পশু-পাখি ভালোবাসেন জয়া আহসান এ কথা কারও অজানা নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় সময়ই এসব পশু-পাখিদের নিয়ে নানা ধরনের পোস্ট দিয়ে থাকেন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেজে একটি মৃত ঘোড়ার ছবি শেয়ার করেছেন এপার-ওপার দুই বাঙলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
মৃত ঘোড়ার ছবিটি শেয়ারের পাশাপাশি একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখে জয়া আহসান জানান, “কক্সবাজারে মৃত ঘোড়ার ছবিটি আমার মন অবশ করে দিয়েছে। ঘোড়ার এমন করুণ ছবি নেওয়া যায় না। এদের প্রখর অভিজাত সৌন্দর্যই ছোটবেলা থেকে আমাদের সবার মন ভরিয়ে রেখেছে। ঘোড়ার এমন অসহায় মৃত্যু মন অন্ধকার করে দেয়। কারোরই এমন মৃত্যু প্রত্যাশা করা যায় না।”
যোগ করে জয়া আহসান আরও লিখেছেন, “মানুষ হিসেবে আমরা একা একাই সভ্যতার পথ ধরে এগিয়ে আসিনি। প্রকৃতি আর প্রাণিজগতের অসামান্য সাহায্য না পেলে এ পথে আমরা এক পা–ও এগোতে পারতাম না। ঘোড়াকে মানুষ নিজের পাশে পাওয়ার চেষ্টা করছে ৫ হাজার বছর ধরে। ঘোড়া তার প্রবল শক্তি, বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানচিত্র মনে রাখার প্রতিভা আর অসামান্য বন্ধুত্বের ক্ষমতা দিয়ে যুগ যুগ ধরে মানুষকে মানুষ হিসেবে বড় হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। ঘোড়ার সহযোগিতায় মানুষ জীবনের চাকা ঘুরিয়েছে, পৃথিবীর এক প্রান্ত আরেক প্রান্তে পৌঁছানোর সাহস করতে পেরেছে, হৃদয়ে সৌন্দর্যের নতুন তাৎপর্য খুঁজে পেয়েছে। এত দূর চলে এসে আজ আমরা সেসব ভুলতে বসেছি। মানুষ হিসেবে আমাদের অহংকারের শেষ নেই। সে মুর্খ অহংকারে পেছনের সবকিছু আমরা তাচ্ছিল্য করছি। প্রকৃতির তাণ্ডব সে জন্য এখন আমাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। এই ঘোড়াগুলো এতদিন আমাদের জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে জীবিকা আসছিল। করোনায় পর্যটকশূন্য কক্সবাজারে ওরা হয়ে পড়েছে চরম দুর্ভাগা। পোষাতে না পেরে মালিকেরা ওদের ছেড়ে দিয়েছে। খাদ্যহীন হয়ে ওরা রাস্তায় পড়ে মরছে। যতদূর জানি, এসব প্রাণীকে খাদ্যহীন করে অসুস্থ করে লোকালয়ে ছেড়ে দেওয়ার অধিকার আইন কাউকে দেয় না। কিন্তু আইন বা শাস্তির বাইরেও কি মানবিকতা বলে কিছু নেই। ওরা কি আমাদের আরেকটু মনোযোগ, আরেকটু যত্ন পেতে পারে না?
সবশেষ অনুরোধ জানিয়ে জয়া লিখেছেন, “সমুদ্রসৈকতে পর্যটনের এই বাহকদের দেখার মতো কোনো কর্তৃপক্ষ নেই? কোনো অধিদপ্তর? একদল ছেলেমেয়ে এদের জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে। ওদেরকে আমার প্রাণঢালা ভালোবাসা। কারো দিকে না তাকিয়ে হৃদয়বান অন্য মানুষদেরও যুক্ত হতে অনুরোধ করি।”