ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে দেশজুড়ে কার্যকর হল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। গত ১১ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই আইন চালু হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার।
যার পরপরই বিক্ষোভ হয় তামিলনাড়ু, কেরালা ও আসামে। এই আইন কার্যকরের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে আজ বিক্ষোভ করেছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই সিএএ-র বিরোধিতায় মুখ খুললেন দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার দুই তারকা থালাপতি বিজয় ও কমল হাসান।
গত ১২ মার্চ এ বিষয়ে তামিলনাড়ু সরকারকে চিঠি লিখেছেন থালাপতি বিজয়। তিনি লিখেছেন, ‘এটা মানা সম্ভব নয়। সিএএ-এর মতো কোন আইন আমাদের রাজ্যে প্রয়োগ করতে দেওয়া হবে না। আমরা এটা মানব না। যেখানে দেশের সমস্ত নাগরিক ভালোবেসে একে অপরের সঙ্গে বসবাস করেন, সেখানে এই আইন বেমানান। আমরা নিশ্চিত করব যেন তামিলনাড়ুতে এই আইন লাগু করা না হয়।’
অন্যদিকে তামিল মেগাস্টার কামাল হাসান সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘ভারতকে ভাগ করার ষড়যন্ত্র সিএএ। যদি আমরা বিশ্বাস করি এই দাবি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়া, তাহলে কেন শ্রীলঙ্কার তামিলদের এই তালিকায় যোগ করা হল না? দুর্ভাগ্যবশত, এই আইনটি, যা তাড়াহুড়ো করে পেশ করা হয়েছিল এবং এখন একটি জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রয়োগ করা হচ্ছে, এটি বিজেপির ঘৃণ্য পরিকল্পনাগুলোকে স্পষ্ট করে তোলে।’
সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সিএএ কার্যকর হয়েছে। যদিও এই আইন চার বছর আগে পাস করেছিল শাসক দল বিজেপি। তবে কার্যকর করতে পারেনি। আইন অনুসারে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সিধর্মীয় সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে ভারতে এসেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
আইন কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের নাগরিকত্ব চাইলে কীভাবে আবেদন করতে হবে এবং এই আবেদনের জন্য কী কী লাগবে, তা জানিয়ে দিয়েছে। তবে আইনে এটা উল্লেখ করা হয়নি, ভারতে যাওয়া মুসলমানরা নাগরিকত্ব পাবেন কি না। ফলে আইনটি পাসের পরপরই সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচকদের দাবি, মুসলিমদের বিতাড়িত করতেই আইনটি করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র : ইকোনোমিক টাইমস