এর আগে, ২০১৬ ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর। সদ্য গত হওয়া মহামারি বছর ২০২০-ও তার হাতে হাত মেলালো। রেকর্ডে ২০১৬ সালের পাশে এখন একই কাতারে জায়গা দিতে হবে গেলো বছরকেও।
কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস বলছে, এই উপমহাদেশের জন্য আবার সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল ২০১৯ — যা পরের বছরে দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ইউরোপের সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
গত বছর লা নিনা’র শৈত্যপ্রবাহ সত্ত্বেও উষ্ণতম বছর হিসেবে ২০১৬ সালের সঙ্গে টাই হয়েছে। অবশ্য সেই শৈত্যপ্রবাহ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। এন নিনো’র শক্তিশালী উষ্ণ প্রভাবে রেকর্ডে স্থান করে নেয় ২০২০। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈষ্ণিক উষ্ণতার (গ্লোবাল ওয়ার্মিং) যে বিষয়টি বিজ্ঞানীরা বলতে বলতে গলা শুকিয়ে ফেলছেন, এর কুপ্রভাব টের পেতে শুরু করেছে বিশ্ব।
ক্লাইমেট সার্ভিস সেন্টার জার্মানি’র বিজ্ঞানী কার্স্টেন হউস্টেইন এক প্রতিবেদনে বলেন, ২০১৬ সালের সঙ্গে ২০২০ টাই করার মাধ্যমে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি সামনে আসে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু দূষণ নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত রয়েছে। এটি বিশেষভাবে লক্ষণীয়, ২০২০ সালটি সেভাবে এল নিনোর প্রভাবের মধ্যে ছিল না। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি প্রকার অতিরিক্ত উত্তাপের যোগান দিয়ে রেকর্ড বুকে জায়গা করে নেয়। প্রকৃতপক্ষে, কেবলমাত্র একটি ঠান্ডা ডিসেম্বর (নভেম্বরের তুলনায়) ২০২০ সালকে একক উষ্ণতম বছরে পরিণত হতে বাধা দিয়েছে।
এদিকে বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। ২০২০ সালের মে মাসে পার্টস পার মিলিয়ন (পিপিএম) দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ৪১৩। গত বছর স্ট্যান্ডার্ড ১৯৮১-২০১০ রেফারেন্স পিরিয়ডের তুলনায় দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ ছিল। যা ১৮৫০-১৯০০ সালের প্রাক-শিল্পকালের তুলনায় প্রায় ১.২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এর মানে, গত ছয় বছর ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণকাল, বলছে কোপার্নিকাস সার্ভিস।
রেফারেন্স পিরিয়ডের (১৯৮১-২০১০) হিসাবে গতবছর সুমেরু ও উত্তর সাইবেরিয়া গড় তাপমাত্রার চেয়েও ছয় ডিগ্রি বেশি উষ্ণ ছিল।
হউস্টেইনের সতর্কবার্তা, এই হারে বৈষ্ণিক উষ্ণতা বাড়তে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়াবে ১.৫ ডিগ্রি আর চলতি শতাব্দী শেষে তিন ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাবে।