২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের অবস্থান, সমস্যা, সমাধান ও বিবিধ বিষয় নিয়ে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ডিপার্টমেন্টের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান-এর ৩ পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ প্রকাশিত হলো শেষ পর্ব। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের পক্ষে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট মারিয়া রিমা।
● প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন
● দ্বিতীয় পর্ব পরতে ক্লিক করুন
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: হিজড়াদের উৎপাত সব। সমুদ্র সৈকতে হিজড়া এসে বলে যদি, “এই দে পয়সা দে” কী করবেন? ভিক্ষুক আমি আগে কোনোদিন সমুদ্র সৈকতে দেখিনি। আর দেখলাম কুকুর। একদল কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে আর ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করছে। মানুষ টাকা খরচ করে এইসব ডিস্টার্বেন্সে যাবে নাকি? আপনি একটা কর্নার করে দেন যারা সাইলেন্সটাকে উপভোগ করতে চায়। কক্সবাজার তো শেষ হয়ে গেছে। কী বলব! এখন আমাদেরকে ইনানীর দিকে আগাতে হবে।
এর মধ্যে আমি ইনানীতে একটা কাজ করেছি। এনভায়রনমেন্ট নিয়ে। এখানে আমি যেটা দেখিয়েছি যে, ইনানী বিচ যেটা বলি, এই ইনানী বিচ ছাড়াও কিন্তু আরো তিনটা বিচ আছে যেখানে মানুষরা যায় না। আমি ইনানী বিচের একদম ম্যাপিং করে দেখিয়েছি, এই জায়গাটায় কচ্ছপ ডিম পাড়ে এবং এখানে তাদের বংশবৃদ্ধি হয়। এই এরিয়াকে টোটালি ক্লোজ করে দিতে হবে পার্টিকুলার পারপাস। টুরিস্টদের খালি ইনানী বিচ না। গাড়ি করে গেল, একটু পাড়ে হাঁটাহাঁটি করল এরকম না। আপনি ওখানে একটা ভালো রেস্টুরেন্ট করেন। লোকজন একটু আনন্দ ফুর্তি করবে সে ব্যবস্থা তো থাকতে হবে। বাইরের দেশে কত কিছু আছে দেখেন এন্টারটেইনের জন্য। ওদের বিচে যা আছে সব আমাদের এখানে এপ্রোপ্রিয়েট নাও হতে পারে। যেগুলা দেয়া যায় সেগুলার তো ব্যবস্থা করতে হবে। তো এখানে শুধু এক বিচ, ইনানী বিচে লোকদেরকে না এনে তিনটা বিচ আপনি একসঙ্গে করেন। তাহলে চাপও বেশি পড়ল না, ভ্যারাইটিজও হলো। এখন কক্সবাজারকে ডেভেলপ করার জন্য আর কিছু নাই। আমাদের এখন স্প্রেড করতে হবে।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: আমরা তো নষ্ট করে দিচ্ছি। তবে কিছু কিছু জায়গা এখন পর্যন্ত ঠিক আছে। যেমন কুয়াকাটায় এখনো বেশি ট্যুরিস্ট যায় না এজন্য কুয়াকাটা এখনো ঠিক আছে। এনভায়রনমেন্টালি ঠিক আছে কিন্তু ডেসটিনেশান হিসেবে ঠিক নাই।
