রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টে রিফুয়েলিং মেশিনের প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রিয়্যাক্টর কোর -এ ডামি ফুয়েল লোডিংয়ের জন্য এটি সর্বশেষ ধাপ। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ডামি ফুয়েল লোডিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রিয়্যাক্টর কোর -এ ফ্রেশ পারমাণবিক জ্বালানী লোড এবং কোর থেকে ব্যবহৃত জ্বালানি বের করে আনার জন্য ব্যবহৃত হয় নিউক্লিয়ার রিফুয়েলিং মেশিন। ৬০ টন ওজনের মেশিনটি ফুয়েল পুল ও রিয়্যাক্টর পীটের উপরে অবস্থিত। এটির যান্ত্রিক অংশে রয়েছে ব্রীজ, ট্রলি এবং সার্ভিস এরিয়া। এছাড়াও এই মেশিনে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে একটি কনট্রোল এবং একটি মনিটরিং সিস্টেম, যার মাধ্যমে দূরবর্তী স্থান থেকে পারমাণবিক জ্বালানির ফুয়েলিং, রিফুয়েলিং এবং ইন্সটলেশন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রন এবং মনিটরিং করা হয়।
এটমটেক এনার্গো বাংলাদেশ শাখার পরিচালক ডেনিস মাজলভ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনের ক্ষেত্রে রিফুয়েলিং মেশিনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফুয়েল এসেম্বলি নিয়ে এটির কাজ অত্যন্ত নিখুঁত হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে কোনো বিশেষ স্থানে অনুমোদিত ত্রুটি কোনো ক্রমেই দুই মিলিমিটারের বেশি হবে না।
ফুয়েল লোডিং এর জন্য রিফুয়েলিং মেশিনটিকে প্রস্তুত করতে কাজ করেছে এটমটেক এনার্গো’র বিশেষজ্ঞরা। রসাটমের ইলেকট্রিক পাওয়ার ডিভিশনের অংশ এই প্রতিষ্ঠানটি এনপিপি কমিশনিং, বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ স্থাপনা তৈরিতে বিশেষভাবে পারদর্শী।
বাংলাদেশের রূপপুরেও রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় দুই ইউনিট বিশিষ্ট একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের শেষের পর্যায়ে রয়েছে। ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর ভিত্তিক প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১,২০০ মেগাওয়াট। রসাটম ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশন প্রকল্পের জেনারেল কনট্রাকটর এবং ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ প্রকল্পে সিংহভাগ অর্থায়ন দিয়েছে রাশিয়া। ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাশিয়ার অর্থায়ন রয়েছে ৯৩ হাজার কোটি টাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ এ প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট এবং দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আরও ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ২০২৪ সালে উৎপাদন হওয়ার কথা ছিল। রাশিয়ার উপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে জার্মান প্রতিষ্ঠান সিমেন্স কাজকে জটিল করে তুলেছে। সিমেন্স ২৩৩/৪০০ কেভি জিআইএস সাব স্টেশন সরবরাহ করার কথা ছিল। গত বছর সাব স্টেশন সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানালে নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে চীনা কোম্পানিকে।