নির্বাচনের কমিশনের আরপিও অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্য জাতীয় নির্বাচনে দলের ব্যয় হিসাব দাখিল না করায় নিবন্ধন হারাতে যাচ্ছে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দল গামছা প্রতীকের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অংশ নেওয়া ২৮ রাজনৈতিক দলের মধ্য সঠিক সময়ে হিসাব জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগসহ ২৫টি দল। এসময়ে সাড়া দেয়নি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, পনেরো দিন অতিরিক্ত সময়সহ দশ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। পরে জরিমানাসহ অন্য দু'দল ব্যয়ের হিসেব দিলেও কাদের সিদ্দীকির দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমার নির্বাচনে দলীয়ভাবে কোনো টাকা খরচ হয়নি। যা হয়েছে ব্যক্তিগত। তাহলে আমি কীসের ব্যয়ের হিসাব জমা দিবো। এ বিষয়ে আমার জানা নেই।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নেয়। বিএনপিসহ সমমনা ১৬টি রাজনৈতিক দল এ ভোট বর্জন করে। দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪টি। দ্বাদশ ভোটে গামছা প্রতীক নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৩০ জন প্রার্থী ভোট করেছেন। ৩০ আসনে নির্বাচন করলেও একটি আসনেও জিততে পারেনি দলটি।
ইসির গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধি ৫-তে বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোকে নির্বাচনের ৯০ দিনের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে হয়। সে সময়ের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনী ব্যয় জমা না দিলে ইসি একমাস সময় দিতে পারে। সে সময়ের মধ্যেও হিসাব জমা না দিলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে হিসাব জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কোনো দল অতিরিক্ত এ সময়ের মধ্যেও হিসাব জমা না দিলে সে দলের নিবন্ধন বাতিল করবে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, দুইটি দলের জরিমানাসহ আয় ব্যয়ের হিসাব তারা পেয়েছেন। যে দলের কোনো খরচ হয়নি তারা জানাবে যে তাদের কোনো খরচ হয়নি। কৃষক শ্রমিক দলের কাউকে দেখিনি। এ সংক্রান্ত একটি ফাইল কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। কমিশন চাইলে নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, নির্ধারিত সময়ে যে তিন দল ব্যয়ের হিসেব জমা দেয়নি-তাদের চিঠির মাধ্যমে ১৫ দিন সময় ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা বিষয় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে দু'দল তাদের হিসেব জমা দিলেও একটি দল জমা দেয়নি।
কাদের সিদ্দিকী দাবি করেছেন, তার দলীয়ভাবে কোনো খরচ হয়নি, এর জবাবে তিনি বলেন, দলীয়ভাবে যদি খরচ করেনি তাহলে তাকে উল্লেখ করতে হবে দলীয়ভাবে আমরা এক পয়সাও খরচ করিনি। আইনে আছে- খরচ না করলে দিতে হবে। নির্বাচনে দলীয়ভাবে এক টাকাও খরচ হয়নি বিষয়টি বাস্তব সম্মত বলেও মনে করছেন না তিনি।
ব্যয়ের হিসেব জমা না দেওয়ায় দলটির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিবে ইসি এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, দলটির নিবন্ধন বাতিল হবে। কোর্ট থেকে তাকে নিয়ে আসতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কাজ নির্বাচন কমিশন করবে।