আমাকে পটুয়াখালীর ডিসি একবার ফোন করেছিল। বলে যে, স্যার, কুয়াকাটা নিয়ে কী করা যায়? আমি বললাম, কুয়াকাটা নিয়ে খুব সহজ একটা বুদ্ধি আছে। বলল, স্যার, আপনি তাহলে একবার আসেন। তারপর তো উনি ট্রান্সফার হয়ে গেলেন আরেক জায়গায়। সেটা হচ্ছে কী আমি গোয়াতে দেখেছি। গোয়া বিচ কিন্তু ছোট্ট বিচ। কিন্তু আপনি ট্যুরিস্ট হয়ে যদি গোয়াতে যান দেখবেন বিচ কী সুন্দর ঝলমল করছে। লাইটিংয়ে বলেন, বালুর ওপরে খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এটা হচ্ছে ওটা হচ্ছে, গান হচ্ছে। আমি তাদের বললাম, এভাবে তোমাদের বিচ কি অপরিষ্কার হবে না? তারা বলে, না, নষ্ট হবে না। বললাম, কেন? বলে, আমাদের এই জায়গাটা নিলামে দেয়া হয়। এখানে এই জায়গাটা ধরেন তিনটা রেস্টুরেন্টকে নিলাম দিয়ে দিলাম। রেস্টুরেন্টকে এরিয়া বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং বলে দেয়া হয়, এই এরিয়ায় যদি কোনো রকম ময়লা আবর্জনা পাওয়া যায় তাহলে তোমাকে ফাইন করা হবে। ওদের কাজই হচ্ছে, যে যাই ফেলুক না কেন ওগুলো পরিষ্কার করা। একদিকে কী হচ্ছে রাতের বেলা বিচ ঝলমল করছে অন্যদিকে প্রচুর ট্যুরিস্ট আসছে। এবং ওখানে কোনো পার্মানেন্ট টয়লেট রাখা হয়নি। সব টেম্পোরারি টয়লেট। এরকমভাবে আমরা কুয়াকাটা করতে পারি আর কী।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: যেখানে যে পরিবেশ ওই পরিবেশ ধরে রাখতে হবে। যেমন ধরেন, টাঙ্গুয়ার হাওর। ওইখানে হলো, সাবমারজেন্স রোড। মানে হলো, পানি যখন হবে তখন আপনার রোড ইউজ করতে পারবেন না। আবার যখন পানি সরে যাবে তখন আবার এই রাস্তাটা বের হয়ে আসবে। এই সিস্টেম আছে তো। তারা যদি চায় এই সিস্টেম করে দেন। পানির সময় পানি থাকবে। আপনি ব্রিজ করে, বাঁধের মতো করে রাস্তা বানাবেন, পানির ফ্লো নষ্ট করবেন, আসল যে বৈশিষ্ট, যে এট্রাকশান এটা নষ্ট করবেন, এটা কী ধরনের স্টুপিডিটি! ওখানে এমনিতেও বড়সর ব্রিজ একটা করে রেখেছে দেখলাম। দেখতে কী অদ্ভুত! অবাক কাণ্ড!
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: এগুলো উদ্যোগ নিতে হবে কমিউনিটিকে। গভঃমেন্ট তো শুধু আইন করতে পারবে। আর ট্যুরিস্ট পুলিশদেরকে এই আইন শিখাতে হবে। ওদেরকে মারামারি শেখানোর দরকার নাই। এই আইনগুলো শেখাতে হবে। আরেকটা গ্রুপ হলো, আমাদের ট্যুর অপারেটররা। ট্যুর অপারেটরদের অবশ্যই একজন গাইড দিয়ে দেবে। এই গাইডকে শিখিয়ে দিতে হবে “হোয়াট টু ডু, হোয়াট নট টু ডু”।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: আমাদের এত কম সংখ্যক ট্যুরিস্ট বাইরে থেকে আসে যে, ইনফ্রাস্ট্রাকচারের দিকে এত মনোযোগের দরকার নাই। আমাদের দরকার ডোমেস্টিক ট্যুরিজমের দিকে নজর দেয়া। ইনফ্রাস্ট্রাকচার বলতে যদি বলেন, রাস্তা ঘাট, ব্রিজ তাহলে দরকার আছে। আমাদের কিছু ডেসটিনেশান আছে সেখানে আমরা ইনফ্রাস্ট্রাকচারের অভাবে যেতেই পারি না। সিলেটের দিকে এমন কিছু ডেসটিনেশান আছে। আর যখন দেখবেন এক জায়গায় ফরেন ট্যুরিস্ট যাচ্ছে, তখন আপনি ইন্টারন্যাশনাল মানের ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করলেন।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: ট্যুরিস্ট পুলিশ করা হোক এটা নিয়ে আমরা খুব সোচ্চার ছিলাম। ট্যুরিস্ট পুলিশদের ট্রেনিংও করানো হয়। আমিও মাঝে মধ্যে ট্রেইনার হিসেবে যাই। কিন্তু আমি যে বিষয়টা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করি সেটা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত সাধারণ পুলিশ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের কাজ কী সেটা ভাগ করে দেয়া হয় নাই। পুলিশ মানে একটা আলাদা মনোভাব চলে আসে, “মারদাঙ্গা”। আমার পর্যটনের পুলিশ হতে হবে মারদাঙ্গা না। আমার পর্যটনের পুলিশ হতে হবে ট্যুরিস্ট ফ্রেন্ডলি। আমি এদেরকে বারবার বলেছি, দেখেন, আপনারা পর্যটন পুলিশদের যে ইউনিফর্ম দিয়েছেন, ইমিডিয়েটলি চেঞ্জ ইট। এটা দেখলেই মানুষজন ভয় পাবে আর পুলিশেরও রক্ত গরম থাকবে। তো সাদা পোশাকে পুলিশ হতে হবে। যেন কেউ না বুঝতে পারে। কোনো সমস্যা হলে সে এগিয়ে আসবে।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: শোনেন, ক্যাসিনো বলে এত চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে, এগুলো কি ক্যাসিনো? এগুলো হলো জুয়া যেটা সবসময় কিছু মানুষ খেলছে। এগুলো বন্ধ করে দিলেও কিছু লোক খেলবে। হয়তো অন্য কোথাও গিয়ে জমাট হবে, খেলবে। ক্যাসিনো অনেক বড় আয়োজনের ব্যাপার। ঢাকা শহরে ৬০টা ক্যাসিনো আছে এটা বিশ্বাসযোগ্য?
আমাকে একজন জিজ্ঞেস করেছে, ক্যাসিনো বন্ধের কারণে পর্যটনের ওপর প্রভাব পড়বে না? আমি বললাম, ঢাকায় ক্যাসিনো আছে সেটা আমি জানলাম না। তাহলে এটা পর্যটনের ওপর কিভাবে প্রভাব ফেলবে?
তবে বাংলাদেশে ক্যাসিনো অবৈধ এবং ইন্ডিয়াতেও অবৈধ। নেপালে ছোট আকারে কিছু আছে। ফিলিপিনসে্ প্রচুর ক্যাসিনো আছে। ইন্ডিয়ার গোয়াতে আছে ক্যাসিনো, জাহাজে। ওখানে ওরা বলছে, আইন যেটা আছে সেটা ল্যান্ডে আছে, সুতরাং আমরা পানির ওপর জাহাজে ক্যাসিনো করলাম। আমরা কক্সবাজারে পর্যটকদের জন্য ক্যাসিনো বড় পরিসরে করতে পারি আর কী।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: আমি বিভিন্ন জায়গায় বলি। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বলি। আমরা ট্যুরিজমের নামে হাফ এডুকেটেড লোক দিতে পারছি। আর যেগুলো প্রাইভেট ইন্সটিটিউটগুলো আছে তাদের লেখাপড়ার মান এতই সাব স্ট্যান্ডার্ড যে এদেরকে দিয়ে কোনো কাজই হবে না। তিনমাসে ট্রেনিং! তিনমাসের ট্রেনিং আপনার কী হয়? বরং পর্যটন কর্পোরেশনের HTTI ভালো। এখন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি কয়েকটা কলেজে চালু করলেন। উনি আমাকে ডেকেছিলেন, যে রাশেদ ভাই, আপনি আমার বিবিএটার ব্যাপার একটু দেখেন। এখানে আমি একটা সিলেবাস করে দিয়েছি। যে সিলেবাসে পাস করলে পরে, এরা আসলেই ট্যুরিজমের এসেট হয়ে বের হবে। যেমন ধরেন আপনার হাউজ কিপিং। ৩ ইউনিট। ২ ইউনিট হবে ক্লাসে। আর এক ইউনিট পুরো প্র্যাকটিক্যাল হবে।
এবং এর ফলও দেখছি। ধানমন্ডিতে যে বেঙ্গল গ্রুপ আছে না একটা, ওখানে দেখি ইউনিফর্ম পরা ওয়েটার, সাপ্লাই করে ওখানের কজন ছেলে এসে আমাকে সালাম দিচ্ছে। ডেফোডিল ইন্সটিটিউটে আমি কোর্স নিতাম। ওরা বলছে, স্যার, আমরা এখানে পার্টটাইম করছি। এতে আমাদের ইনকামও হয় এবং এই একটা ভালো জব এক্সপেরিয়েন্স হয় যেটা পরে ডিরেক্ট জবে কাজে দেয়। ঢাকা ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের জন্য এরকম ব্যবস্থা করতে পারলে তাদের জবের জন্য ভাবতে হতো না। আমাদের আগামীতে ৫/৭ বছরের মধ্যে ১৯টা ফাইভ স্টার হোটেলের অনুমোদন হয়েছে। ১৯টায় যদি ৫০০ করে লোক লাগে আপনার প্রায় ১০ হাজার। আর আমার কতজন ছেলেমেয়ে বের হচ্ছে! এরা কেন ইন্ডিয়া থেকে, নেপাল থেকে লোক নিয়ে আসবে? আমরা স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখলে তারা কেন বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসবে।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: সেটা ২০০৬/৭ সালে। আজাদ চৌধুরী সাহেব ছিলেন তখন ভিসি। যেহেতু আমি ট্যুরিজমে পিএইচডি করে আসি। ঢাকা ইউনিভার্সিটির সিনেটে আমি প্রথম বলেছিলাম, স্যার, ট্যুরিজমের যে ভবিষ্যত এটা এত পটেনশিয়াল, বাংলাদেশে এটাতে পড়াশোনার ব্যবস্থা করানো উচিত এবং সে হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগণ্য থেকে একটা ট্যুরিজম ইন্সটিটিউট করতে পারে। এবং এতে সবাই সাপোর্ট দিয়েছিল। আনফরচ্যুনেটলি ফয়েজ সাহেবরা এসে তড়িঘড়ি করে বিজনেস ফ্যাকাল্টির আন্ডারে এটা তৈরি করল একটা ডিপার্টমেন্ট। তখন আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দায়িত্বে। ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্ট যতদিন থাকবে এটা একটা বোঝা হয়ে থাকবে।
আমি চেয়েছিলাম আলাদা ইন্সটিটিউট, ডিপার্টমেন্ট না। যেখানে আমরা নিজেদের মতো করে স্টুডেন্টদের পড়াশোনা করাব, ট্রেনিং করাব, জব রিপ্লেস করাব। ফ্যাকাল্টিতে হওয়ার কারণে নয়টা ডিপার্টমেন্ট আছে। নয়টা ডিপার্টমেন্টে কিছু কিছু আইন কম্পলসারি। আমাদের ৩ ইউনিটের মধ্যে ১ ইউনিট যেটা বাইরে তিনমাসের যদি প্র্যাকটিক্যাল করাই ফ্যাকাল্টি সেটা অনুমতি দেবে না। অন্য ডিপার্টমেন্টে যেহেতু এটা নাই।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: আমি যেখানেই গেছি বাংলাদেশ ট্যুরিজম নিয়েই গেছি। সেখানে দেখি লোকজন বেশ আগ্রহ দেখায়, আগ্রহ দেখায় মানে অ্যাম্বারেসও করা হয়েছে আর কি। অস্ট্রেলিয়ায় গেলাম, ওখানে যখন বললাম, “উই হ্যাভ দি লঙ্গেস্ট আনব্রোকেন সি বিচ অ্যান্ড ইট ইজ হান্ড্রেড টুয়ান্টি কিলোমিটারস্।” তখন ওই ইউনিভার্সিটির একজন প্রফেসার, সে দাঁড়িয়ে বলল, “হাউ লং ডিড ইউ টেল?” আমি বললাম, “ইট ইজ হান্ড্রেড টুয়ান্টি কিলোমিটারস্ লং আনব্রোকেন।” তখন সে বলছে, “আর ইউ কিডিং?” আমি তাকে কিছুতেই বিশ্বাস করাতে পারলাম না।
পরে আমি ভাবলাম তারা এরকম কেন বলছে। দেখালাম যে, অস্ট্রেলিয়াতে লঙ্গেস্ট বিচ ৭/৮ কিঃমিঃর বেশি নাই। ওদের দৃষ্টিটা ওই ৭/৮ কিঃমিঃ পর্যন্তই। ১২০ কিঃমিঃ হতে পারে এটা তার ধারণার মধ্যে নাই। এবং আমাদের প্রচারণার অভাবে বলেন, আমাদের কমিউনিকেশানের অভাবে আমরা মানুষদের জানাতে পারছি না। আমি যেখানে গিয়েছি বলেছি। আমি সাউথ কোরিয়াতে টাঙ্গুয়ার হাওর সম্পর্কে বলেছি। টাঙ্গুয়ার হাওর হলো হানড্রেড স্কয়ার মাইল। এটা শুনে তো ওরা অবাক হয়ে যায়। ১০০ বর্গমাইল শুধু একটা ব্যাকওয়াটার এরিয়া! এগুলো অন্তত আমরা যেখানে গিয়েছি আমরা সেখানে সফলভাবে বলে এসেছি।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব অপটিমিস্টিক লোক। আমাদের দেশে অনেক কিছু হচ্ছে। তার পরেও তো আমরা কিছুটা এগিয়েছি। দিন যত যাবে উন্নয়ন কিন্তু তত হবেই। আমরা পিছিয়ে যাব না। আমরা আগাবই। আমার রিসেন্ট যে এরিয়া হচ্ছে, সেটা হচ্ছে আমরা ভবিষ্যতে কতটুকু আগাব এটা আমাদের এখন চিন্তা করার সময় আসছে।
আমি কি বাংলাদেশে ১ মিলিয়ন ট্যুরিস্ট আনাব? নাকি আমি কোয়ালিটি ট্যুরিস্ট আনাব ৫ হাজার। এখন ইন্ডিয়া থেকে ট্যুরিস্ট আসলে ৫০ টাকাও খরচ করবে না। নিজের আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াবে, বাসে করে ঘুরে বেড়াবে। এদেরকে নিয়ে আসব? নাকি অন্য দেশের কিছু ট্যুরিস্ট যারা আমাদের এখানে ৫ হাজার ডলার খরচ করে যাবে তাদের আনার চেষ্টা করব? এটা এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ। আমি সংখ্যায় বেশি ট্যুরিস্ট আসুক চাই না। আমি চাই কোয়ালিটি ট্যুরিস্ট আসুক, কম ট্যুরিস্ট আসুক। কারণ ট্যুরিজম যেভাবে আপনার এনভায়রনমেন্টকে ধ্বংস করে দিচ্ছে মোটামুটি সব দেশ এখন এই নিয়ে চিন্তা করছে।
ড. সৈয়দ রাশিদুল হাসান: আপনাকেও। আপনার প্রশ্নগুলো ইন্টারেস্টিং ছিল।