তিতাস গ্যাসে এখন আর কোন চিহ্নিত অবৈধ সংযোগ নেই। একটি অবৈধ সংযোগ থাকা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ মোল্লাহ।
সোমবার (৯ জুলাই) কোম্পানির নিজস্ব হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও বকেয়া আদায়ের বিষয়ে জানাতে সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করা হয়।
তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, অবৈধ সংযোগের বিষয়ে আমরা অনেক অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা জনসংযোগ করেছি, বলেছি চুরি ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তাদের বলেছি লাইন কেটে দেওয়ার পর আবার লাইন বসলে সেই অঞ্চলের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এতে আমরা অনেক ভালো ফল পেয়েছি।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের অক্টোবর গত জুন পর্যন্ত ৩৩০ টি মোবাইল কোটসহ ২৮ হাজার ৩৯৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব অভিযানে ৬৬৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার অবৈধ লাইন, অবৈধ সংযোগ ও বকেয়ার কারণে ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮৪টি চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ মোট ৬ লাখ ৩ হাজার ৯৭৫ টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অবৈধ ব্যবহারের কারণে ২৫০টি শিল্প, ৩২৯,টি বাণিজ্যিক, ৫৫ ক্যাপটিভ, ১০টি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এসব অভিযানের মাধ্যমে ৩২১ কোটি ৮১ লাখ টাকা অতিরিক্ত বিল এবং ৯১ কোটি ২৫ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়েছে। এরমধ্যে অতিরিক্ত বিল বাবদ ১৪৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৩৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা আদায় হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ২৩৮৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা বকেয়া ছিল ১৫২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। এখন বকেয়ার পরিমাণ কমে ১৬৫৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। বেসরকারি খাতে ৩১ হাজার ১৫৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বকেয়া ছিল এখন ৫ হাজার ৪৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা রয়েছে। সব মিলিয়ে এখন গড় বকেয়ার পরিমাণ ২.৩১ মাসে নেমে এসেছে। অতীতে এই বকেয়ার পরিমাণ অনেক বেশি ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, অভিযানে বাধা দেয় জনগণ, কোন এমপি মন্ত্রী আমাদের অসহযোগিতা করেনি। জনগণ প্রথমবার বিরোধিতা করে, দ্বিতীয়বার যখন গেছি আর সমস্যা হয় নি।
জনশ্রুতি রয়েছে তিতাসের লোকজন এসব অবৈধ সংযোগ বাণিজ্যে জড়িত। এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিতাসের কোন লোকজন ধরে এনেছেন, এমন রেকর্ড নেই, সব কাজ করে ঠিকাদার। তবে কিছু অভিযোগ সত্য তবে বাইরের লোকজন বেশি অপকর্ম করছে। অভিযোগের কারণে তিতাসের লোকজনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমার সময়ে ৮ জনকে বরখাস্ত করেছি, ১৬ জনকে সাময়িক বরখাস্তসহ ২২৮ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৯১ জনকে শাস্তিমূলক বদলি করেছি।
৩ হাজারের বেশি স্টাফ এর মধ্যে হয়তো নগণ্য পরিমাণে জড়িত থাকতে পারে। ৫০ থেকে ৬০ জন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিচ্ছিন্নের পর পুনঃরায় সংযোগ প্রসঙ্গে বলেন, কিছু সংযোগ হয়তো লাগতে পারে। তবে নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রিপেইড মিটার প্রসঙ্গে বলেন, মিটার নিলে আমাদের লাভ, বকেয়া থাকে না অগ্রিম বিল পাচ্ছি। ওপেন মার্কেট থেকে নিতে পারবে, তবে কেউ আগ্রহী হয় না, বেসরকারি উদ্যোক্তারা আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, আমরা জোনগুলোতে মিটার বসিয়েছি এখন আলাদা করতে পারি নি, পরবর্তী আরেকটি সাংবাদিক সম্মেলন করে এ বিষয়ে অবগত করা হবে।