জেলেদের মাঝে ফিরে গেলো ‘নোনাজলের কাব্য’

সিনেমা, বিনোদন

বিনোদন রিপোর্ট, বার্তা ২৪.কম | 2023-08-25 23:29:06

আগামী ২৬ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে চলচ্চিত্র ‘নোনাজলের কাব্য’। উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের জীবনযাত্রা নিয়ে নির্মিত হয় চলচ্চিত্রটি। আড়াই বছর পর বড়পর্দায় মুক্তির আগে সে গ্রামেই ফিরে গেলো ‘নোনাজলের কাব্য’।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, পটুয়াখালীর চর গঙ্গামতী ও জেলেপল্লী কুয়াকাটা পিকনিক স্পটের জেলে পরিবারের জন্য ২২ নভেম্বর এবং ২৩ নভেম্বর জৈনকাঠির জেলে পরিবারের জন্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এই ছবিটি, প্রেক্ষাগৃহে সাধারণ দর্শকদের উদ্দ্যেশ্যে প্রদর্শনের আগে পটুয়াখালীর জেলে পরিবারদের জন্য প্রদর্শিত হয়।

হাজারও দর্শকের উপস্থিতিতে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক। এলাকার জেলেবাসীরা প্রায় আড়াই বছর ধরেই এই ছবির জন্য ব্যাকুলভাবে অপেক্ষারত ছিল। ছবিটি দেখে তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। ছবির প্রদর্শনীর শেষে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে নিজেদের সুখ-দুঃখের কথা তুলে ধরারও সুযোগ পায়।


দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রান্তিক জেলেদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকার লড়াই এবং তাদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কার এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয়। সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, সংস্কৃতির প্রসার এবং পরিবেশের অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন রোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে চলচ্চিত্র তথা বিনোদন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে – এই বিশ্বাস নিয়েই পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত নির্মাণ করেছেন ‘নোনা জলের কাব্য’।

তিনি বলেন, “ছবিটি নির্মাণ করতে আজ থেকে তিন বছর আগে আমি গিয়েছিলাম পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক জেলেপাড়ায়। খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, উপকূলবর্তী সেই গ্রামটির এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। মহামারীর কারণে প্রায় ১.৫ বছর আমার সেখানে যাওয়া হয়ে উঠে নি, কিন্তু এবার যখন পরিচিত সেই জায়গার খোঁজে, প্রিয় সেই মানুষগুলোর খোঁজে গেলাম, গিয়ে দেখি সেখানে কেবলমাত্র কিছু গাছপালা ভেঙে পরে রয়েছে, জোয়ারের পানি উঠবে উঠবে ভাব। জানতে পারলাম এই অঞ্চলে গত ২-৩ বছর যাবৎ সমুদ্রের পানির উচ্চতা খুব দ্রুত গতিতে বাড়ছে। জোয়ারের তীব্রতা তো রয়েছেই, গতবছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফান-ও অনেক ক্ষতি করেছে।”


পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক চরে ১৫-২০ ঘর জেলের বসবাস। সেই জেলেপাড়ায় হঠাৎ এক ভাস্করের আগমন এবং তাকে ঘিরে গ্রামবাসীর জল্পনা কল্পনা, ভালো লাগা এবং পরিশেষে সংঘাত - এই নিয়েই 'নোনাজলের কাব্য'র গল্প। বিশ্বের বিভিন্ন নামি দামি উৎসবে প্রশংসিত চলচ্চিত্রটি সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনেও চলচ্চিত্রটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রদর্শিত হয়।

নোনা জলের কাব্য’- প্রযোজনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও ফরাসি প্রযোজক ঈলান জিরার্দ। জিরার্দ, ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন‘, ‘গুডবাই বাফানা‘, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট‘-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ, তিনি ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড-এর মনোনয়ন পেয়েছিলেন।


এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান অমিতাভ রেজার হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ। শব্দ ও রঙ সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে। ছবিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, এবং তাসনোভা তামান্না। আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর