আমাদের শিখীপর্ণ প্রজাপতি

, ঈদ সবিশেষ

অধ্যাপক ড. আ ন ম আমিনুর রহমান পাখি ও বন্যপ্রাণী প্রজনন ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ | 2024-04-10 11:28:17

 

কমলা রঙের পতঙ্গটিকে প্রথম দেখি পঁয়তাল্লিশ বছর আগে, মাত্র এগার বছর বয়সে। অবশ্য ওর প্রথম আলোকচিত্রটি তুলি ২০০৮ সালে, ঢাকার সোহরওয়ার্দি উদ্যান থেকে। একটা গাঁদা ফুলের উপর পতঙ্গটি বসেছিল। সেই কিশোরবেলা থেকেই ওকে যতবার দেখেছি ওর মোহনীয় রূপে ততবারই মুগ্ধ হয়েছি। ওকে আমার এতটাই ভালো লেগেছিল যে সেই কিশোর বয়সেই ওকে চিরজীবি করে রাখার জন্য চেষ্টা করেছিলাম। অর্থাৎ মমি করে রাখার চেষ্টা করেছিলাম, যদিও তা বেশিদিন টেকেনি।

ময়ুরের পেখম পালকে থাকা চোখের মতো চক্র রয়েছে কমলা রঙের পতঙ্গটির ডানায়। ওকে যেমন দেখেছি ঢাকা শহরে, তেমনি দেখেছি গ্রামে, পাহাড়ি এলাকায়, গহীন জঙ্গলে, চা বাগানে কিংবা ভারতের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি রাতের বেলা ঘুমন্ত অবস্থায় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানেও দেখেছি ওকে। ও আছে প্রচুর সংখ্যায় আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। তাই ওর সঙ্গে আমার প্রায় প্রতিদিনই দেখা হয়।

মৌলভীবাজারের আদমপুর সংরক্ষিত বনে প্রজাপতির ছবি তোলাশেষে লেখক

এতক্ষণ যার কথা বললাম সে আর কেউ নয় এদেশের অতি সুন্দর ও মোহনীয় এক প্রজাপতি, কমলা শিখীপর্ণ যা হলদে ময়ূরী নামেও পরিচিত। এটি প্রজাপতির সর্ববৃহৎ গোত্র নিম্ফালিডি (Nymphalidae)-এর অর্ন্তভুক্ত। বিশ্বব্যাপী এই গোত্রের প্রজাতিসংখ্যা প্রায় ৬,০০০। ভারতে দেখা যায় প্রায় ৫২০ প্রজাতি ও বাংলাদেশে প্রায় ১৫০টি। এই গোত্রের প্রজাপতিগুলোর অধিকাংশেরই সামনের পা-জোড়া ছোট হয়ে কুঁকড়ে যায়, হাঁটার কাজে লাগে না। আর একারণে ওরা চার পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়ায়, তাই ওদেরকে চার-পেয়ে প্রজাপতি বলে। কিছু প্রজাতির ক্ষেত্রে কুঁকড়ে যাওয়া পা দুটোর অগ্রভাগে বুরুশের মতো চুল থাকে, যে কারণে বুরুশ-পেয়ে প্রজাপতি নামেও পরিচিত।

অ্যান্টার্কটিকা বাদে সারাবিশ্বে ওরা বিস্তৃত, তবে গ্রীষ্মম-লীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। এই গোত্রে বিভিন্ন গোষ্ঠির প্রজাপতি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ডানায় ময়ুরের পেখমের মতো চোখসম্বলিত প্রজাপতির গোষ্ঠিটিই শিখীপর্ণ গোষ্ঠি নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধাভাজন সাবেক অধ্যাপক ও প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ ড. মোঃ আবুল বাশার স্যার শিখীপর্ণ নামটির প্রচলন করেছেন। এদেশে শিখীপর্ণ গোষ্ঠির ছয়টি প্রজাপতি বাস করে। এখানে সংক্ষেপে এগুলোর পরিচয় তুলে ধরছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডানা মেলা কমলা শিখীপর্ণ

০১. কমলা শিখীপর্ণ (Peacock Pansy): এটি হলুদ ময়ূরী, স্বণর্/সোনালি চক্র বা নয়ান (পশ্চিমবঙ্গ) নামেও পরিচিত। এদেশের বহুল দৃশ্যমান (Very Common) ও স্বল্প ঝুঁকিসম্পন্ন (Least Concern) প্রজাপতিটির বৈজ্ঞানিক নাম Junonia almana (জুনুনিয়া আলমানা)। এটি বাংলাদেশের সর্বত্র বিস্তৃত। এছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বহু দেশ, জাপান ও তাইওয়ান দেখা যায়। কমলা শিখীপর্ণের ডানার বিস্তার ৬০ থেকে ৬৫ মিলিমিটার। দেহ ও ডানার উপরটা গাঢ় হলদে-বাদামি ও নিচটা হালকা বাদামি। পিছনের ডানা পাতার মতো দেখায়। স্ত্রী প্রজাপতির ডানার উপরটা হলুদ, যা পুরুষের ক্ষেত্রে বাদামি। সামনের ও পিছনের প্রতিটি ডানায় দু’টি করে ময়ুরের পেখমের মতো চোখ বা চক্র থাকে, একটি বড় ও একটি ছোট।

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ডানা বন্ধ অবস্থায় কমলা শিখীপর্ণ

এরা প্রচুর বৃষ্টিাতসম্পন্ন এলাকা ও ফুলের বাগানে ঘোরাঘুরি করে। প্রচুর ওড়াউড়ি করে। সকালের মিষ্টি রোদে ঝোপঝাড়ে রোদ পোহায়। ফুলের রস প্রধান খাদ্য। এদের জীবন চক্র অর্থাৎ ডিম, শুককীট, মূককীট ও পুর্ণাঙ্গ অবস্থা ২৩ থেকে ২৫ দিনে সম্পন্ন হয়। স্ত্রী প্রজাপতি তালমাখনা, ভুঁইওখড়া ও এজাতীয় পোষক গাছের পাতার নিচের দিকে পাতাপ্রতি একটি ডিম পাড়ে। বেরেল আকারের সবুজ রঙের ডিমের লম্বালম্বি অংশে খাঁজকাটা থাকে। পূর্ণবয়ষ্ক প্রজাপতি গড়ে মাত্র ৩৬ দিন বাঁচে।

সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে পুরুষ হলুদ শিখীপর্ণ

০২. হলুদ শিখীপর্ণ (Yellow Pansy): এটি রয়েল নামেও পরিচিত, যা এদেশে সচরাচর দৃশ্যমান (Common) ও স্বল্প ঝুঁকিসম্পন্ন। বৈজ্ঞানিক নাম Junonia hierta (জুনুনিয়া হিরতা)। কমলা শিখীপর্ণের মতো এটিকেও দেশের সর্বত্র দেখা যায়। প্রজাপতিটিকে প্রথম দেখি ২০১১ সালে সিলেটের টিলাগড় ইকো পার্কে। দেশের বাইরে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিস্তৃত।

হলুদ শিখীপর্ণের ডানার বিস্তার ৬০ থেকে ৬৫ মিলিমিটার। দেহ ও ডানার উপরটা কালো দাগসহ হলুদ। পিছনের ডানার পক্ষমূল ও সম্মুখপ্রান্ত বিস্তৃতভাবে কালো। পিছনের ডানার উপরে দুটি সুস্পষ্ট জ্বলজ্বলে নীল রঙের ছোপ থাকে। এই নীল ছোপটি পুরুষের ক্ষেত্রে কিছুটা বড় হয়। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী ফ্যাকাশে। স্ত্রীর পিছনের ডানার উপরাংশে দুটি ছোট অক্ষি-ফুটকি থাকে।

টিলাগড় ইকোপার্কে স্ত্রী হলুদ শিখীপর্ণ

এদেরকে সমতল ভূমি, অনাবাদি কৃষি জমি, শুষ্ক নদীর তলদেশ ও বনপথে দেখা যায়। রৌদ্রজ্জ্বল জায়গা এদের বেশ পছন্দ। অস্থির প্রকৃতির প্রজাপতিগুলো দৃঢ়ভাবে ও সামান্য এঁকেবেঁকে মাটির কাছাকাছি দ্রুততার সঙ্গে ওড়াউড়ি করে। পরিযায়ী স্বভাবের হতে পারে। এদের জীবন চক্র সম্পন্ন হতে ২০ থেকে ২৬ দিন সময় লাগে। ডিম কমলা শিখীপর্ণের মতোই যা কন্ট বা পীতঝিন্টি, তালমাখনা, ধমনী ফুল প্রভৃতি পোষক গাছে সম্পন্ন হয়।

টিলাগড় ইকোপার্কে পিঙ্গল শিখীপর্ণ প্রজাপতি

০৩. পিঙ্গল শিখীপর্ণ (Lemon Pansy): পশ্চিমবঙ্গে এটি উষুম নামে পরিচিত। হলুদ শিখীপর্ণের মতো এটিও এদেশের সচরাচর দৃশ্যমান ও স্বল্প ঝুঁকিসম্পন্ন প্রজাপতি। বৈজ্ঞানিক নাম Junonia hierta (জুনুনিয়া লেমনিয়াস)। কমলা ও হলুদ শিখীপর্ণের মতো এটিকেও দেশের সর্বত্র দেখা যায়। এটিকে সর্বপ্রথম দেখি সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে ২০১১ সালে। আর দেশের বাইরে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশে রয়েছে।

আকারে এটি কমলা ও হলুদ শিখীপর্ণের চেয়ে কিছুটা ছোট। ডানার বিস্তার ৪৫ থেকে ৬০ মিলিমিটার। দেহ ও ডানার উপরটা গাঢ় বাদামি ও নিচটা হলদে-বাদামি। সামনের ডানার উপরের প্রান্তে ৪টি করে খয়েরি আড়াআড়ি ঢেউ খেলানো রেখা দেখা যায়। পিছনের ডানার নিচের প্রান্তেও এরকম ফুটকি ও রেখা থাকে। স্ত্রী পুরুষের থেকেও হালকা হয়।

এদেরকে বন ও সমতলভূমিতে দেখা যায়। ভূমির কাছাকাছি দৃঢ়, দ্রুত ও সোজাভাবে উড়ে। দ্রুত ডানা ঝাপটায়। ফুলের রস পছন্দ। এদের জীবন চক্র কাঁটাজন্তি, লাল বেরেলা, কোস্টা ইত্যাদি পোষক গাছে সম্পন্ন হয়। জীবনচক্র অর্থাৎ ডিম, ডিমপাড়া, মুককীট, শুককীট, পুর্ণবয়ষ্ক প্রজাপতির আয়ুষ্কাল ইত্যাদি কমলা শিখীপর্ণের মতোই।

পুরুষ নীল শিখিপর্ণ প্রজাপতি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে তোলা

০৪. নীল শিখীপর্ণ (Blue Pansy): শিখীপর্ণ প্রজাপতিগুলোর মধ্যে আমার কাছে এটিকেই সব থেকে সুন্দও বলে মনে হয়। পশ্চিমবঙ্গে এটি টুয়া নামে পরিচিত। তবে, কমলা, হলুদ ও পিঙ্গল শিখীপর্ণের মতো এটি তেমন একটা সহজলভ্য নয়। বরং দুর্লভ ও সংকটাপন্ন (Vulnerable)। বৈজ্ঞানিক নাম Junonia orithya (জুনুনিয়া অরিথিয়া)। এটিকেও দেশের সর্বত্র দেখা যায়। এই প্রজাপতিটিকে আমি সর্বপ্রথম ২০১৪ সালে দেখি মালয়েশিয়ার পেরাক রাজ্যের কামপার এলাকায়। পরবর্তীতে রাজশাহীতে দেখেছি। সম্প্রতি ঢাকার উত্তরায় দেখেছি বেশ ক’বার। দেশের বাইরে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশসহ অস্ট্রেলিয়ায় দেখা মিলে।

মালয়েশিয়ার পেরাক রাজ্যে স্ত্রী নীল শিখীপর্ণ

আকারে এটি পিঙ্গল শিখীপর্ণের প্রায় সমান। ডানার বিস্তার ৪০ থেকে ৬০ মিলিমিটার। পুরুষের সামনের ডানার উপরটা কালো থেকে গাঢ় বাদামি, ডানার শীর্ষদেশের নিচে একটি সাদা ফিতে থাকে। খোপে দুটি কমলা ও দুটি নীল ডোরা এবং বার-আঁচলে দুটি অক্ষি-ফুটকি রয়েছে। পিছনের ডানা উজ্জ্বল নীল যার বার-আঁচলে অক্ষি-ফুটকি থাকে। স্ত্রী একইভাবে চিহ্নিত হলেও তুলনামূলকভাবে বেশি ফ্যাকাশে।

এদেরকে শুষ্ক ঘাসপূর্ণ সমতলভূমি ও বনের ভিতরে উন্মুক্ত স্থানে দেখা যায়। সারাবছর ওড়াউড়ি করে। ফুল, স্যাঁতসেঁতে স্থান ও প্রাণীর মূত্রে বসে। পুরুষের নিজস্ব এলাকা থাকে। এদের জীবন চক্র করম্বল, লাল বেরেলা, লজ্জাবতী ইত্যাদি পোষক গাছে ২৫ থেকে ২৮ দিনে সম্পন্ন হয়। ডিম সবুজাভ ও কিছুটা গোলাকার, যাতে ১২টি খাঁজ থাকে।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডানা মেলা ধূসর শিখীপর্ণ
 

