আজ কোটা সংস্কার আন্দোলন রূপ দিয়েছে সবচেয়ে বৃহত্তর পরিসরে। ছাত্র সমাজের সঙ্গে মাঠে নেমেছে অভিভাবক থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। শিল্পীসমাজও তৎপর হয়ে উঠেছে। বিকেলে রবীন্দ্র সরোবরে দেখা গেছে গানের জগতের অনেক প্রসিদ্ধ মুখকে। এরপর তারাসহ আরও অনেক অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা, সঙ্গীতশিল্পীরা সবার সঙ্গে এক কাতারে মিলে যান শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে। সেখানে দেখা গেলো ছোটপর্দার জনপ্রিয় তারকা দম্পতি মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া ও সৈয়দ জামান শাওনকে।
টয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমার ছোট্ট ভাই বোনের ওপর যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে এবং ধর-পাকড় হয়েছে সেটা ঠিক হয়নি। এতোগুলো মা-বাবার বুক খালি হয়েছে এটা আমরা মানতে পারছি না। প্রতিদিন আমার দেশে যে চিত্র দেখছি তাতে আমরা প্রতিটি মানুষ বিপর্যস্ত। এগুলো আসলে মানার মতো না। এজন্যই আমি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আজ এসেছি সবার সাথে।’
টয়া আরও বলেন, ‘ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। একটা সিস্টেমের বিরুদ্ধে কথা বললেই যে কেউ অন্য দলের হয়ে যাচ্ছে এটি ভাবার সুযোগ নেই। সিস্টেমের মধ্যে থেকেই সিস্টেমকে শুধরাতে হবে। আমাদের ছোট ভাই বোনেরা সেই সংশোধনের কথাটাই বলছে, আর আমিও তাদের সঙ্গে একমত। আমার প্রত্যাশা যারা নীতি নির্ধারক পর্যায়ে আছেন তারা এই পরিস্থিতির তাৎপর্য সঠিকভাবে বুঝে একটা সমাধানে আসুক। তারা বুঝুক যে নতুন জেনারেশনের বলার ভাষা ভিন্ন, তারা যা বলছে ভুল কিছু বলছে না।’
অভিনেতা শাওন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এতোগুলো ছেলে মেয়ে আসলে ভুল হতে পারে না। অথচ এতো বড় ঘটনা ঘটে গেলো দেশে, কিন্তু আমাদের দেশের এতোগুলো এমপি, মন্ত্রী, আমলা, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা- তাদের একজনও সাহস করে বলতে পারলো না আমাদের সন্তানেরা রাস্তায় নেমেছে, তাদের ওপর অন্যায় হচ্ছে, তাদের কথাটা আমরা শুনি। কিন্তু তা না করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হলো ছাত্রলীগ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পর্যন্ত চালালো গুলি। এটা কোন গণতান্ত্রিক দেশ হতে পারে না। এমন সোনার বাংলা আমরা কেউ চাইনি।’
টয়া কথা যুক্ত করে বলেন, ‘এখন যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে আন্দোলন শুধু সাধারন ছাত্র আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটার মধ্যে নেই। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা, আমার নানাও মুক্তিযোদ্ধা- তারপরও আমি এখানে এসেছি। আমি কখনোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলে এখানে আসিনি। আমি এসেছি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। আজকেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন গণভবন ছাত্রদের প্রতিনিধিদের জন্য উন্মুক্ত। এই কথাটাই তিনি আর ক’টা দিন আগে বললে এতো রক্ত এ এদেশের মাটিতে ঝরতো না। অনেকগুলো তাজা প্রাণ বেঁচে থাকতো। এখন প্রতিটি প্রাণহানীর বিচার দিতে হবে, জবাবের আওতায় আসতে হবে।’