখেছি, নিজের নাম ব্যবহার করেছি। এবং আমার গণ্ডির মধ্যে কিছু ক্যারেক্টারকেও আমি এনেছি। ব্যাপারটার জন্য আমার বর্ণণা মোর ন্যাচরাল হয়েছে। আমি এভাবেই বলতে চাই।

বার্তা২৪: নিজের যাপন সরাসরি লেখায় আনতে গিয়ে কি কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন? যাপনের এমন কোনো অপ্রিয় সত্য যা লিখতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন বা ওগুলো স্কিপ করছেন?
মারিয়া রিমা: যেটুকু মনে করেছি লিখব সেটুকু লিখেছি। গল্প যেদিকে গেছে সেভাবেই যা প্রয়োজন তুলে ধরা হয়েছে। আত্মজীবনী বলছি না যেহেতু তাই নিজেকে মহান বানানোর ব্যাপারটা আসেনি। এখানে কিছু ঘটনার ইনভল্ভমেন্ট আছে শুধু। নিজের ভালো রূপ মন্দ রূপ যাচাই করতে যাইনি।

বার্তা২৪: বইমেলায় তো ভুরি ভুরি উপন্যাস বের হয়। আপনার উপন্যাসে আপনি নতুন কী যোগ করতে চেয়েছেন যা আনফোকাস ছিল আমাদের উপন্যাসে? পাঠকের কী কী কারণে আপনার উপন্যাসটা পড়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?
মারিয়া রিমা: সাধারণত উপন্যাসে প্রধান ক্যারেক্টার পুরুষ হয়। এভাবে এত এত উপন্যাস এমনকি সিনেমা আমরা দেখি। ডেসপারেট মারিয়া ফিমেইল ক্যারেক্টার প্রধান। এটা এই উপন্যাসের একটা বিশেষত্ব। স্বকীয়তা আমার প্রেজেন্টেশানে, বর্ণণায় খুঁজে পাবে। ডিটেকটিভ আমেজ আছে এই উপন্যাসে। যা আমি নিজে খুব পছন্দ করি। সর্বোপরি আমি সময়টা দারুণভাবে ধরে রাখতে পেরেছি উপন্যাসে। সময়সাময়িক কিছু পলিটিক্যাল ঘটনা এই উপন্যাসে ধরে রেখেছি যেটা ইম্পর্টেন্ট মনে করি।

বার্তা২৪: লেখকবান্ধব প্রকাশনা বা বইবাজার আমাদের এখানে গড়ে ওঠেনি। কী কারণে গড়ে ওঠেনি বলে আপনি মনে করেন?
মারিয়া রিমা: প্রকাশনার স্মার্টনেসের অভাব, প্রফেশনালিজমের অভাব বা দায়িত্ববোধের অভাব। আর লেখক কারা বা সম্ভাবনাময় লেখককে তুলে আনা এগুলো তারা জানে না। হীনম্মন্যতাও কাজ করে দেখি প্রকাশকদের মধ্যে। দাদাগিরি ফলাতে চায়। আবার লেখক প্রকাশকের আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের ব্যাপারও থাকতে হয়। আসলে প্রকাশনার ব্যাপারগুলো সব মিলিয়ে বাজে অবস্থায় আছে।

বার্তা২৪: শুধু কি প্রকাশকের দোষ? নাকি আমাদের টোটাল স্টিস্টেম বা কালচারাল ডেভেলপও হয় নাই?
মারিয়া রিমা: হ্যাঁ, কালচারে পিছিয়ে আছি। আরো পেছাচ্ছি কারণ বইয়ের বাজার যা-তা হয়ে গেছে স্যোশাল মিডিয়ার মিসইউজের জন্য। পাঠকরা সত্যিকারের লেখক খুঁজে পাচ্ছেন না।

বার্তা২৪: একটা লেখা কিভাবে আপনার মাথায় দান বাঁধে? এ উপন্যাসটা লিখতে কিভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন? কতদিন লাগল?
মারিয়া রিমা: একটা প্লট মাথায় ঘুরতে থাকে। তখন লিখতে শুরু করি। অল্প অল্প করে লিখি। প্রথমে আমি একদিন ফেসবুকে পোস্ট দিলাম। অনেক সিনিয়র কবিরা সেখানে লাইক দিলেন যেমন ব্রাত্য রাইসু, জহির হাসান। আমি বুঝে গেছি এইবার আগাইতে পারি। ২০১৭ সালে এভাবে শুরু করি।

বার্তা২৪: আচ্ছা। আজকে এ পর্যন্ত। আপনাকে ধন্যবাদ।
মারিয়া রিমা: জ্বি আপনাকেও। ধন্যবাদ বার্তা২৪!

এ সম্পর্কিত আরও খবর