০৫. ধূসর শিখীপর্ণ (Grey Pansy): এছাড়াও এটি ধূসরাক্ষী, ধূসর চক্র, ধূসর-সোনালি চক্র ও চাঁদনরি (পশ্চিমবঙ্গ) নামে পরিচিত। এটি এদেশের বহুল দৃশ্যমান ও স্বল্পঝুঁকিসম্পন্ন প্রজাপতি। দেশের সর্বত্র চোখে পড়ে। সর্বপ্রথম গাজীপুরস্থ বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে প্রজাপতিটির ছবি তুলি ২০০৯ সালে। দেশের বাইরে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশে দেখা যায়।

ধূসর শিখীপর্ণ আকারে কমলা ও হলুদ শিখীপর্ণের প্রায় সমান। ডানার বিস্তার ৫৫ থেকে ৬০ মিলিমিটার। দেহ ও ডানার উপরটা ধূসর-সাদা, নিচটা কিছুটা হালকা। কমলা শিখীপর্ণের মতো এটিরও সামনের ডানার উপরের প্রান্তে ৪টি করে আড়াআড়ি ঢেউ খেলানো রেখা থাকে। সামনের ও পিছনের ডানার প্রান্তে যথাক্রমে ৬টি ও ৫টি করে বাদামি চক্রের একটি করে সারি রয়েছে। স্ত্রী পুরুষের তুলনায় কিছুটা বড় হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডানা বন্ধ অবস্থায় ধূসর শিখীপর্ণ

প্রচুর বৃষ্টিপাতসম্পন্ন উন্মুক্ত এলাকা, জলার আশপাশ ও ঝোঁপজঙ্গলে এদের দেখা মেলে। ভূমির কাছাকাছি ঝাঁকুনি দিয়ে উড়ে। রোদ পছন্দ। ফুলের রস প্রধান খাদ্য। এদের জীবন চক্র তালমাখনা ও এ জাতীয় অন্যান্য পোষক গাছে সম্পন্ন হয়। জীবন চক্র ও আয়ুষ্কাল ইত্যাদি কমলা শিখীপর্ণের মতোই।

হবিগঞ্জের কালেঙ্গ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ডানা মেলা খয়রি শিখীপর্ণ

০৬. খয়রি শিখীপর্ণ (Chocolate Pansy): কপিলাক্ষী বা খৈরি (পশ্চিমবঙ্গ) নামেও পরিচিত। এটিও বহুল দৃশ্যমান ও স্বল্পঝুঁকিসম্পন্ন প্রজাপতি। দেশের সর্বত্র দেখা যায়। আমি এটিকে সর্বপ্রথম দেখি ২০১৩ সালে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এটি বিস্তৃত।

খয়রি শিখীপর্ণ আকারে কমলা, হলুদ ও ধূসর শিখীপর্ণের সমান বা খানিকটা বড়। ডানার বিস্তার ৫৫ থেকে ৮০ মিলিমিটার। ডানার উপরটা বাদামি ও তাতে বেশকিছু অস্পষ্ট কিন্তু গাঢ় বাাদমি দাগ রয়েছে, যা সম্মুখপ্রান্ত থেকে ভূমিপ্রান্ত পর্যন্ত চলে গেছে। পিছনের ডানার উপরের দিকে একসারি ছোট অক্ষি-ফুটকি থাকে। সামনের ডানার শীর্ষ বর্গাকার ও বাইরের প্রান্ত অবতল। ডানার নিচটা পাতার মতো।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ডানা বন্ধ অবস্থায় খয়রি শিখীপর্ণ

আর্দ্র গাছপালাসম্পন্ন বন ও বনের প্রান্তে এদের দেখা মিলে। ছায়াময় স্থান পছন্দ করে। ভূমির কাছাকাছি সামান্য এঁকেবেঁকে দৃঢ়ভাবে উড়ে। ফুল ও স্যাঁতসেঁতে মাটির রস চোষে। পরিযায়ী হতে পারে। ডিম, ডিমপাড়া, মুককীট, শুককীট, জীবন চক্র ও আয়ুষ্কাল ইত্যাদি কমবেশি অন্যান্য শিখীপর্ণের মতো। জীবন চক্র তালমাখনা, কুলিয়াখাড়া, ছোট ফুলের বাসক ও এ জাতীয় অন্যান্য গাছে ২০ থেকে ২২ দিনে সম্পন্ন হয়।
কামনা করি শিখীপর্ণ প্রজাপতিগুলো এদেশের প্রকৃতি বেঁচে থাকুক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করুক।

ড. আ ন ম আমিনুর রহমান একজন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী, প্রাণীচিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর