নৈশ ডাকঘর
নৈশ ডাকঘরে পড়ে আছে
তোমার বাদামি খাম
লিখে জানিয়েছো,
কিভাবে হাত না পুড়ে
ব্যতি চালের মাড় গালতে হয়
খোসাসমেত রান্না চড়াতে হয়
ঠিকঠাক ভিটামিন রক্ষায়
কিভাবে চিৎকার গিলে ফেলে
সবচেয়ে সুন্দর হাসির ছবি দিতে পারছো না
পাছে লোকে হিংসায় জ্বলে পুড়ে ভাবে,
তুমি দারুণ সুখে আছো!
সংসার করতে কত ছল চাতুরি
তোমার করতে হয় জানতে ইচ্ছে করে
রাত এলে পরে তুমি ঢেকে যাচ্ছো
শরীরের ভিতর।
মন—
তাকে কবে কে
কখন শেষ স্পর্শ করেছে বা
আদৌ করেছে কিনা
মনে পড়ে না!
স্বস্তি
বেঁচে থাকার ঘ্রাণের সাথে মিশে আছে
সবুজ ঘাসের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা
খরগোশের ফল খুঁটে খাওয়ার শব্দ
আর মানুষ তো চিরকাল একইরকম
দাঁত আর নখ প্রতিদিন ধার দিতে না ভুলে
পড়ে আছে শুধুই নিজেদের নিয়ে
মনের গোপনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে
প্রতিদিনকার মৃত্যুকে এড়িয়ে
নতুন চাহনি আর হাসি দিয়ে
উৎসর্গ করে চলেছি পরম আত্মা
আর হৃদয়—যার কোনো মানে নেই
বেঁচে থাকার ঘ্রাণের সাথে মিশে আছে
পরস্পরকে আহত করে ফেলার স্বস্তি
আবুল হাসানের প্রেমিকা
সুরাইয়া—
দিঘল মায়াবী চোখ, পুরু ঠোঁট
নিথর মুখ নিয়ে তুমি
বসেছিলে তাঁর শীর্ণ হাত ধরে।
সাদা বিছানা, অক্সিজেন নল,
স্যালাইনের পাইপ খুলে ফেলছিল
যখন নার্স কী ভাবছিলে
তুমি সেই মুহূর্তে?
সুরাইয়া—
তোমাকে প্রথম দেখি সাদাকালো
দিঘল চোখ মেলে, স্মিত হাসি
পুরু ঠোঁটে মেখে নতমুখে চেয়ে আছো
পুরনো পত্রিকার সাহিত্য পাতায়
তোমারই এক সহকর্মীর স্মৃতিচারণায়
তখনও চৌদ্দের উন্নাসিকতা
স্কুলের কালো ব্যাগ পিঠ,
বুকে নজর লাগার ভয়ে
ওড়নায় বিঁধেনি সেফটিপিন
বালিকার গোপন চাওয়া নিয়ে
তখনো হাসান আসেনি সামনে
জানা হয়নি—
যা কিছু সুন্দর,
তাই যেন কুৎসিত!
সুরাইয়া—
কবিকে জানার আগেই
কবিতার কাছে একা হবার আগেই
আমি ভালোবেসে ফেলেছিলাম
কবির প্রেমিকাকে!
কামড়
তোমার কানের লতিতে ইন্দ্রাণীর দাঁতের দাগ লেগেছিল। ইন্দ্রাণীর বাচ্চার নাচের ভিডিওতে হাততালি দেয়ার সময় ঝকঝকে দাঁত বের করে ও হেসে উঠতেই আমার আড়চোখ তোমার কানের লতিতে অদৃশ্য সেই দাঁতের কুটকুট দেখতে পাচ্ছিল।