এফডিআর গায়েবের ঘটনায় এবি ব্যাংক টঙ্গী শাখার ম্যানেজার ক্লোজড

ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 09:22:37

গ্রাহকের ২০ লাখ টাকার এফডিআর গায়েবের ঘটনায় এবি ব্যাংক টঙ্গী শাখার ম্যানেজার মাহমুদ হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জহির উদ্দিনকে।

টঙ্গী শাখার ম্যানেজারকে প্রধান কার্যালয়ে ক্লোজড করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন এবি ব্যাংকের এইচআর বিভাগের হেড সাব্বির আহমেদ।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কি কারণে তাকে শাখা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে আমার জানা নেই। তবে কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে, সাধারণত এভাবে প্রত্যাহার করা হয়। যাতে তদন্তকাজে কোন রকম প্রভাব ফেলতে না পারে।

শাখাটি থেকে এফডিআর গায়েবের ঘটনায় মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) রিপোর্ট প্রকাশ করে বার্তা২৪.কম। ওই রিপোর্টের পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। ইব্রাহিমপুরের বাসিন্দা কাজী কাকলী কালামের ২০ লাখ টাকার এফডিআর গায়েবের ঘটনা ঘটে গতমাসে। এবি ব্যাংকে (আরব বাংলাদেশ ব্যাংক) টঙ্গী শাখায় এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট) করেছিলেন। আগস্টে টাকা তুলতে গিয়ে যা জানতে পেলেন তাতে তার চোখ কপালে ওঠার অবস্থা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার পুরো ২০ লাখ টাকা হাপিস করে দিয়েছে। প্রথম প্রথম পাত্তাই দিতে চাচ্ছিলেন না শাখা ম্যানেজার। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গ্রাহককে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। গ্রাহকের আস্থা অর্জনের জন্য এক সপ্তাহ পরের তারিখ দিয়ে একটি চেক দিয়ে রাখেন। সেই চেকের টাকা তুলতে গেলে বাউন্স করেছে।

গ্রাহক কাকলী কালামের স্বামী আবুল কালাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, শাখা ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে প্রথমে পাত্তাই দিতে চাচ্ছিলেন না। পরে যখন বিভিন্ন জায়গায় থেকে ফোন করাই তখন বাধ্য হয়ে টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন। টাকা দেওয়ার জন্য ম্যানেজার তার ব্যাক্তিগত একাউন্টের একটি চেক দেন। ৫দিন পরে টাকা উত্তোলন করার অনুরোধ করেন। যথারীতি টাকা তুলতে গেলে এবি ব্যাংকের সেই চেকটি বাউন্স করে। এরপর ২৮ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংকের একটি শাখায় জমা দিলেও চেকটি বাউন্স করেছে। এরপর ম্যানেজারের কাছে টাকার জন্য চাপ দিলে ১২ অক্টোবর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তারপর থেকেই টালবাহানা করে যাচ্ছেন। টাকা পাওয়া নিয়ে ভীষণ শঙ্কার মধ্যে রয়েছি।

তিনি বলেন, এ রকম একটি ব্যাংক যদি গ্রাহকের টাকা হাওয়া করে দেয় তাহলে যাবো কোথায়। ব্যাংককে যদি বিশ্বাস করতে না পারি তাহলে বিশ্বাস করবো কাকে। মানুষের ইমোশনের বিষয়টি ব্যবহার করার জন্য নামের আগে সুন্দরকরে আরব শব্দে জুড়ে নিয়েছেন। কোন ব্যাংক এমন জালিয়াতি করতে পারে আমার বিশ্বাসই হতে চাচ্ছে না। আমার এফডিআর ভাঙ্গা হলো, আমার স্বাক্ষর ছাড়াই, এটা ব্যাংক না অন্য কিছু।

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এবি ব্যাংকের টপ ম্যানেজমেন্ট এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাদের পরামর্শেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কাকলী কালাম ব্যাংকে গেছেন এজন্য জানতে পেরেছেন, আরও অনেক ঘটনা রয়েছে ভেতরে। মালিক পক্ষের যোগসাজশেই অনেকের টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। নিজের দিকের স্টাফরা হুকুমের গোলাম মাত্র।

এ সম্পর্কিত আরও খবর