জাবির লেকে অবমুক্ত হলো ৮টি সুন্দি কচ্ছপ

, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2023-09-01 16:29:07

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) লেকে আটটি সুন্দি কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সাভারের স্থানীয় বাজার থেকে কচ্ছপগুলো উদ্ধার করে। পরে বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাবির লেকে কচ্ছপগুলো অবমুক্ত করা হয়।

এর আগে সাভারের নামা বাজার এলাকায় কচ্ছপ বিক্রির অভিযোগ পায় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। পরবর্তীতে সেখান থেকে কচ্ছপগুলো উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়। এছাড়া কচ্ছপ বিক্রিকালে দুই ব্যবসায়ীকে আটক করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা।

স্থানীয় বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খাওয়ার চাহিদা থাকায় কচ্ছপ শিকার ও বিক্রিতে মাছ বিক্রেতাদের বেশে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত। যারা নিয়মিত বাজারে এসব কচ্ছপ সরবরাহ করে থাকে। অসাধু ব্যবসায়ীরা কচ্ছপের মাংস ছাড়াও খোল চর্বি আলাদা করেন।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী, সুন্ধি কচ্ছপ বা চিতি কচ্ছপের ইংরেজি নাম Indian flapshell turtle। বৈজ্ঞানিক নাম Lissemys punctate, যা কচ্ছপের একটি প্রজাতি। এটি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা,মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী কচ্ছপের এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

এছাড়া কোনো বন্যপ্রাণী, বন্যপ্রাণীর কোনো অংশ, মাংস, ক্রয়-বিক্রয় বা আমদানি-রফতানি অথবা পরিবহন করলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

কচ্ছপ উদ্ধারের ব্যাপারে ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সুন্ধি কচ্ছপ দেশের সব জলাশয়ে আগে অনেক দেখা গেলেও এখন এর সংখ্যা কম। বর্তমানে আবাসস্থল ধ্বংস, অবৈধ শিকার ও জলাশয় দূষণের কারণে বিপন্ন হয়ে পড়ছে এই কচ্ছপ। বিপন্ন প্রায় কচ্ছপ ধরা, পরিবহন করা এবং হত্যা করা কিংবা খাওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা চাই মানুষ সচেতন হোক এবং বিপন্নপ্রায় এসব প্রাণী রক্ষায় এগিয়ে আসুক।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি সাভারের নামা বাজারে স্থানীয় লোকজন সুন্ধি কচ্ছপ কেটে বিক্রি করছে। আমরা এসে তাদেরকে আটক করি এবং তাদের কাছে থাকা জীবিত কচ্ছপ উদ্ধার করি। আমরা আইন প্রয়োগ করার মধ্যে না বরং মানুষকে সচেতন করার মধ্যে দিয়ে বিপন্ন এসব প্রাণীকে রক্ষা করতে চাই। আমরা চাই সবাই এগিয়ে আসুক এবং এসব প্রাণী রক্ষা করুক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর