মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে খুনের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ৩৫ বছরের সাজা ঘোষণা করে আদালত। সাজা ভোগের ১০ বছর পর জানা যায়, তিনি নির্দোষ। তিনি খুন করেননি। বিনা অপরাধে তিনি ১০ বছর ধরে সাজা খেটেছেন।
একটি আইনি সংস্থার লড়াইয়ের ফলে তিনি মুক্তি পেয়েছেন এবং রাষ্ট্র তাকে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর)।
একটি আইনি সংস্থার লড়াইয়ে জানা যায়, পুলিশ ওই ব্যক্তিকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে ভয় দেখিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করে। এরপর আদালত তাকে ৩৫ বছরের সাজা ঘোষণা করে।
অবশেষে জানা যায়, ভুল রায়ে ওই ব্যক্তি ইতোমধ্যে ১০ বছর সাজা ভোগ করে ফেলেছেন। এর পর তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে ১০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয় রাষ্ট্র।
২০০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের একটি আদালত মার্সেল ব্রাউন নামে এক ব্যক্তিকে ১৯ বছরের এক তরুণকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ৩৫ বছরের সাজা ঘোষণা করে। ১০ বছর সাজা ভোগ করার পর ২০১৮ সালে মার্সেলের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হলে তিনি মুক্তি পান।
লোয়িভি অ্যান্ড লোয়িভি নামে একটি আইনি সংস্থা মার্সেল ব্রাউনের পক্ষে লড়াই করে অবশেষে জয়ের সাফল্য পায়। পরে ক্ষতিপূরণ দিতে রিট করে। অবশেষে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) মার্সেল ব্রাউনকে ১০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়ে পুরস্কৃত করেছে রাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) লোয়িভি অ্যান্ড লোয়িভি আইনি সংস্থার পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বিস্তারিত জানানো হয়।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরা এ খবর জানায়।
খবরে জানানো হয়, ২ সপ্তাহ শুনানি শেষে শিকাগো শহরের জেলা আদালত মার্সেল ব্রাউনের হাতে ২ মিলিয়ন ডলার তুলে দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লোয়িভি অ্যান্ড লোয়িভির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০০৮ সালে ১৯ বছর বয়েসি এক তরুণ গুলিতে খুন হন। এর পর গুলি করে হত্যার অভিযোগে পুলিশ মার্সেল ব্রাউনকে ধরে এনে জোর করে একটি ঘরে ৩০ ঘণ্টা ধরে আটকে রাখে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এ সময় তাকে না খাইয়ে রাখা হয়। ফোনে কথা বলতে দেওয়া হয়নি এবং তাকে ৩০ ঘণ্টা ধরে ঘুমাতেও দেওয়া হয়নি।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ ব্রাউনকে হুমকি দেয় যে, সে যদি খুনের দায় স্বীকার না করে, তাহলে তাকে অনেক বছরের জন্য জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তাকে সে সময় তার মা এবং কোনো আইনজীবীর সঙ্গেও দেখা করতে দেয়নি পুলিশ।
অবশেষে লোয়িভি অ্যান্ড লোয়িভি নামে আইনি সংস্থা মার্সেল ব্রাউনের সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং আইন লড়াই শেষে মিথ্যা অভিযোগ থেকে মার্সেলকে মুক্ত করে।
আইনি সংস্থার মাধ্যমে এক বিবৃতিতে মার্সেল ব্রাউন বলেন, সে সময় (২০০৮ সালে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতনের সময়) আমার মনে হচ্ছিল, আমি একজন শিশু! আমাকে অনেক সিংহের মাঝে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে! আমার প্রতি তখন একটুও দয়া দেখানো হয়নি!