যেসব তথ্য গোপন করলে বাতিল হবে প্রার্থীর মনোনয়ন

, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-11-27 23:39:09

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা রিটার্নিং অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় যেসকল তথ্য গোপন করলে প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যাবে; এই সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) নির্বাচন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা অধিশাখার উপ সচিব আতিয়ুর স্বাক্ষরিত একটি ৭ নাম্বার পরিপত্রে এই তথ্য জানানো হয়।

ইসি জানায়, নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলকারীকে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট সরাসরি মনোনয়নপত্র দাখিলের পাশাপাশি অনলাইনেও মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান আছে। সরাসরি অথবা অনলাইনে দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রের সাথে সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী (ফরম-২০ অনুসারে), সম্পদ ও দায় এবং বার্ষিক আয় ও ব্যয় বিবরণী (ফরম-২১ অনুসারে) দাখিল করতে হবে।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাথে যেসব প্রমাণ পত্র তথ্য দিতে হবে-

১। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী টিআইএন নম্বরসহ সর্বশেষ আয়কর রিটার্ন এবং কর পরিশোধের প্রমাণপত্রের কপি অবশ্যই দাখিল করতে হবে।

২। নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহের উদ্দেশ্যে খোলা ব্যাংক একাউন্টের নাম ও নম্বর মনোনয়নপত্রের নির্ধারিত স্থানে লিপিবদ্ধ করতে হবে।

৩। মনোনয়নপত্রের সাথে প্রদত্ত হলফনামার নমুনা অনুসারে ৩০০/- (তিনশত) টাকা বা সর্বশেষ ধার্যকৃত মূল্যমানের নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে অথবা যেক্ষেত্রে নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প দুষ্প্রাপ্য হয় সেক্ষেত্রে সমপরিমাণ টাকার কোর্ট ফি সংযোজন করে নোটারী পাবলিক বা ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে হলফনামা সম্পাদন করে সংযুক্ত করতে হবে।

৪। দাখিলকৃত হলফনামার তথ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। তথ্য প্রদানের সুবিধার্থে প্রয়োজনে অতিরিক্ত কাগজ সংযুক্ত করা যাবে।

এইসব তথ্য প্রার্থী হলফনামায় দাখিল না করেন বা দাখিলকৃত হলফনামায় কোন অসত্য তথ্য প্রদান করেন বা তথ্য গোপন করেন বা হলফনামায় উল্লিখিত তথ্যের সমর্থনে যথাযথ প্রমাণাদি দাখিল না করেন তাহলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা যাবে।

হলফনামা ও অন্যান্য তথ্যাদি মনোনয়নপত্র জমাদানের দিন থেকে সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং এ তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সকলের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হবে। কাজেই প্রার্থী জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ভুল তথ্য দিলে তথ্য প্রকাশের পর তার দায় এড়াতে পারবেন না।

হলফনামাসহ যেসব ফটোকপি প্রার্থী সরবরাহ করবেন-

প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সাথে মূলকপিসহ দুই কপি অতিরিক্ত ফটোকপি করে হলফনামা, সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী, সম্পদ ও দায় এবং বার্ষিক আয় ও ব্যয় বিবরণী, আয়কর রিটার্ন ও কর পরিশোধের প্রমাণপত্র রিটার্নিং অফিসারের নিকট দাখিল করতে হবে। এজন্য হলফনামার একটি মূল কপি ও দু'টি ফটোকপি জমা দিতে হবে। উক্ত তিন কপি হলফনামার মধ্যে মূল কপিটি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে সংরক্ষণ করতে হবে, এক কপি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ঝুলিয়ে দিতে হবে এবং বাকি এক কপি থেকে বিভিন্ন এনজিও, সংবাদ মাধ্যম, সুশীল সমাজ বা অন্য কোন ব্যক্তি ফটোকপি করে নিতে পারবেন। এনজিও, সংবাদ মাধ্যম, সুশীল সমাজ বা অন্য যে কোন ব্যক্তি ফটোকপি নিজেরাই করে নেবেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।

এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। গত ২ নভেম্বর সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটারসংখ্যা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গ ভোটারের সংখ্যা ৮৫২।

এ সম্পর্কিত আরও খবর