একাদশে ভর্তির প্রথম পর্যায়ের ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজ জোটেনি চট্টগ্রামের ৪০৮ শিক্ষার্থীর। ওই শিক্ষার্থীরা যেসব কলেজ পছন্দ করেছিল সেগুলোতে আসন খালি না থাকায় প্রথম পর্যায়ে তারা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। তবে দ্বিতীয় ধাপে সংশোধন করে আবেদন করলে তারাও পাবে কলেজ, পাবে একাদশে ভর্তির সুযোগ।
রোববার (২৩ জুন) রাতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের ফল প্রকাশিত হয়। সেই ফলে দেখা গেছে সারাদেশে সাড়ে ৮ হাজার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী কলেজ পায়নি। সেই তাদের মধ্যে আছে চট্টগ্রামের এই ৪০৮ শিক্ষার্থীও। মঙ্গলবার (২৫ জুন) তাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষাবোর্ড। চট্টগ্রামে সব মিলিয়ে প্রথম ধাপে ২ হাজার ২৮০ জন শিক্ষার্থীর কলেজ জোটেনি।
শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, অনলাইনে আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের ১০টি কলেজ পছন্দক্রম দিতে হয়। এক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক অতি আত্মবিশ্বাস থেকে ৪-৫টি কলেজ দিয়েই আর দেন না। তখন দেখা যায় সেই কলেজগুলোতে আসন শূন্য না থাকায়, তারা প্রথম ধাপে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। এই ২ হাজার ২৮০ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. জাহেদুল হক।
তিনি বলেন, একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দশটি কলেজে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের ক্ষেত্রে ৫-৬টির বেশি কলেজ দেয় না। তাদের ধারণা থাকে ৫-৬টি কলেজে আবেদন করলে তাদের নাম চলে আসবে। কিন্তু যেসব কলেজে তারা আবেদন করেছে, সেসব কলেজে তাদের তুলনায় বেশি নম্বর পাওয়া আবেদনকারীর সংখ্যা হয়তো বেশি ছিল। সে কারণে যারা ৫-৬টি কলেজের বেশি পছন্দ দেয়নি, তাদের একটিতেও সুযোগ হয়নি। কিন্তু দশটি কলেজে আবেদন করলে এ সমস্যা হয়তো হতো না।
জাহেদুল হক বলেন, একাদশে ভর্তির আবেদন চলাকালীন সর্বোচ্চ সংখ্যক কলেজ পছন্দ দিয়ে আবেদন করতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রতি আমরাও বারবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু অনেকেই তা করেননি।
তবে এসব শিক্ষার্থীর কলেজ পাওয়া নিয়ে সমস্যা নেই জানিয়ে কলেজ পরিদর্শক আরও বলেন, যারা প্রথম ধাপে মনোনীত হয়নি তারা ভর্তি হতে পারবে। কারণ চট্টগ্রামের কলেজগুলোর মোট আসন সংখ্যার তুলনায় আবেদনকারীর সংখ্যা কম। যার কারণে সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রামে আসন সংকট হবে না। তবে তারা যে কলেজে ভর্তি হতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে, সেটি হয়তো পাবে না। যারা প্রথম তালিকায় মনোনয়ন পায়নি, তাদের পরবর্তী তালিকায় মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় ধাপে আবেদনের সময় পছন্দ সংশোধন করতে হবে।
এদিকে দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ৩০ জুন এবং শেষ হবে ২ জুলাই। দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ৪ জুলাই রাত ৮টায়। সেদিনই প্রথম ধাপে ভর্তির সুযোগ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। অবশ্য তৃতীয় ধাপেও আবেদনের সুযোগ থাকছে। তৃতীয় পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ ৯ জুলাই শুরু হয়ে শেষ হবে ১০ জুলাই। তৃতীয় পর্যায়ে আবেদনের ফল প্রকাশ ১২ জুলাই রাত ৮টায়। আর ভর্তি শুরু হবে ১৫ জুলাই এবং শেষ হবে ২৫ জুলাই। আর একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে আগামী ৩০ জুলাই।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে মোট পাস করেছে ১ লাখ ২০ হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থী। তবে চট্টগ্রামের ২৮৫টি সরকারি-বেসরকারি কলেজে আসন রয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার। সেই হিসাবে সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও ফাঁকা থাকবে প্রায় ৪৬ হাজার আসন।