আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস ও বিড়ম্বনা

বিবিধ, যুক্তিতর্ক

মীর মোস্তফা কামাল | 2023-09-01 19:06:36

একেবারেই সাম্প্রতিক সময়ের একটি ঘটনায় কিছুটা বিস্মিত ও অনেকটা ক্ষুব্ধ হয়েই ঘটনাটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া। আমার স্ত্রী এবং দুই ছেলে তাদের পাসপোর্ট করানোর জন্য আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছিল। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমার স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র (ন্যাশনাল আইডি কার্ড) থাকলেও ছেলে দু’জনের বয়সজনিত কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাই পাসপোর্ট করানোর জন্য জন্মনিবন্ধন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলো।

পাসপোর্ট অফিসের লম্বা লাইনে দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর পাসপোর্ট অফিসের প্রবেশ মুখে যাওয়ার পর অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটে। সেখানে কর্তব্যরত ব্যক্তি প্রথমে বড় ছেলের আবেদনপত্রে সিল দিয়ে দেন এবং পরবর্তীতে পুনরায় ডেকে এনে সিল কেটে দেন। কারণ জানতে চাইলে জানান যে, আবেদনপত্রে স্থায়ী ঠিকানা যেহেতু কুষ্টিয়া লেখা আছে, তাই পাসপোর্ট সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিস থেকে করাতে হবে।

একই ঘটনা ঘটে ছোট ছেলের ক্ষেত্রেও, তবে তার বেলায় কর্তব্যরত ব্যক্তি কোন সিল প্রদান করেননি। শুধু ফর্ম দেখেই একই কথা বলেছেন। ফলে তাদেরকে সেদিন আবেদনপত্র জমা না দিয়েই ফিরে আসতে হয়েছে। অথচ একইদিনে আমার স্ত্রী পাসপোর্টের জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন এমন কোনো সমস্যা ছাড়াই। কিন্তু তার স্থায়ী ঠিকানাও একই স্থান অর্থাৎ কুষ্টিয়াতেই।

আমার জানা মতে, স্থায়ী ঠিকানার সঙ্গে পাসপোর্টের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ স্থায়ী ঠিকানার প্রসঙ্গ টেনে এনে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়নি। উপরন্তু স্থায়ী ঠিকানা কুষ্টিয়াতে হওয়ায় সাতক্ষীরা গিয়ে আবেদনপত্র জমে দিতে বলা হয়। যদি এমন কোনো নিয়ম থাকেই যে স্থায়ী ঠিকানা থেকে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে, তবে সাতক্ষীরা কেন? এখানে সাতক্ষীরা কোথা থেকে এলো?

পাসপোর্টের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার মতো সাধারণ একটি বিষয়েও এমন ধরনের কোনও পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি খুবই হতাশাজনক। একদিকে ই-পাসপোর্ট নিয়ে তোড়জোড় চলছে, অন্যদিকে পাসপোর্টের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার মতো সামান্য বিষয় নিয়েও হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে পাসপোর্ট প্রার্থীদের। সাধারণ জনগণ যেখানে অনেকটাই নিরুপায়। এমন বিরূপ পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তেই প্রশ্ন জাগায়, এর সমাধান কোথায়?

মীর মোস্তফা কামাল

ডিরেক্টর,রিভার ইঞ্জিনিয়ার ডিভিশন, ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর